Ajker Patrika

মির্জাগঞ্জে সরকারি চাল বিতরণে ঘুষ আদায়, কার্যালয়ে অবরুদ্ধ ইউপি সচিব

মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে চাল বিতরণে অর্থ আদায়ের অভিযোগে ইউপি সচিবকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন তাঁকে উদ্ধার করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে চাল বিতরণে অর্থ আদায়ের অভিযোগে ইউপি সচিবকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন তাঁকে উদ্ধার করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে দরিদ্র নারীদের মধ্যে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির চাল বিতরণে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ওই ইউপি সচিবকে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রায় তিন ঘণ্টা পরিষদের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর একটি দল তাঁকে উদ্ধার করে।

ইউপি সচিবের নাম মো. হুমায়ুন কবির। তিনি উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিব। এই ইউনিয়ন পরিষদে তিনি প্রায় ১৫ বছর কর্মরত আছেন।

ভিডব্লিউবির উপকারভোগীদের অভিযোগ, মাধবখালীতে ভিডব্লিউবির তালিকাভুক্ত ৩২৬ জন নারী রয়েছেন। সোমবার তাঁদের পাঁচ মাসের চাল বিতরণ করা হয়। এই চাল বিতরণ বাবদ স্থানীয় চৌকিদার ও দফাদারের মাধ্যমে প্রতিজন উপকারভোগীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে আদায় করেন সচিব হুমায়ুন কবির। সব উপকারভোগীকে এই টাকা দিতে বাধ্য করেন তিনি। এতে প্রায় ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা উত্তোলন করা হয়।

জানা গেছে, জেসমিন বেগম নামের এক উপকারভোগীর কাছে থেকে ৫০০ টাকা নিয়েও তাঁর কার্ড হারিয়ে গেছে অজুহাত দেখিয়ে চাল দেননি বলে অভিযোগ ওঠে হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সচিবের সঙ্গে স্থানীয়দের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এতে ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে লোকজন জড়ো হতে থাকে। চাল নিতে সরকারকে কোনো টাকা দিতে হয় না জানার পর উপস্থিত ভুক্তভোগীরা তাঁদের টাকা ফেরত ও সচিবের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেন এবং সচিবকে একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে চাল বিতরণে অর্থ আদায়ের অভিযোগে ইউপি সচিবকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন তাঁকে উদ্ধার করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে চাল বিতরণে অর্থ আদায়ের অভিযোগে ইউপি সচিবকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন তাঁকে উদ্ধার করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার শফিকুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘প্রত্যেক উপকারভোগীর কাছ থেকে সচিব হুমায়ুন কবির ৫০০ টাকা আমাদের উত্তোলন করতে বলেছেন। আমরা দুই দিন আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকাগুলো উত্তোলন করেছি।’

মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও ইউপি সদস্য, চৌকিদার এবং দফাদার সবাই মিলে আলোচনার মাধ্যমে এ টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা আমার একক কোনো সিদ্ধান্ত নয়। আমি টাকা উত্তোলনও করিনি। স্থানীয় চৌকিদার ও দফাদার উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা তুলেছেন।’

ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘টাকা উত্তোলনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে যারা এই চাল পেতে টাকা দিয়েছেন, সবাই টাকা ফেরত পাবেন।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘সব উপকারভোগীকে মঙ্গলবারের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টাকা উত্তোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত