Ajker Patrika

দেশে টিকা উৎপাদকের তালিকায় তিন কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে টিকা উৎপাদকের তালিকায় তিন কোম্পানি

ঢাকা: রাশিয়ার টিকা অনুমোদনের দুই দিনের মাথায় জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হলো চীনের সিনোফার্মের টিকাও। আগের দিন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের গঠিত টেকনিক্যাল কমিটি সুপারিশ করার পর এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান তিনি।

এর আগে গত জানুয়ারিতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ও গত ২৭ এপ্রিল রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

সংবাদ সম্মেলনে মাহবুবুর রহমান বলেন, চীনের এই টিকা দুই ডোজের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুমোদন না দিলেও জর্ডান, আরব আমিরাত, মিশরসহ পাঁচটি দেশের ৫৫ লাখ মানুষের শরীরে সফলভাবে এটির ট্রায়াল দেওয়া হয়। তাদের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে আমাদের গঠিত টেকনিক্যাল কমিটি টিকাটি ব্যবহারে অনুমোদন দেয়।

মাহবুবুর রহমান বলেন, সরাসরি টিকা কেনার পাশাপাশি প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে অথবা দেশীয় কোনো ফার্মাসিটিক্যালের মাধ্যমে বাংলাদেশে উৎপাদন করা যাবে। এসব কিছু হবে জি টু জি ভিত্তিতে। টিকা হাতে পেলে এক হাজার মানুষের শরীরে প্রয়োগের পর এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর পুরোপুরি ভ্যাকসিনেশনে যাবো আমরা। এরপরও এটির সেফটি ও এথিকস পর্যবেক্ষণ করা হবে।

বাংলাদেশে বেসরকারি তিনটি কোম্পানি টিকা উৎপাদনে সক্ষম জানিয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ইনসেপ্টা, পপুলার এবং হেলথ কেয়ার টিকা উৎপাদনে সক্ষম। প্রাথমিকভাবে ইনসেপ্টাকে আমরা পছন্দের তালিকায় রেখেছি। এরপরও রাশিয়া ও চীনের দল এসে সবগুলো পরিদর্শন করবে, তারা যেটা ভালো মনে করে সেটাই হবে। তবে এই মুহূর্তে আমাদের পর্যবেক্ষণে ইনসেপ্টা।

কবে থেকে দেশে টিকা উৎপাদন শুরু হতে পারে জানতে চাইলে মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, চীন আমাদেরকে ৫ লাখ টিকা উপহার দিয়েছে। এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে সেগুলো আশা করি পেয়ে যাবো। দ্রুত অন্য জটিলতাগুলো দূর করে জিটুজি ভিত্তিতে টিকা আনা ও উৎপাদনের যাবে বাংলাদেশ। আমরা তরল ও পাউডার দুই ভাবেই টিকা উৎপাদন করতে চাই।

এই মুহূর্তে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার উপযুক্ত যারা তারাও চীনের টিকা নিতে পারবেন কিনা- এ প্রসঙ্গে মাহবুবুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত যিনি প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন, দ্বিতীয় ডোজও একই টিকা নেওয়ার পক্ষে মত আমাদের। তবে ন্যাশনাল ইমিউনাইজেশন টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজারি গ্রুপ (নাইট্যাগ) বিষয়টি পর্যালোচনা ও গবেষণা করছে, তারাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন।

এবার তৃতীয় কোনো পক্ষ নয়, সরকার সরাসরি টিকা উৎপাদন এবং বিতরণ করবে বলেও জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

এর আগে গত ২৭ এপ্রিল রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিন ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মে মাসেই প্রথম দফায় ৪০ লাখ টিকা আসবে দেশটি থেকে। বাকিগুলো ফর্মুলা গোপন রাখার শর্তে উৎপাদন করবে বাংলাদেশ। এমনকি রপ্তানিও করা যাবে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানায়, ‘স্পুটনিক-ভি দুই ডোজের টিকা। প্রথম ডোজ নেওয়ার ২১ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। এক্ষেত্রে যারা অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকা নিয়েছেন তারা দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকাই পাবেন। অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকার পর এই টিকা নেওয়া যাবে না।

ভারত টিকা রপ্তানি স্থগিত করায় চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারছে না সেরাম ইনস্টিটিউট। এর পরিপ্রেক্ষিতে চীন ও রাশিয়া থেকে টিকা আনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তিন কোটি টিকা কিনতে গত বছরের নভেম্বরে সেরামের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে বাংলাদেশ। টিকা পেতে অগ্রিম অর্থও পরিশোধ করা হয়। এ টিকার বিতরণকারী হিসেবে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। কিন্তু এখন পর্যন্ত দুই দফায় ৭০ লাখ টিকা পেয়েছে সরকার। অথচ প্রতিমাসে ৫০ লাখ করে মে মাসের মধ্যে দেড় কোটি টিকা পাওয়ার কথা ছিল।

ভারত সরকারের উপহারের ৩৩ লাখসহ মোট টিকা পৌঁছেছে ১ কোটি ৩ লাখ। এরই মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে প্রায় ৮৪ লাখ ডোজ দেওয়া শেষ করেছে বাংলাদেশ। টিকা পাওয়ার অনিশ্চয়তায় বন্ধ করা হয়েছে প্রথম ডোজের টিকাদান। সবমিলে এখন পর্যন্ত ঘাটতি রয়েছে ১৫ লাখ ডোজের বেশি।

এদিকে দেশে উদ্ভাবিত কোভ্যাকসিন বাংলাদেশে উৎপাদন ও প্রয়োজনে ট্রায়াল চালোনোর প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি অনানুষ্ঠানিক কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে বলে দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। তবে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে এখনো সাড়া দেয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত