দেলোয়ার হোসাইন আকাইদ, কুমিল্লা
‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাবো/তবু আমারে দেবোনা ভুলিতে...।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই চয়নটুকু চিরভাস্বর হয়ে আছে কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে। আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী। ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান: কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার’। এই প্রতিপাদ্য নিয়ে কবির স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লায় এবার জাতীয় পর্যায়ে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ১২৬তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান। সম্পন্ন হয়েছে সব প্রস্তুতি। এ নিয়ে উৎসবের আমেজ কুমিল্লায়।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্যকর্মের বিরাট অংশজুড়ে রয়েছে কুমিল্লা। কুমিল্লায় বিচরণের মধ্য দিয়ে নজরুল হয়ে উঠেছিলেন বিদ্রোহী কবি। কবির প্রেম, বিয়ে, সুরকার-গায়ক, অভিনয়শিল্পী হয়ে ওঠার অনেক কিছুর প্রথম এই কুমিল্লা। দ্রোহ ও প্রেমের কবি নজরুল ১৯২১ সালের এপ্রিল থেকে ১৯২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দফায় ১১ মাস কুমিল্লায় অবস্থান করেছিলেন। এই দীর্ঘ অবস্থান ঘিরে নজরুলের জীবনের মোড় ঘোরার প্রেক্ষাপট এই কুমিল্লাতেই সৃষ্টি হয়েছিল। কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়ের ইন্দ্রকুমার সেনের বাড়ি, ধর্মসাগর পাড়, রাণীর দীঘির পাড়, মহেশাঙ্গন, দারোগাবাড়ি, টাউন হল ময়দান, উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ শচীনদেব বর্মনের চর্থার রাজবাড়ি, নবাববাড়িসহ কুমিল্লার আনাচে-কানাচে এবং কুমিল্লার মুরাদনগরের দৌলতপুরে তাঁর সদর্প পদচারণার অসংখ্য স্মৃতি কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে জেগে আছে। ১৯২১ সালের ২১ নভেম্বর ব্রিটিশ নেতা প্রিন্স অব ওয়েলসের কলকাতায় আগমন উপলক্ষে ভারতীয় কংগ্রেস হরতাল ডাকে। ওই হরতালে কবি নজরুল গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে প্রতিবাদী গানে মিছিল করেন। এই অপরাধে রাজগঞ্জ থেকে তাঁকে আটক করা হয়। এ ঘটনাই কবির বিদ্রোহী কবিতার প্রেক্ষাপটের অনেক অনুষঙ্গের একটি বলে মনে করেন গবেষকেরা।
এ ছাড়া কবির জীবনে কুমিল্লার মুরাদনগরের খাঁ-বাড়ির নার্গিস আসার খানম আর এই শহরের পশ্চিম কান্দিরপাড়ের আশালতা সেন গুপ্তা ওরফে প্রমীলা নামের দুই নারী এসেছিলেন জীবনসঙ্গিনী হয়ে। নার্গিস ও প্রমীলা কবির জীবনে দারুণভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল। এ সময় তিনি কুমিল্লায় বসে অজস্র কবিতা ও গান রচনা করেছেন।
আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে কবির জন্ম হলেও নজরুলের প্রেম, বিয়ে, গ্রেপ্তার, সমাবেশ এবং কাব্য ও সংস্কৃতিচর্চাসহ বহু ঘটনার নীরব সাক্ষী কুমিল্লা। তিনি অমর হয়ে আছেন কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে।
কুমিল্লায় কবি নজরুলের অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে। এসব স্মৃতি জাগরুক করে রাখার জন্য কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি শাখায় ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কবি নজরুল ছাত্রাবাস। ১৯৬২ সালে কান্দিরপাড় থেকে ফরিদা বিদ্যায়তন পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ করা হয় নজরুল অ্যাভিনিউ। ১৯৭০ সালে কুমিল্লায় নজরুল সাহিত্যচর্চার লক্ষ্যে গঠিত হয় নজরুল ললিতকলা পরিষদ, যা পরবর্তীতে নজরুল পরিষদ নামে রূপান্তরিত হয়। ১৯৮৩ সালে কুমিল্লা শহরের যেসব স্থানে নজরুল বিচরণ ও অবস্থান করেছিলেন, সেসব স্থানে টিনের স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়। ১৯৯২ সালে ওই সব স্থানে কবি নজরুলের অবস্থান ও ঘটে যাওয়া ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে পাকা স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়। কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির সামনে নির্মিত হয় ‘চেতনায় নজরুল’ স্মৃতিস্তম্ভ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে গবেষণা ও চর্চার করতে প্রতিষ্ঠিত হয় কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র, কুমিল্লা। এ ছাড়া মুরাদনগরের দৌলতপুরে খাঁ-বাড়ির কিছু স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করা হয়।
কুমিল্লা নগরী ও মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুরে জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত অনেক নিদর্শন রয়েছে। তবে সংরক্ষণের অভাবে সেগুলো বিলীন হতে শুরু করেছে। এগুলো সংরক্ষণের দাবি স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীদের।
সাংস্কৃতিক কর্মী আল মামুন বলেন, ‘শুধু জন্মবার্ষিকী বা মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা ব্যাপক আয়োজন করি, কবির স্মৃতিচিহ্নগুলো ধুয়ে-মুছে সাজাই। পরে সারা বছরই এগুলো বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকে। আমরা কবির সব স্মৃতিচিহ্ন স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের পাশাপাশি নিয়মিত পরিচর্যার দাবি জানাই।’
ঐতিহ্য কুমিল্লার পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল জানান, ‘কুমিল্লার দৌলতপুরে কবি যে আমগাছের নিচে বসে গান-কবিতা রচনা করতেন, সেটি পরিচর্যার অভাবে মারা যায়; যে পুকুরঘাটে বসতেন, সেটি ভেঙে গেছে। যে খাটে বাসররাত করেছেন, সেই খাট অরক্ষিত, সেই খাট এখন মানুষ ব্যবহার করছে। এমন অনেক স্মৃতিচিহ্ন অরক্ষিত। এগুলো সংরক্ষণ না করা গেলে একসময় হারিয়ে যাবে। ফলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে অনেক কিছু অজানা থেকে যাবে। দৌলতপুরে একটি অতিথিশালা, পাঠাগারসহ খাঁ-বাড়ির আঙিনাকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র কুমিল্লার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, ‘কবির স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করতে আমাদের মন্ত্রণালয়সহ আমরা চেষ্টা করছি। কবি নজরুলকে নিয়ে চর্চা ও গবেষণার জন্য কুমিল্লায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র। এখানে রয়েছে নজরুল জাদুঘর, পাঠাগার।’
জানা যায়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় এবং কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ২৫, ২৬ ও ২৭ মে কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে তিন দিনব্যাপী জাতীয় অনুষ্ঠান।
২৫ মে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বেলা ৩টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করবেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো. লতিফুল ইসলাম শিবলী এবং কবিপৌত্রী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান খিলখিল কাজী। স্মারক বক্তৃতা করবেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এবং স্বাগত বক্তৃতা করবেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার।
২৬ মে দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠান হবে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুরে এবং ২৭ মে সমাপনী অনুষ্ঠান কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।
আবৃত্তিশিল্পী ও নজরুল গবেষক কাজী মাহতাব সুমন বলেন, আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে কবির জন্ম হলেও নজরুলের প্রেম, বিয়ে, গ্রেপ্তার, সমাবেশ এবং কাব্য, সংস্কৃতিচর্চাসহ বহু ঘটনার নীরব সাক্ষী কুমিল্লা। তিনি অমর হয়ে আছেন কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে। বাংলাদেশের মধ্যে কুমিল্লায় নজরুলের সৃষ্টিকর্ম বেশি। কুমিল্লা ও দৌলতপুরে কবি অজস্র গান ও কবিতা রচনা করেছেন। তাই নজরুলচর্চা ও গবেষণায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এবার নজরুল জন্মবার্ষিকীর জাতীয় অনুষ্ঠান কুমিল্লায় হওয়ায় খুশি জেলাবাসী।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার বলেন, ‘জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে ২৫ থেকে কুমিল্লায় শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। এ নিয়ে সব প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি।’
‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাবো/তবু আমারে দেবোনা ভুলিতে...।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই চয়নটুকু চিরভাস্বর হয়ে আছে কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে। আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী। ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান: কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার’। এই প্রতিপাদ্য নিয়ে কবির স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লায় এবার জাতীয় পর্যায়ে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ১২৬তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান। সম্পন্ন হয়েছে সব প্রস্তুতি। এ নিয়ে উৎসবের আমেজ কুমিল্লায়।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্যকর্মের বিরাট অংশজুড়ে রয়েছে কুমিল্লা। কুমিল্লায় বিচরণের মধ্য দিয়ে নজরুল হয়ে উঠেছিলেন বিদ্রোহী কবি। কবির প্রেম, বিয়ে, সুরকার-গায়ক, অভিনয়শিল্পী হয়ে ওঠার অনেক কিছুর প্রথম এই কুমিল্লা। দ্রোহ ও প্রেমের কবি নজরুল ১৯২১ সালের এপ্রিল থেকে ১৯২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দফায় ১১ মাস কুমিল্লায় অবস্থান করেছিলেন। এই দীর্ঘ অবস্থান ঘিরে নজরুলের জীবনের মোড় ঘোরার প্রেক্ষাপট এই কুমিল্লাতেই সৃষ্টি হয়েছিল। কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়ের ইন্দ্রকুমার সেনের বাড়ি, ধর্মসাগর পাড়, রাণীর দীঘির পাড়, মহেশাঙ্গন, দারোগাবাড়ি, টাউন হল ময়দান, উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ শচীনদেব বর্মনের চর্থার রাজবাড়ি, নবাববাড়িসহ কুমিল্লার আনাচে-কানাচে এবং কুমিল্লার মুরাদনগরের দৌলতপুরে তাঁর সদর্প পদচারণার অসংখ্য স্মৃতি কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে জেগে আছে। ১৯২১ সালের ২১ নভেম্বর ব্রিটিশ নেতা প্রিন্স অব ওয়েলসের কলকাতায় আগমন উপলক্ষে ভারতীয় কংগ্রেস হরতাল ডাকে। ওই হরতালে কবি নজরুল গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে প্রতিবাদী গানে মিছিল করেন। এই অপরাধে রাজগঞ্জ থেকে তাঁকে আটক করা হয়। এ ঘটনাই কবির বিদ্রোহী কবিতার প্রেক্ষাপটের অনেক অনুষঙ্গের একটি বলে মনে করেন গবেষকেরা।
এ ছাড়া কবির জীবনে কুমিল্লার মুরাদনগরের খাঁ-বাড়ির নার্গিস আসার খানম আর এই শহরের পশ্চিম কান্দিরপাড়ের আশালতা সেন গুপ্তা ওরফে প্রমীলা নামের দুই নারী এসেছিলেন জীবনসঙ্গিনী হয়ে। নার্গিস ও প্রমীলা কবির জীবনে দারুণভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল। এ সময় তিনি কুমিল্লায় বসে অজস্র কবিতা ও গান রচনা করেছেন।
আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে কবির জন্ম হলেও নজরুলের প্রেম, বিয়ে, গ্রেপ্তার, সমাবেশ এবং কাব্য ও সংস্কৃতিচর্চাসহ বহু ঘটনার নীরব সাক্ষী কুমিল্লা। তিনি অমর হয়ে আছেন কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে।
কুমিল্লায় কবি নজরুলের অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে। এসব স্মৃতি জাগরুক করে রাখার জন্য কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি শাখায় ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কবি নজরুল ছাত্রাবাস। ১৯৬২ সালে কান্দিরপাড় থেকে ফরিদা বিদ্যায়তন পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ করা হয় নজরুল অ্যাভিনিউ। ১৯৭০ সালে কুমিল্লায় নজরুল সাহিত্যচর্চার লক্ষ্যে গঠিত হয় নজরুল ললিতকলা পরিষদ, যা পরবর্তীতে নজরুল পরিষদ নামে রূপান্তরিত হয়। ১৯৮৩ সালে কুমিল্লা শহরের যেসব স্থানে নজরুল বিচরণ ও অবস্থান করেছিলেন, সেসব স্থানে টিনের স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়। ১৯৯২ সালে ওই সব স্থানে কবি নজরুলের অবস্থান ও ঘটে যাওয়া ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে পাকা স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়। কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির সামনে নির্মিত হয় ‘চেতনায় নজরুল’ স্মৃতিস্তম্ভ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে গবেষণা ও চর্চার করতে প্রতিষ্ঠিত হয় কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র, কুমিল্লা। এ ছাড়া মুরাদনগরের দৌলতপুরে খাঁ-বাড়ির কিছু স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করা হয়।
কুমিল্লা নগরী ও মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুরে জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত অনেক নিদর্শন রয়েছে। তবে সংরক্ষণের অভাবে সেগুলো বিলীন হতে শুরু করেছে। এগুলো সংরক্ষণের দাবি স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীদের।
সাংস্কৃতিক কর্মী আল মামুন বলেন, ‘শুধু জন্মবার্ষিকী বা মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা ব্যাপক আয়োজন করি, কবির স্মৃতিচিহ্নগুলো ধুয়ে-মুছে সাজাই। পরে সারা বছরই এগুলো বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকে। আমরা কবির সব স্মৃতিচিহ্ন স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের পাশাপাশি নিয়মিত পরিচর্যার দাবি জানাই।’
ঐতিহ্য কুমিল্লার পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল জানান, ‘কুমিল্লার দৌলতপুরে কবি যে আমগাছের নিচে বসে গান-কবিতা রচনা করতেন, সেটি পরিচর্যার অভাবে মারা যায়; যে পুকুরঘাটে বসতেন, সেটি ভেঙে গেছে। যে খাটে বাসররাত করেছেন, সেই খাট অরক্ষিত, সেই খাট এখন মানুষ ব্যবহার করছে। এমন অনেক স্মৃতিচিহ্ন অরক্ষিত। এগুলো সংরক্ষণ না করা গেলে একসময় হারিয়ে যাবে। ফলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে অনেক কিছু অজানা থেকে যাবে। দৌলতপুরে একটি অতিথিশালা, পাঠাগারসহ খাঁ-বাড়ির আঙিনাকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র কুমিল্লার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, ‘কবির স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করতে আমাদের মন্ত্রণালয়সহ আমরা চেষ্টা করছি। কবি নজরুলকে নিয়ে চর্চা ও গবেষণার জন্য কুমিল্লায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র। এখানে রয়েছে নজরুল জাদুঘর, পাঠাগার।’
জানা যায়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় এবং কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ২৫, ২৬ ও ২৭ মে কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে তিন দিনব্যাপী জাতীয় অনুষ্ঠান।
২৫ মে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বেলা ৩টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করবেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো. লতিফুল ইসলাম শিবলী এবং কবিপৌত্রী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান খিলখিল কাজী। স্মারক বক্তৃতা করবেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এবং স্বাগত বক্তৃতা করবেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার।
২৬ মে দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠান হবে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুরে এবং ২৭ মে সমাপনী অনুষ্ঠান কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।
আবৃত্তিশিল্পী ও নজরুল গবেষক কাজী মাহতাব সুমন বলেন, আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে কবির জন্ম হলেও নজরুলের প্রেম, বিয়ে, গ্রেপ্তার, সমাবেশ এবং কাব্য, সংস্কৃতিচর্চাসহ বহু ঘটনার নীরব সাক্ষী কুমিল্লা। তিনি অমর হয়ে আছেন কুমিল্লাবাসীর হৃদয়ে। বাংলাদেশের মধ্যে কুমিল্লায় নজরুলের সৃষ্টিকর্ম বেশি। কুমিল্লা ও দৌলতপুরে কবি অজস্র গান ও কবিতা রচনা করেছেন। তাই নজরুলচর্চা ও গবেষণায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এবার নজরুল জন্মবার্ষিকীর জাতীয় অনুষ্ঠান কুমিল্লায় হওয়ায় খুশি জেলাবাসী।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার বলেন, ‘জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে ২৫ থেকে কুমিল্লায় শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। এ নিয়ে সব প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি।’
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে বন্য প্রাণীদের নিরাপদে বিচরণের জন্য ২০২৩ সালে ট্রেন ও সড়কপথে যানবাহনের গতিসীমা ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষ। তবে সেই নির্দেশনা শুধু কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ। কেউই তা মেনে চলছে না।
১২ মিনিট আগেগাইবান্ধার মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্প নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে ‘অঙ্কুরেই বিনষ্ট’ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রথম কিস্তিতে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ২টি প্রদর্শনী প্রকল্পে ৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা বরাদ্দ
১ ঘণ্টা আগেনগদ টাকার সঙ্গে ঘুষ হিসেবে ঘুমানোর জন্য খাট নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল হুদা তালুকদারের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ঘুষ আদায় করতে উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে তৈরি করেছেন সিন্ডিকেট।
২ ঘণ্টা আগেস্থানীয়রা জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারের অনুসারীরা ২০ জুন বিকেলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। তারই জের ধরে ২১ জুন রাতে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে আব্দুল কুদ্দুসকে (৬০) কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়।
৪ ঘণ্টা আগে