Ajker Patrika

কক্সবাজারে লাখো পর্যটক, ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করছে হোটেল-রেস্তোরাঁ

কক্সবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২২, ১০: ৩৭
কক্সবাজারে লাখো পর্যটক, ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করছে হোটেল-রেস্তোরাঁ

দুর্গাপূজা, ঈদে মিলাদুন্নবী ও প্রবারণা পূর্ণিমার ছুটি মিলিয়ে অনেকেই ঘুরতে এসেছেন বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে। আজ শুক্রবারও লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। আর এই সুযোগে পর্যটকদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। হোটেল রুম, খাবার-দাবার, শপিং ও পরিবহনেও বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে পর্যটকদের।

অনেক পর্যটক জানিয়েছেন, অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করায় দুর্ব্যবহারের শিকারও হতে হচ্ছে।

আজ শুক্রবার দুপুরে শহরের সুগন্ধা পয়েন্টের ড্রাগন মার্কেটের একটি আচারের দোকানদারের বিরুদ্ধে পর্যটকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করা হয় জেলা প্রশাসনের তথ্যকেন্দ্রে। এ সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ সঙ্গে সঙ্গে অভিযান চালিয়ে দোকানদারদের সতর্ক করেন। এর আগের দিন একই পয়েন্টে তিন ঘোড়ার মালিককে বাড়তি টাকা নেওয়া এবং পর্যটকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই দিন এক ফটোগ্রাফারের সঙ্গে ছবি তোলা নিয়ে পর্যটকের ঝগড়া হয় বলে জানা গেছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে হোটেল-মোটেল জোন ঘুরে জানা যায়, আগামী রোববার পর্যন্ত বেশির ভাগ হোটেল ও রিসোর্টে কক্ষ খালি নেই। তারকা মানের হোটেল ছাড়া অন্যান্য হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজে ইচ্ছেমতো কক্ষ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে মূল্যতালিকা টাঙানো নেই। কোনো কোনো হোটেল, রেস্তোরাঁ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে দুই ধরনের মূল্যতালিকা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

কলাতলী এলাকার মাঝারি মানের হোটেল কক্স হিলটনের দুই পর্যটক অভিযোগ করেন, তাঁদের কাছ থেকে প্রতি কক্ষ ৪ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। অথচ এই হোটেলের কক্ষ সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০০ টাকা।

নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে তিন বন্ধুসহ বেড়াতে এসেছেন জিয়া উদ্দিন (২৫)। তাঁরা কলাতলীর সী কক্স হোটেলে উঠেছেন। তাদের কাছ থেকে ডাবল বেডেররুম ২ হাজার ৫০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। জিয়া উদ্দিন বলেন, হোটেল ভাড়ার পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়ায়ও বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলে হোটেল অভিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন এক পর্যটক। তিনি অভিযোগ করেন, হোটেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে এক দিনের জন্য কক্ষ ভাড়া দেননি। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত একটি কক্ষের ভাড়া চাওয়া হয়েছে ৮ হাজার টাকা।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে হোটেল কক্স হিলটনের পরিচালক আইয়ুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভ্যাল উপলক্ষে ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়েছিলাম। হয়তো কোনো পর্যটক ওই চিন্তা থেকে অভিযোগ করছেন।’

ট্যুর অপারেটর ট্রিপ জোনের মালিক জিকু পাল বলেন, এখনো ৩০ শতাংশ পর্যটক অনলাইনে বুকিং সেবা নিয়ে থাকেন। বাকি পর্যটক কক্সবাজারে পৌঁছে দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে প্রতারিত হচ্ছেন।

হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘তারকা মান ও মাঝারি হোটেলগুলোতে বেশির ভাগ কক্ষ ভাড়া হয়েছে। কেউ যাতে অতিরিক্ত ভাড়া না নেয়, তার নির্দেশনা দেওয়া আছে। আমরা প্রতিনিয়ত মনিটর করছি। দালাল চক্রের সঙ্গে কিছু হোটেল ব্যবস্থাপকের যোগসাজশ রয়েছে। এর ফলে পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের কমিশন দেওয়া হয়।’

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের (পর্যটন সেল) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘কয়েকটি হোটেলে অতিরিক্ত কক্ষ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে অভিযোগ পেয়ে কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়েছে।’

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুজ্জামান বলেন, পর্যটকদের হয়রানির অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সার্বিক নিরাপত্তা ও সেবায় অতিরিক্ত টহলও বাড়ানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার শহর ও মেরিন ড্রাইভ সড়কে প্রায় ৫০০ হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজে ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটক রাত যাপন করতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আবেদন, শুনানি রোববার

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত