Ajker Patrika

ভোলায় দুর্গম চর থেকে কুলিং ট্যাংকারে দুধ সংগ্রহ, খুশি খামারিরা

শিমুল চৌধুরী, ভোলা 
কুলিং ট্যাংকারের মাধ্যমে দুর্গম চরাঞ্চল থেকে দুধ সংগ্রহ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুলিং ট্যাংকারের মাধ্যমে দুর্গম চরাঞ্চল থেকে দুধ সংগ্রহ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভোলায় দুগ্ধশিল্পে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো নৌযানে কুলিং ট্যাংকারের মাধ্যমে দুর্গম চরাঞ্চল থেকে দুধ সংগ্রহ শুরু হয়েছে। যা এই অঞ্চলের খামারিদের মনে আশার আলো জাগিয়েছে। এতে খামারিরা অনেক খুশি। কারণ, তাঁদের জন্য দুগ্ধ পরিবহন এখন সহজ ও নিরাপদ হয়েছে।

পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) আর্থিক সহযোগিতায় ‘রুরাল মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ ট্রান্সফরমেশন প্রজেক্টের (আরএমটিপি)’ আওতায় গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস) এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে।

দেশের একমাত্র উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের পশু খামারিদের জন্য উৎপাদিত দুধ বাজারজাতকরণ একটি বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল। দীর্ঘ নদীপথ, প্রতিকূল আবহাওয়া এবং সময়সাপেক্ষ পরিবহনব্যবস্থার কারণে গ্রীষ্মকালে দুধ নষ্ট হয়ে যাওয়া ছিল তাঁদের নিত্যদিনের ঘটনা। কুলিং ট্যাংকারে দুধ সংগ্রহ করায় এই সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে।

জানতে চাইলে ভোলা সদর উপজেলার মাঝেরচরের দুধ বিক্রেতা মো. নিজাম বলেন, ‘আগে দুধ শহরে আনতে দিনের অর্ধেক সময় চলে যেত। গ্রীষ্মে অনেক দুধ পথেই নষ্ট হতো বা ছড়া হতো। এতে আমাদের লোকসান গুনতে হতো।’

একই এলাকার খামারি মো. শরিফ বলেন, ‘ন্যায্য দাম তো দূরের কথা, দুধ ঠিকঠাক বিক্রি করতে পারলেই বাঁচতাম। এখন কুলিং ট্যাংকারের কারণে আমরা চিন্তামুক্ত। দুধ পরিবহন নিয়ে এখন আর কোনো ভাবনা নেই।’

কুলিং ট্যাংকার-সংবলিত নৌযান এই সমস্যার একটি কার্যকর সমাধান। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্টেইনলেস স্টিল ও শোলার দ্বারা বিশেষভাবে তৈরি এই ট্যাংকার একসঙ্গে ৭০০ লিটার দুধ বহন করতে পারে এবং গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়। জিজেইউএসের তত্ত্বাবধানে উদ্যোক্তা অলিউর রহমান বর্তমানে চার-পাঁচটি চর থেকে শতাধিক খামারির কাছ থেকে নিয়মিত দুধ সংগ্রহ করছেন।

এ বিষয়ে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার উপপরিচালক ডা. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য শুধু দুধ সংগ্রহ নয়। বরং খামারিদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করে তাঁদের জীবনমানে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা। এই নৌ ট্যাংকার চরাঞ্চলের ভঙ্গুর সরবরাহ শৃঙ্খলকে একটি শক্তিশালী ও আধুনিক কাঠামো দেবে।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলাম খান এই উদ্যোগকে ভোলার ডেইরি শিল্পের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি খামারিদের দুধ উৎপাদনে উৎসাহিত করার পাশাপাশি জেলায় নিরাপদ ও মানসম্মত দুধের সরবরাহ বৃদ্ধিতে সরাসরি ভূমিকা রাখবে। সরকারের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যের সঙ্গে এই উদ্যোগ অত্যন্ত সংগতিপূর্ণ। এই পরিবর্তনের প্রভাব ভোলার স্থানীয় বাজারেও পড়েছে।’

ভোলা শহরের দুধ ব্যবসায়ী মো. অলিউর রহমান স্বস্তির সঙ্গে বলেন, ‘আগে চরের দুধের মান নিয়ে সংশয় ছিল। এখন খামার থেকে সরাসরি ঠান্ডা ও বিশুদ্ধ দুধ পাচ্ছি। যা আমাদের ব্যবসার ঝুঁকি কমিয়েছে এবং ভোক্তাদের আস্থা বাড়িয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি বাসভবনে একাই থাকতেন শরীয়তপুরের ডিসি, পরিবার থাকত ঢাকায়

স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে ফাঁস দিলেন স্ত্রী

ইরানে ভূমিকম্প নিয়ে পারমাণবিক পরীক্ষার জল্পনা, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

‘আমেরিকা যুদ্ধে জড়ালে ইরানের হাতে অনেক বিকল্প আছে’

‘ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যায় নয়, গুণে বিশ্বাসী ইরান, ইসরায়েল এবার আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখবে’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত