Ajker Patrika

মেঘনা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের গরম পানিতে ঝলসে গেছেন চালক, যাত্রীদের দুর্ভোগ

চাঁদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৩, ২৩: ০০
মেঘনা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের গরম পানিতে ঝলসে গেছেন চালক, যাত্রীদের দুর্ভোগ

চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশনে আন্তনগর মেঘনা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের গরম পানি ছিটকে গায়ে পড়ে চালক সাঈদ মোহাম্মদ তাহেরের শরীর ঝলসে গেছে। তাঁকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় সহস্রাধিক যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন।

আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে ঘটনাটি ঘটলেও রেলওয়ের চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার শোয়েবুল শিকদার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

এদিকে চাঁদপুর ও চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচল করা মেঘনা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। উত্তেজিত অনেক যাত্রী তাৎক্ষণিক ট্রেনের সামনে এসে বিক্ষোভ করে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন এবং তাঁরা ট্রেনের ভেতরে ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। পরে রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুরাদ উল্লাহ বাহারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাৎক্ষণিক লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

অপরদিকে ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল হওয়ার কারণে নতুন ইঞ্জিন এলএম-২৯১৬ লাকসাম থেকে আসার পর নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৩ ঘণ্টা বিলম্বে প্রায় সকাল ৮টার দিকে চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

চাঁদপুর স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, আন্তনগর মেঘনা এক্সপ্রেস প্রতিদিনের মতো চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ছাড়ার আগেই চাঁদপুর স্টেশনে ট্রেনটি দাঁড়ানো অবস্থায় ইঞ্জিন (এল এম-২৯২৪) মাত্রাতিরিক্ত গরম হয়ে পড়ে। এতে চালক বুঝতে পেরে ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা না করে স্টেশনে অবস্থান করে। এ সময় ট্রেনের প্রধান লোকো মাস্টার (চালক) কামাল হোসেন ও সহকারী লোকো মোটিভ (সহকারী চালক) সাঈদ মোহাম্মদ তাহের ইঞ্জিনটিকে রক্ষার জন্য বাইরে থেকে পানি এনে ইঞ্জিনে মারতে থাকেন।

ওই সময় ইঞ্জিনের প্রচণ্ড গরম পানি ছিটকে এসে সহকারী চালক সাঈদের শরীরে গিয়ে পড়ে। এতে তাঁর সমস্ত শরীর ঝলসে গিয়ে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে প্রধান চালক কামাল হোসেন, রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগের কর্মচারীরা ও এলাকাবাসীর সহায়তায় ট্রেনের ইঞ্জিনে বেশ কিছু সময় নিয়ে পানি দিয়ে ঠান্ডা করেন। তখন থেকেই ইঞ্জিনটি বিকল হয়ে পড়ে।

চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার শোয়েবুল শিকদার জানান, তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় ট্রাফিক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের নির্দেশে লাকসাম থেকে একটি নতুন ইঞ্জিন এনে প্রায় তিন ঘণ্টা বিলম্বে ট্রেনটি চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে চাঁদপুর ত্যাগ করে। এ সময় বিকল ইঞ্জিনটিও ট্রেনের পেছনে আটকে লাকসাম নিয়ে যায়।

শোয়েবুল শিকদার আরও জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ট্রেনটির ইঞ্জিন মাত্রাতিরিক্ত গরম হওয়ায় পানি ছিটকে এসে চালক সাঈদের সমস্ত শরীর ঝলসে যায়। তাঁকে প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ও পরে কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে। ট্রেনের ইঞ্জিনটি বিকল হওয়ায় প্রায় তিন ঘণ্টা বিলম্বে মেঘনা ট্রেনটি চাঁদপুর ত্যাগ করে চট্টগ্রাম যায়। যাত্রীদের কোনো ক্ষতি হয়নি, তাঁরা কিছু সময়ের জন্য দুর্ভোগে পড়েন। ট্রেনের টিকিট করা প্রায় আট শতাধিক যাত্রী ও অতিরিক্তসহ সহস্রাধিক যাত্রী ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত