Ajker Patrika

আখাউড়ায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে এক পরিবারে ৫ প্রতিবন্ধী

প্রতিনিধি, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
আখাউড়ায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে এক পরিবারে ৫ প্রতিবন্ধী

একজন নয়, দুজন নয়, একই পরিবারের পাঁচ সদস্যই প্রতিবন্ধী। পাঁচজন প্রতিবন্ধী সদস্যের মধ্যে চার সন্তান প্রতিবন্ধী। আর তাঁদের নিয়ে বিপাকে পড়ছেন প্রতিবন্ধী বাবা মো. মজিবুর রহমান। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের দেবগ্রামে এই প্রতিবন্ধী পরিবারের বসবাস।

প্রতিবন্ধী সন্তানেরা হলেন, মো. মাসুক খান (১৭), মো. মহিন খান (১৪), তুহিন খান (৯) ও একমাত্র কন্যা ফাতেমা খানম (৩)। এই পরিবারের ৫ জন সদস্যই খর্বাকৃতির হওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন তাঁরা। তবে খর্বাকৃতির তিন ছেলের মধ্যে মাসুদ দশম শ্রেণিতে, মাহিন সপ্তম শ্রেণি ও তুহিন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। অসহায় হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী মো. মজিবুর রহমানের স্ত্রী, চার ছেলে এক মেয়ে নিয়ে সাত সদস্যের পরিবার। এর মধ্যে স্ত্রী ও এক ছেলে ছাড়া পাঁচজনই প্রতিবন্ধী।

জানা গেছে, প্রতিবন্ধী মজিবুরের বসবাস করা দেড় শতক বাড়ির জায়গা ছাড়া আর কোনো কিছুই নেই। এই বাড়িতে একটি টং দোকান বসিয়েছেন। আর সারা দিন দোকানে চালিয়ে যা আয় করেন তা দিয়া ৭ সদস্যের সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে ওই দোকানে তেমন মালামাল না থাকায় বেচা কেনাও তেমন ভালো নেই। তা ছাড়া মজিবুর খর্বাকৃতির হওয়ায় কোথাও কোনো কাজকর্ম করতে পারছেন না। এই টং দোকানের ওপর ভরসা এবং সরকার থেকে প্রাপ্ত প্রতিবন্ধী ভাতায় এবং প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় কোনো রকমে তাঁর সংসার চলছে।

মজিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁর পরিবারের মধ্যে তিনি ও তাঁর দুই ছেলে প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। কিন্তু বাকিরা সরকারি কোনো ভাতা পাচ্ছে না। তা ছাড়া শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে কোনো কাজকর্ম করতে না পাড়ায় অভাব অনটনে দুর্বিষহ মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে। অভাবের কারণে তাঁর সন্তানদের পড়ালেখা যে কোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।

প্রতিবন্ধীদের মা শারমিন আক্তার আজকের পত্রিকাকে জানান, একটি স্বাভাবিক সন্তান মানুষ করতে খুব কষ্ট করতে হয়। কিন্তু পরপর স্বামীসহ এক ঘরে পাঁচজন প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে যে মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রণায় ভুগেছেন, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। তবে সরকারি ভাবে যদি একটি ছেলেকে চাকরি দেওয়া যেতো তাহলে তাঁদের আর কোনো কষ্ট হতো না।

দেবগ্রাম ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল মো. বাবুল সর্দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, `সরকারিভাবে সহায়তা হিসেবে যা কিছু আসে এই পরিবারকে তা দেওয়া হয়ে থাকে। আমরা এই অসহায় পরিবারটির পাশে আছি এবং থাকব। এদের জন্য যা করার দরকার, তা করা হবে।' 

আখাউড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আফসানা পারভীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীদের সমাজে বোঝা নয়, সম্পদ হিসেবে দেখার কারণে এ পরিবারটির মনে আশা জেগেছে। তবে এই পরিবারের তিনজনকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হচ্ছে। সরকার যেভাবে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে এগিয়ে এসেছে, তাঁর পরিপ্রেক্ষিতে পরিবারটির দীর্ঘদিনের অভাব অনটন ঘুচবে। 

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, `পরিবারটির বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে খোঁজ নিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়াব।' 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিলেটে পাথর লুটে জড়িত দুই দলের ৩৫ নেতা

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

আমরা দখল করি লঞ্চঘাট-বাসস্ট্যান্ড, জামায়াত করে বিশ্ববিদ্যালয়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত