Ajker Patrika

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পরিকল্পনা লন্ডনে: তথ্যমন্ত্রী

রাজশাহী প্রতিনিধি
সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পরিকল্পনা লন্ডনে: তথ্যমন্ত্রী

শারদীয় দুর্গাপূজায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটানোর পরিকল্পনা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ইঙ্গিত করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ওই ঘটনার (কুমিল্লার) পরিকল্পনা হয়েছে ওই লন্ডনে বসে। লন্ডনে বসে পরিকল্পনা করে দীর্ঘ এক মাস ধরে। বিএনপি প্রায় এক মাস ধরে বৈঠক করেছে। প্রকাশ্যে বৈঠক করে, আর গোপনে ষড়যন্ত্র করেছে। সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হচ্ছে এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশে দুর্গাপূজার সময় পূজামণ্ডপে হামলা পরিচালনা করা, আমাদের পবিত্র কোরআন শরিফকে পূজামণ্ডপে রেখে আসা।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘যাঁরা এই কাজ করেছে, তাঁরা আসলে প্রকৃত মুসলমান নয়। যাঁরা প্ররোচনা দিয়েছে, তাঁরাও প্রকৃত মুসলমান নয়। আমাদের দলের নেতারা সারা দেশে সতর্ক ছিলেন। এখনো সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। ষড়যন্ত্রকারীরা বসে থাকবে না। নানা ষড়যন্ত্র করবে। সুতরাং, এবার আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’ 

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে খুঁজে বের করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীর সবকিছুতে ব্যর্থ হয়ে এবার দুর্গাপূজায় হনুমানের মূর্তির কাছে কোরআন শরিফ রেখে আসে। কারা রেখেছে? যে রেখেছে, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে তো রাখেনি আসলে। সে কারও ফরমায়েশে সেখানে রেখে এসেছে। কারা এর পেছনে আছে, সেটি খুব সহসা বের হবে। খুবই স্পষ্ট যে, কারা এগুলো ঘটিয়েছে। সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজনীতি কারা করে এই দেশে? সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজনীতি করে বিএনপি-জামায়াত, ধর্মান্ধ-উগ্রবাদীরা। বাংলাদেশের কোনো সম্প্রদায়ের লোক অপরের ধর্মগ্রন্থ অবমাননা করার মানসিকতা পোষণ করে না।’ 

মন্ত্রী বলেন, ‘যাঁরা এটি করেছে এবং তাঁকে যাঁরা প্ররোচনা দিয়েছে, তাঁরা আমাদের পবিত্র ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করেছে। একই সঙ্গে হিন্দু ধর্মকেও অবমাননা করেছে। এই দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছে। তাঁদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। এই যুবককে কারা প্ররোচনা করেছে, কারা অর্থ দিয়েছে, কারা পালিয়ে যাওয়ার জন্য চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার পাঠিয়েছে-সবকিছুই বের হবে। সরকার এই ঘটনার পর ১০২টি মামলা করেছে, সাত শ জনের মতো দুষ্কৃতকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। কঠোর হস্তে সরকার এটি দমন করেছে। সরকারের এই ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে।’ 

মন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের বক্তব্য শুনলে মনে হয়, ঠাকুর ঘরে কে রে? আমি কলা খাই না। শুরু থেকেই বলছে, ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাই না। কাজটা ওনারা করে তারপর টেলিভিশনের সামনে গিয়ে বড় বড় কথা বলছেন।’ 

সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রংপুরের এক ছাত্রলীগ নেতার জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘রংপুরের ঘটনায় যে ছাত্রলীগ কর্মীর কথা বলা হচ্ছে, রংপুর মহানগর ছাত্রলীগ এ নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। সেটি হচ্ছে-এই ছেলেটা রংপুর কারমাইকেল কলেজের দর্শন বিভাগের কমিটির সহসভাপতি হিসেবে একসময় তাঁর নাম রাখা হয়েছিল। পরে দেখা গেল, সে এই কলেজেরই ছাত্র নয়। তখন তাঁকে বের করে দেওয়া হয়। সেটি এই ঘটনার বহু আগে। নানা অপকর্মের কারণে তাঁকে ছাত্রলীগ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। সে একজন অনুপ্রবেশকারী ছিল। যাঁকে আগেই বের করে দেওয়া হয়েছে, তাঁর দায় তো ছাত্রলীগের ওপরে দেওয়া যায় না। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সব সময় একটা বিরূপ প্রচারণা চালানো হয়। দুরবিন দিয়ে খোঁজা হয় যে, এখানে কোনো কিছুর গন্ধ পাওয়া যায় কি না। এটাও দুরবিন দিয়ে খুঁজে একটা গন্ধ পাওয়ার চেষ্টার মতো ঘটনা। তাঁকে কোনোভাবেই ছাত্রলীগ বলার সুযোগ নেই।’ 

এর আগে মন্ত্রী বাংলাদেশ টেলিভিশনের রাজশাহী উপকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘রাজশাহী টেলিভিশন কেন্দ্র আমরা চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছি। এটি যত দ্রুত সম্ভব। এটি হয়তো এ বছর সময় অবশ্যই লাগবে। আগামী নির্বাচনের আগে রাজশাহীতে টেলিভিশন কেন্দ্র চালু করতে পারব বলে আমরা আশা করি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত