Ajker Patrika

মুক্তিযোদ্ধার নাতি সেজে ১২ বছর পুলিশে চাকরি, অবশেষে গ্রেপ্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৫, ২০: ০৩
শেখ সুমন । ছবি: সংগৃহীত
শেখ সুমন । ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযোদ্ধার নাতি বলে মিথ্যা পরিচয়ে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে শেখ সুমন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দীর্ঘ ১২ বছর পর তদন্তে তাঁর প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে। আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ভারত থেকে দেশে ফিরলে আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা-পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার আগে থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। শনিবার (১ মার্চ) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে ওই পুলিশ সদস্যকে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রতারণার অভিযোগ ওঠা ওই পুলিশ সদস্যের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট এলাকা থেকে মো. সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি শুক্রবার ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন। শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামের বাসিন্দা নান্নু মিয়ার ছেলে মো. সুমন। ২০১২ সালে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পরীক্ষায় অংশ নেন এবং মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় চাকরির জন্য প্রতিবেশী মো. হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করেন।

প্রকৃতপক্ষে, হোসেন মিয়া তাঁর দাদা নন। এই প্রতারণার বিষয়ে ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর স্থানীয় যুবক মো. ফরহাদ মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

লিখিত অভিযোগের পর তৎকালীন কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেনকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই পুলিশ কর্মকর্তা সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত মো. সুমন ২০১২ সালের ৩ জুলাই ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তিনি ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পরীক্ষার সময় তাঁর প্রতিবেশী হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধার সনদ ব্যবহার করে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন।

পরবর্তী বিধি মোতাবেক পুলিশ ভেরিফিকেশনের (ভিআর) পর ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষ করে ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ থেকে কনস্টেবল পদে চাকরি করে আসছিলেন।

প্রকৃতপক্ষে মো. সুমনের দাখিল করা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন মিয়া (অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য) তাঁর দাদা নন। সুমনের দাদার নাম আলতাফ আলী হোসেন। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন মিয়ার নাতি না হয়েও ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যের মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়ে যাবতীয় বেতন, রেশনসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানায় কর্মরত থাকা কনস্টেবল সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলাকালেই গত বছরের ১ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে তিনি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। ২১ ডিসেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত