প্রমিতি কিবরিয়া ইসলাম, ঢাকা

নিজেদের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য নারীদের বিভিন্ন অদ্ভুত ধরনের কৌশল অবলম্বন করার নজির রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবশ্য সেই সৌন্দর্যের সংজ্ঞায়ন করেছে পুরুষ। কাম, আনুগত্য ও আধিপত্যের প্রতীক হয়ে রয়েছে এসব সৌন্দর্যের ধারণা।
দশম শতকে চীনের নারীরা পায়ের পাতার আকার পরিবর্তন করার জন্য ‘ফুটবাইন্ডিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করতেন। সে সময় ছোট পায়ের পাতাই ছিল সৌন্দর্যের প্রতীক। এই প্রক্রিয়ায় নারীরা খুব শক্ত করে ব্যান্ডেজ করে পায়ের পাতার আকৃতি পরিবর্তন করতেন। এর ফলে পায়ের আকার বিকৃত হয়ে ভাঁজ হয়ে যেত।
সাধারণত চার থেকে ছয় বছর বয়সের মধ্যে মেয়েদের ফুটবাইন্ডিং শুরু করা হতো। মা, দাদি বা বয়স্ক নারী আত্মীয় প্রথমবারের মতো মেয়ের পা বেঁধে দিতেন। পায়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ৩ ইঞ্চির মধ্যে রাখাই ছিল চূড়ান্ত লক্ষ্য। তবে খুব কম নারীই সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছিলেন।
ব্যান্ডেজ করার আগে হাড় ও টিস্যু নরম করার জন্য পা গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা হতো। পায়ের ছোট আঙুলগুলো নিজের দিকে টেনে ব্যান্ডেজ দিয়ে মোড়ানো হতো। পায়ের আঙুলগুলো নিচে ভাঁজ করার পর কাপড়ের ফিতা দিয়ে শক্তভাবে বাঁধা হতো। প্রতিবার ব্যান্ডেজ খোলার করার পর পা পরিষ্কার করে আবার ব্যান্ডেজ করা হতো। সে সময় মৃত চামড়া, ফোসকা, শুকিয়ে যাওয়া রক্ত ও পুঁজ পরিষ্কার করা হতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব ব্যান্ডেজ আরও শক্ত করে বাঁধা হতো। এভাবে ধীরে ধীরে আঙুল বেঁকে গিয়ে পা আরও সংকুচিত হতো।
প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ছিল। ব্যান্ডেজের ওপরে আলংকারিক জুতা ও লেগিংস পরা হতো। সময় ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ওপর ভিত্তি করে এসব আলংকারিক জুতা ও লেগিংস পরা হতো।
এই প্রক্রিয়ার ফলে পায়ে ক্ষত সৃষ্টি, গ্যাংগ্রিন ও পক্ষাঘাতগ্রস্তের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যার সম্মুখীন হতেন নারীরা। এমনকি কারও কারও মৃত্যুও হতো। যদিও এ কারণে মৃত্যুর সংখ্যা কমই ছিল।
এই ধরনের অনুশীলনের সঠিক উৎস অজানা। তবে অনেকের মতে, সৌন্দর্য ও নারীত্ব নিয়ে চীনার সংস্কৃতির প্রচলিত ধারণা থেকেই ফুটবাইন্ডিং অনুশীলন করা হতো। ছোট ও আবদ্ধ পা আকর্ষণীয় এবং কামোত্তেজক বলে বিবেচিত হতো। বাঁকানো ছোট পায়ের নারীদের বিবাহযোগ্য ও সামাজিক মর্যাদায় অভিজাত হিসেবে দেখা হতো।
সে সময় উচ্চবিত্তদের ফুটবাইন্ডিং শুরু হলেও তা সমাজের অন্যান্য শ্রেণির মধ্যেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যেসব দরিদ্র পরিবারের ব্যান্ডেজ কেনার ও পা বাধার পর যত্ন নেওয়ার সামর্থ্য ছিল না, তাদের মেয়েদের পা বাঁধার জন্য বড় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হতো। কারণ, বড়রা এই যন্ত্রণা তুলনামূলক সহ্য করতে পারত। এর মধ্যে যত্ন নেওয়ার উপযুক্ত উপাদানগুলো সংগ্রহ করত পরিবার। বিয়ে হওয়ার পর নারীরা ব্যান্ডেজ খুলে ফেলত।
পায়ের এই বাঁধনকে অল্পবয়সী মেয়েদের বয়ঃসন্ধি, ঋতুচক্র ও প্রসবের প্রস্তুতি বলে মনে করা হতো। এই প্রক্রিয়াকে মেয়ের আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। এই ফুটবাইন্ডিং নারীদের চলাফেরা ও ক্ষমতাকে সীমিত করে ও নারীকে পুরুষের অধীনস্থ করে লিঙ্গবৈষম্য তৈরি করেছিল।
এটি পুরুষতান্ত্রিক চীনা সংস্কৃতিতে এই ধরনের পায়ের মেয়েদের বিবাহযোগ্য বলে মনে করা হতো। ফুটবাইন্ডিংকে উর্বরতার প্রতীক হিসেবে দেখা হতো। অবশ্য পায়ের ব্যান্ডেজ বাঁধার মাধ্যমে কন্যা, মা ও দাদি-নানিদের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় হওয়ার একটি উপলক্ষও ছিল এই সংস্কৃতি।
কিং রাজবংশের সময় সম্রাট কাংজি (১৬৬১–১৭২২) ১৬৬২ সালে পা বাঁধা নিষিদ্ধ করেন। কিন্তু ১৬৬৮ সালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেন। কারণ, অনেকেই তখনো ফুটবাইন্ডিং অনুশীলন চালিয়ে যায়। পরবর্তী সময় খ্রিষ্টান মিশনারিরা এটিকে নিষ্ঠুর প্রক্রিয়া হিসেবে অভিহিত করে চীনের নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন। সে সময় মিশনারিরা চীনের নাগরিকদের জানান যে বাকি বিশ্ব এই প্রক্রিয়াকে অবজ্ঞার চোখে দেখছে। তাই আরও ব্যাপকভাবে এই অনুশীলনের বিরোধিতা শুরু হয়।
১৯১১ সালে চীনে জাতীয়তাবাদী বিপ্লবের পর ১৯১২ সালে ফুটবাইন্ডিং নিষিদ্ধ করা হয়। তবে ১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জন্মের আগে পর্যন্ত ফুটবাইন্ডিংয়ের অনুশীলন চলছিল।

নিজেদের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য নারীদের বিভিন্ন অদ্ভুত ধরনের কৌশল অবলম্বন করার নজির রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবশ্য সেই সৌন্দর্যের সংজ্ঞায়ন করেছে পুরুষ। কাম, আনুগত্য ও আধিপত্যের প্রতীক হয়ে রয়েছে এসব সৌন্দর্যের ধারণা।
দশম শতকে চীনের নারীরা পায়ের পাতার আকার পরিবর্তন করার জন্য ‘ফুটবাইন্ডিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করতেন। সে সময় ছোট পায়ের পাতাই ছিল সৌন্দর্যের প্রতীক। এই প্রক্রিয়ায় নারীরা খুব শক্ত করে ব্যান্ডেজ করে পায়ের পাতার আকৃতি পরিবর্তন করতেন। এর ফলে পায়ের আকার বিকৃত হয়ে ভাঁজ হয়ে যেত।
সাধারণত চার থেকে ছয় বছর বয়সের মধ্যে মেয়েদের ফুটবাইন্ডিং শুরু করা হতো। মা, দাদি বা বয়স্ক নারী আত্মীয় প্রথমবারের মতো মেয়ের পা বেঁধে দিতেন। পায়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ৩ ইঞ্চির মধ্যে রাখাই ছিল চূড়ান্ত লক্ষ্য। তবে খুব কম নারীই সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছিলেন।
ব্যান্ডেজ করার আগে হাড় ও টিস্যু নরম করার জন্য পা গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা হতো। পায়ের ছোট আঙুলগুলো নিজের দিকে টেনে ব্যান্ডেজ দিয়ে মোড়ানো হতো। পায়ের আঙুলগুলো নিচে ভাঁজ করার পর কাপড়ের ফিতা দিয়ে শক্তভাবে বাঁধা হতো। প্রতিবার ব্যান্ডেজ খোলার করার পর পা পরিষ্কার করে আবার ব্যান্ডেজ করা হতো। সে সময় মৃত চামড়া, ফোসকা, শুকিয়ে যাওয়া রক্ত ও পুঁজ পরিষ্কার করা হতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব ব্যান্ডেজ আরও শক্ত করে বাঁধা হতো। এভাবে ধীরে ধীরে আঙুল বেঁকে গিয়ে পা আরও সংকুচিত হতো।
প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ছিল। ব্যান্ডেজের ওপরে আলংকারিক জুতা ও লেগিংস পরা হতো। সময় ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ওপর ভিত্তি করে এসব আলংকারিক জুতা ও লেগিংস পরা হতো।
এই প্রক্রিয়ার ফলে পায়ে ক্ষত সৃষ্টি, গ্যাংগ্রিন ও পক্ষাঘাতগ্রস্তের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যার সম্মুখীন হতেন নারীরা। এমনকি কারও কারও মৃত্যুও হতো। যদিও এ কারণে মৃত্যুর সংখ্যা কমই ছিল।
এই ধরনের অনুশীলনের সঠিক উৎস অজানা। তবে অনেকের মতে, সৌন্দর্য ও নারীত্ব নিয়ে চীনার সংস্কৃতির প্রচলিত ধারণা থেকেই ফুটবাইন্ডিং অনুশীলন করা হতো। ছোট ও আবদ্ধ পা আকর্ষণীয় এবং কামোত্তেজক বলে বিবেচিত হতো। বাঁকানো ছোট পায়ের নারীদের বিবাহযোগ্য ও সামাজিক মর্যাদায় অভিজাত হিসেবে দেখা হতো।
সে সময় উচ্চবিত্তদের ফুটবাইন্ডিং শুরু হলেও তা সমাজের অন্যান্য শ্রেণির মধ্যেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যেসব দরিদ্র পরিবারের ব্যান্ডেজ কেনার ও পা বাধার পর যত্ন নেওয়ার সামর্থ্য ছিল না, তাদের মেয়েদের পা বাঁধার জন্য বড় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হতো। কারণ, বড়রা এই যন্ত্রণা তুলনামূলক সহ্য করতে পারত। এর মধ্যে যত্ন নেওয়ার উপযুক্ত উপাদানগুলো সংগ্রহ করত পরিবার। বিয়ে হওয়ার পর নারীরা ব্যান্ডেজ খুলে ফেলত।
পায়ের এই বাঁধনকে অল্পবয়সী মেয়েদের বয়ঃসন্ধি, ঋতুচক্র ও প্রসবের প্রস্তুতি বলে মনে করা হতো। এই প্রক্রিয়াকে মেয়ের আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। এই ফুটবাইন্ডিং নারীদের চলাফেরা ও ক্ষমতাকে সীমিত করে ও নারীকে পুরুষের অধীনস্থ করে লিঙ্গবৈষম্য তৈরি করেছিল।
এটি পুরুষতান্ত্রিক চীনা সংস্কৃতিতে এই ধরনের পায়ের মেয়েদের বিবাহযোগ্য বলে মনে করা হতো। ফুটবাইন্ডিংকে উর্বরতার প্রতীক হিসেবে দেখা হতো। অবশ্য পায়ের ব্যান্ডেজ বাঁধার মাধ্যমে কন্যা, মা ও দাদি-নানিদের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় হওয়ার একটি উপলক্ষও ছিল এই সংস্কৃতি।
কিং রাজবংশের সময় সম্রাট কাংজি (১৬৬১–১৭২২) ১৬৬২ সালে পা বাঁধা নিষিদ্ধ করেন। কিন্তু ১৬৬৮ সালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেন। কারণ, অনেকেই তখনো ফুটবাইন্ডিং অনুশীলন চালিয়ে যায়। পরবর্তী সময় খ্রিষ্টান মিশনারিরা এটিকে নিষ্ঠুর প্রক্রিয়া হিসেবে অভিহিত করে চীনের নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন। সে সময় মিশনারিরা চীনের নাগরিকদের জানান যে বাকি বিশ্ব এই প্রক্রিয়াকে অবজ্ঞার চোখে দেখছে। তাই আরও ব্যাপকভাবে এই অনুশীলনের বিরোধিতা শুরু হয়।
১৯১১ সালে চীনে জাতীয়তাবাদী বিপ্লবের পর ১৯১২ সালে ফুটবাইন্ডিং নিষিদ্ধ করা হয়। তবে ১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জন্মের আগে পর্যন্ত ফুটবাইন্ডিংয়ের অনুশীলন চলছিল।
প্রমিতি কিবরিয়া ইসলাম, ঢাকা

নিজেদের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য নারীদের বিভিন্ন অদ্ভুত ধরনের কৌশল অবলম্বন করার নজির রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবশ্য সেই সৌন্দর্যের সংজ্ঞায়ন করেছে পুরুষ। কাম, আনুগত্য ও আধিপত্যের প্রতীক হয়ে রয়েছে এসব সৌন্দর্যের ধারণা।
দশম শতকে চীনের নারীরা পায়ের পাতার আকার পরিবর্তন করার জন্য ‘ফুটবাইন্ডিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করতেন। সে সময় ছোট পায়ের পাতাই ছিল সৌন্দর্যের প্রতীক। এই প্রক্রিয়ায় নারীরা খুব শক্ত করে ব্যান্ডেজ করে পায়ের পাতার আকৃতি পরিবর্তন করতেন। এর ফলে পায়ের আকার বিকৃত হয়ে ভাঁজ হয়ে যেত।
সাধারণত চার থেকে ছয় বছর বয়সের মধ্যে মেয়েদের ফুটবাইন্ডিং শুরু করা হতো। মা, দাদি বা বয়স্ক নারী আত্মীয় প্রথমবারের মতো মেয়ের পা বেঁধে দিতেন। পায়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ৩ ইঞ্চির মধ্যে রাখাই ছিল চূড়ান্ত লক্ষ্য। তবে খুব কম নারীই সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছিলেন।
ব্যান্ডেজ করার আগে হাড় ও টিস্যু নরম করার জন্য পা গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা হতো। পায়ের ছোট আঙুলগুলো নিজের দিকে টেনে ব্যান্ডেজ দিয়ে মোড়ানো হতো। পায়ের আঙুলগুলো নিচে ভাঁজ করার পর কাপড়ের ফিতা দিয়ে শক্তভাবে বাঁধা হতো। প্রতিবার ব্যান্ডেজ খোলার করার পর পা পরিষ্কার করে আবার ব্যান্ডেজ করা হতো। সে সময় মৃত চামড়া, ফোসকা, শুকিয়ে যাওয়া রক্ত ও পুঁজ পরিষ্কার করা হতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব ব্যান্ডেজ আরও শক্ত করে বাঁধা হতো। এভাবে ধীরে ধীরে আঙুল বেঁকে গিয়ে পা আরও সংকুচিত হতো।
প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ছিল। ব্যান্ডেজের ওপরে আলংকারিক জুতা ও লেগিংস পরা হতো। সময় ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ওপর ভিত্তি করে এসব আলংকারিক জুতা ও লেগিংস পরা হতো।
এই প্রক্রিয়ার ফলে পায়ে ক্ষত সৃষ্টি, গ্যাংগ্রিন ও পক্ষাঘাতগ্রস্তের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যার সম্মুখীন হতেন নারীরা। এমনকি কারও কারও মৃত্যুও হতো। যদিও এ কারণে মৃত্যুর সংখ্যা কমই ছিল।
এই ধরনের অনুশীলনের সঠিক উৎস অজানা। তবে অনেকের মতে, সৌন্দর্য ও নারীত্ব নিয়ে চীনার সংস্কৃতির প্রচলিত ধারণা থেকেই ফুটবাইন্ডিং অনুশীলন করা হতো। ছোট ও আবদ্ধ পা আকর্ষণীয় এবং কামোত্তেজক বলে বিবেচিত হতো। বাঁকানো ছোট পায়ের নারীদের বিবাহযোগ্য ও সামাজিক মর্যাদায় অভিজাত হিসেবে দেখা হতো।
সে সময় উচ্চবিত্তদের ফুটবাইন্ডিং শুরু হলেও তা সমাজের অন্যান্য শ্রেণির মধ্যেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যেসব দরিদ্র পরিবারের ব্যান্ডেজ কেনার ও পা বাধার পর যত্ন নেওয়ার সামর্থ্য ছিল না, তাদের মেয়েদের পা বাঁধার জন্য বড় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হতো। কারণ, বড়রা এই যন্ত্রণা তুলনামূলক সহ্য করতে পারত। এর মধ্যে যত্ন নেওয়ার উপযুক্ত উপাদানগুলো সংগ্রহ করত পরিবার। বিয়ে হওয়ার পর নারীরা ব্যান্ডেজ খুলে ফেলত।
পায়ের এই বাঁধনকে অল্পবয়সী মেয়েদের বয়ঃসন্ধি, ঋতুচক্র ও প্রসবের প্রস্তুতি বলে মনে করা হতো। এই প্রক্রিয়াকে মেয়ের আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। এই ফুটবাইন্ডিং নারীদের চলাফেরা ও ক্ষমতাকে সীমিত করে ও নারীকে পুরুষের অধীনস্থ করে লিঙ্গবৈষম্য তৈরি করেছিল।
এটি পুরুষতান্ত্রিক চীনা সংস্কৃতিতে এই ধরনের পায়ের মেয়েদের বিবাহযোগ্য বলে মনে করা হতো। ফুটবাইন্ডিংকে উর্বরতার প্রতীক হিসেবে দেখা হতো। অবশ্য পায়ের ব্যান্ডেজ বাঁধার মাধ্যমে কন্যা, মা ও দাদি-নানিদের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় হওয়ার একটি উপলক্ষও ছিল এই সংস্কৃতি।
কিং রাজবংশের সময় সম্রাট কাংজি (১৬৬১–১৭২২) ১৬৬২ সালে পা বাঁধা নিষিদ্ধ করেন। কিন্তু ১৬৬৮ সালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেন। কারণ, অনেকেই তখনো ফুটবাইন্ডিং অনুশীলন চালিয়ে যায়। পরবর্তী সময় খ্রিষ্টান মিশনারিরা এটিকে নিষ্ঠুর প্রক্রিয়া হিসেবে অভিহিত করে চীনের নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন। সে সময় মিশনারিরা চীনের নাগরিকদের জানান যে বাকি বিশ্ব এই প্রক্রিয়াকে অবজ্ঞার চোখে দেখছে। তাই আরও ব্যাপকভাবে এই অনুশীলনের বিরোধিতা শুরু হয়।
১৯১১ সালে চীনে জাতীয়তাবাদী বিপ্লবের পর ১৯১২ সালে ফুটবাইন্ডিং নিষিদ্ধ করা হয়। তবে ১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জন্মের আগে পর্যন্ত ফুটবাইন্ডিংয়ের অনুশীলন চলছিল।

নিজেদের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য নারীদের বিভিন্ন অদ্ভুত ধরনের কৌশল অবলম্বন করার নজির রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবশ্য সেই সৌন্দর্যের সংজ্ঞায়ন করেছে পুরুষ। কাম, আনুগত্য ও আধিপত্যের প্রতীক হয়ে রয়েছে এসব সৌন্দর্যের ধারণা।
দশম শতকে চীনের নারীরা পায়ের পাতার আকার পরিবর্তন করার জন্য ‘ফুটবাইন্ডিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করতেন। সে সময় ছোট পায়ের পাতাই ছিল সৌন্দর্যের প্রতীক। এই প্রক্রিয়ায় নারীরা খুব শক্ত করে ব্যান্ডেজ করে পায়ের পাতার আকৃতি পরিবর্তন করতেন। এর ফলে পায়ের আকার বিকৃত হয়ে ভাঁজ হয়ে যেত।
সাধারণত চার থেকে ছয় বছর বয়সের মধ্যে মেয়েদের ফুটবাইন্ডিং শুরু করা হতো। মা, দাদি বা বয়স্ক নারী আত্মীয় প্রথমবারের মতো মেয়ের পা বেঁধে দিতেন। পায়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ৩ ইঞ্চির মধ্যে রাখাই ছিল চূড়ান্ত লক্ষ্য। তবে খুব কম নারীই সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছিলেন।
ব্যান্ডেজ করার আগে হাড় ও টিস্যু নরম করার জন্য পা গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা হতো। পায়ের ছোট আঙুলগুলো নিজের দিকে টেনে ব্যান্ডেজ দিয়ে মোড়ানো হতো। পায়ের আঙুলগুলো নিচে ভাঁজ করার পর কাপড়ের ফিতা দিয়ে শক্তভাবে বাঁধা হতো। প্রতিবার ব্যান্ডেজ খোলার করার পর পা পরিষ্কার করে আবার ব্যান্ডেজ করা হতো। সে সময় মৃত চামড়া, ফোসকা, শুকিয়ে যাওয়া রক্ত ও পুঁজ পরিষ্কার করা হতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব ব্যান্ডেজ আরও শক্ত করে বাঁধা হতো। এভাবে ধীরে ধীরে আঙুল বেঁকে গিয়ে পা আরও সংকুচিত হতো।
প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ছিল। ব্যান্ডেজের ওপরে আলংকারিক জুতা ও লেগিংস পরা হতো। সময় ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ওপর ভিত্তি করে এসব আলংকারিক জুতা ও লেগিংস পরা হতো।
এই প্রক্রিয়ার ফলে পায়ে ক্ষত সৃষ্টি, গ্যাংগ্রিন ও পক্ষাঘাতগ্রস্তের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যার সম্মুখীন হতেন নারীরা। এমনকি কারও কারও মৃত্যুও হতো। যদিও এ কারণে মৃত্যুর সংখ্যা কমই ছিল।
এই ধরনের অনুশীলনের সঠিক উৎস অজানা। তবে অনেকের মতে, সৌন্দর্য ও নারীত্ব নিয়ে চীনার সংস্কৃতির প্রচলিত ধারণা থেকেই ফুটবাইন্ডিং অনুশীলন করা হতো। ছোট ও আবদ্ধ পা আকর্ষণীয় এবং কামোত্তেজক বলে বিবেচিত হতো। বাঁকানো ছোট পায়ের নারীদের বিবাহযোগ্য ও সামাজিক মর্যাদায় অভিজাত হিসেবে দেখা হতো।
সে সময় উচ্চবিত্তদের ফুটবাইন্ডিং শুরু হলেও তা সমাজের অন্যান্য শ্রেণির মধ্যেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যেসব দরিদ্র পরিবারের ব্যান্ডেজ কেনার ও পা বাধার পর যত্ন নেওয়ার সামর্থ্য ছিল না, তাদের মেয়েদের পা বাঁধার জন্য বড় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হতো। কারণ, বড়রা এই যন্ত্রণা তুলনামূলক সহ্য করতে পারত। এর মধ্যে যত্ন নেওয়ার উপযুক্ত উপাদানগুলো সংগ্রহ করত পরিবার। বিয়ে হওয়ার পর নারীরা ব্যান্ডেজ খুলে ফেলত।
পায়ের এই বাঁধনকে অল্পবয়সী মেয়েদের বয়ঃসন্ধি, ঋতুচক্র ও প্রসবের প্রস্তুতি বলে মনে করা হতো। এই প্রক্রিয়াকে মেয়ের আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। এই ফুটবাইন্ডিং নারীদের চলাফেরা ও ক্ষমতাকে সীমিত করে ও নারীকে পুরুষের অধীনস্থ করে লিঙ্গবৈষম্য তৈরি করেছিল।
এটি পুরুষতান্ত্রিক চীনা সংস্কৃতিতে এই ধরনের পায়ের মেয়েদের বিবাহযোগ্য বলে মনে করা হতো। ফুটবাইন্ডিংকে উর্বরতার প্রতীক হিসেবে দেখা হতো। অবশ্য পায়ের ব্যান্ডেজ বাঁধার মাধ্যমে কন্যা, মা ও দাদি-নানিদের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় হওয়ার একটি উপলক্ষও ছিল এই সংস্কৃতি।
কিং রাজবংশের সময় সম্রাট কাংজি (১৬৬১–১৭২২) ১৬৬২ সালে পা বাঁধা নিষিদ্ধ করেন। কিন্তু ১৬৬৮ সালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেন। কারণ, অনেকেই তখনো ফুটবাইন্ডিং অনুশীলন চালিয়ে যায়। পরবর্তী সময় খ্রিষ্টান মিশনারিরা এটিকে নিষ্ঠুর প্রক্রিয়া হিসেবে অভিহিত করে চীনের নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন। সে সময় মিশনারিরা চীনের নাগরিকদের জানান যে বাকি বিশ্ব এই প্রক্রিয়াকে অবজ্ঞার চোখে দেখছে। তাই আরও ব্যাপকভাবে এই অনুশীলনের বিরোধিতা শুরু হয়।
১৯১১ সালে চীনে জাতীয়তাবাদী বিপ্লবের পর ১৯১২ সালে ফুটবাইন্ডিং নিষিদ্ধ করা হয়। তবে ১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জন্মের আগে পর্যন্ত ফুটবাইন্ডিংয়ের অনুশীলন চলছিল।

প্রতিবাদের অনেক ভাষার অন্যতম কার্টুন। এটি এক অনন্য প্রকাশভঙ্গি। শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এটি এমন এক ভাষা, যা চোখে দেখা তো যায়-ই, করা যায় অনুভবও। আমাদের দেশের নারী কার্টুনিস্টরা নারীদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন বৈষম্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে এই শিল্পমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন।
১ দিন আগে
নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন কানন জেনেট গোমেজ। বাহারি নকশা করা সেই পোশাকগুলো দেখে অনেকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন তাঁকে। শখের বশে একসময় তিনি প্রথমে সবার জন্য পোশাক তৈরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পান।
১ দিন আগে
রাস্তায় নারীদের হয়রানি করার ঘটনা পৃথিবীতে এতটাই স্বাভাবিক যে তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানও বাদ যাচ্ছেন না! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। হয়রানির এই ঘটনা ঘটেছে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে। অবশ্য তাতে টনক নড়েছে পুরো দেশের।
১ দিন আগে
তাঁকে বলা হয় মাদার অব আমেরিকান মডার্নিজম। তাঁর কর্মজীবন বিস্তৃত ছিল সাত দশক ধরে। তিনি জর্জিয়া টোটো ও’কিফ। জীবনের একপর্যায়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকলেও তিনি তাঁর শেষ সহায়তাবিহীন তেলচিত্রটি আঁকেন ১৯৭২ সালে।
১ দিন আগেকাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

প্রতিবাদের অনেক ভাষার অন্যতম কার্টুন। এটি এক অনন্য প্রকাশভঙ্গি। শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এটি এমন এক ভাষা, যা চোখে দেখা তো যায়-ই, করা যায় অনুভবও। আমাদের দেশের নারী কার্টুনিস্টরা নারীদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন বৈষম্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে এই শিল্পমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন।
‘দেখছেন কেমন জামা পরেছে’, ‘বাচ্চা নিয়ে চাকরি করবে কীভাবে’, ‘আপনার স্বামীর তো অনেক টাকা, আপনি চাকরি করে কী করবেন’...নারীদের উদ্দেশে এমন কথা হরহামেশা বলা হয় আমাদের দেশে। জন্মের পর একটি মেয়েশিশু গোলাপি জামা পরবে কি না, সেটি নির্ধারণ করা থেকে শুরু করে সেই শিশু বড় হয়ে কেমন পোশাক পরবে, কোথায় যাবে, কবে বিয়ে করবে, সন্তান নেবে কি না, চাকরি করবে কি না—এসব আমাদের সমাজ ঠিক করে দেয়। এবং এখনো। তার ওপর আছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা।
এসব ঘটনার প্রতিবাদ হতে থাকে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন মাধ্যমে। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তেমনই এক আয়োজন ছিল। সেখানে গ্যালারিজুড়ে ছিল নারীদের অস্তিত্ব; তাদের অধিকার এবং তাদের ওপর হওয়া সহিংসতা ও নির্যাতনের চিত্র। কেউ সেসব ঘটনা তুলে ধরেছিলেন রংতুলিতে, কেউবা এঁকেছেন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। গ্যালারি ঘুরে নিত্য ঘটনাগুলোই বারবার চোখের সামনে ফুটে উঠছিল; গণপরিবহনে নারীদের হেনস্তা, তাদের ভিডিও ধারণ, পোশাক নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা আর কটূক্তি। একটি ছবিতে ফুটে উঠেছে এক নারী নভোচারী চাঁদে গিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর পেছনে পৃথিবী থেকে কিছু মুখ উঠে এসেছে, যারা বলছে, ‘ওড়না কোথায়?’ হ্যাঁ, আমাদের সমাজে এটাই এক চরম বাস্তবতা হয়ে ফুটে উঠেছে। গণপরিবহনে একজন বোরকা পরা নারী যেভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছে, জিনস টপ কিংবা কামিজ পরা নারীও সেভাবেই হেনস্তার শিকার হচ্ছে।
কার্টুন চিত্রগুলো একজন নারীর জীবনের খুব অন্ধকার বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তুলে ধরছিল। প্রদর্শনীর শেষ দিন গ্যালারি ঘুরে দেখতে দেখতে কথা হলো সৈয়দা আফরিনের সঙ্গে। তিনি এক দর্শনার্থী। বললেন, ‘অনেক সময় নিয়ে সব কাজ দেখলাম। এই চারদেয়ালের প্রতিটি ছবিই যেন একজন নারীর জীবনের বাস্তবতা। বাসে, রাস্তায়, ঘরে আমরা আসলে এভাবেই বেঁচে থাকি সমাজে। এখানে যত ছবি আছে, সেগুলোর মধ্যে ৮০ ভাগ ছবির কর্মকাণ্ড একটা মেয়ে তার জীবনে পেয়েছে।’
বাস্তবতা তো আর বাস্তবেই শেষ হয় না। পিছু ছাড়ে না অনলাইনের বিশাল দুনিয়াতেও। অনলাইনের যেকোনো প্ল্যাটফর্মে নারীদের নিয়ে যা কিছুই বলা বা আঁকা হোক না কেন, ছুটে আসবে ট্যাগিং, সাইবার বুলিং আর বিষাক্ত মন্তব্য।

কার্টুন শিল্পী ও শিক্ষক সামিয়া সাবিহা রিনি সে কথাই জানালেন। বললেন, ‘কোনো কাজে নারীর বিষয়ে কিছু বলতে গেলেই একটা ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়। কোনো মাতৃমূর্তি নিয়ে কাজ করলে, সেটাও মানুষ ভালো চোখে দেখে না। নারীর জন্য যখন প্রতিবাদের কিংবা অধিকার আদায়ের ভাষা হিসেবে নারীর অবয়ব আঁকা হয়, সেখানেও বাজে মন্তব্যের সম্মুখীন হতে হয়। নারীকে নিয়ে আঁকা কার্টুন সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে দেখবেন, কত কটূক্তিতে ভরে যায় মন্তব্যের ঘরগুলো। এই ধরনের মানসিকতাটাও তো পরিবর্তন করতে হবে।’
এসব কথাবার্তা যখন চলছে, তখনই চোখে পড়ল একটি কাঠের চাকা। চাকা ঘোরালেই ফুটে উঠছিল নারীর জীবনের গল্প। কীভাবে তার জীবন বদলায়, কীভাবে বিয়ের পর সে একটি পরিবারের ভার বহন করতে করতে নিজেকে একসময় হারিয়ে ফেলে। নারীর কাঁধ থেকে দায়িত্বের বোঝা তখনই নেমে যায়, যখন সে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে। সাবিনা এসব দেখতে দেখতে আনমনা হয়ে বললেন, ‘আমরা ভেবে কথা বলি না। একটা কথা কীভাবে বলব, সেটাও ভাবি না। নারীদের কাজকে অ্যাপ্রিশিয়েট করি না। এটি ভেতর থেকে একজন মানুষকে ভেঙে দেয়।’

প্রদর্শনীর শেষ প্রান্তে ছিল একেবারে ভিন্ন এক চিঠি। যার বাক্যগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল সুই-সুতার মধ্য দিয়ে। নকশিকাঁথার ফোঁড়ে মেয়ে তার মাকে লিখেছিল নিজের মনের কথাগুলো। এই শিল্পকর্মের শিল্পীর নাম নুসরাত লাক্সুমী। তিনি বলেন, ‘আমার মা গান শিখতেন। বিয়ের পর ছেড়ে দিয়েছেন। আমি যখন আম্মুকে কল্পনা করি, ভাবি তিনি লেখাপড়া করছেন, নিজের মতো করে চলছেন, গান করছেন। আমি আমার মায়ের লড়াই দেখেছি। কিন্তু অনেক সময় তাঁর কথা আমাকে আঘাত করে। আমি জানি, তিনি কেন সেসব বলছেন। আমি সেই কথাগুলোই এই চিঠিতে লিখেছি।’ নুসরাতের অন্য একটি কাজে ফুটে উঠেছে সুখী পরিবারের চিত্র। যেখানে পরিবারের মেয়েরা নিজেদের মতো করে সময় কাটাচ্ছে, ঘুরছে, গল্প করছে।

একসময় সংবাদপত্রের পাতায় কার্টুন ছিল স্বতন্ত্র এক সংবাদ। সমাজ বা দেশের বহু বিচিত্র অসুখের লক্ষণ ফুটে উঠত কয়েকটি রেখায়। কিন্তু ডিজিটাল যুগে প্রবেশের পর একসময় যেন হারিয়ে যেতে বসেছিল সেই ধারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান ধরনের কনটেন্টের ভিড়ে, কার্টুন যেন হারিয়ে গিয়েছিল নিজের জায়গা থেকে। তবে একেবারেই হারিয়ে যায়নি। কার্টুন কোনো সাময়িক শিল্প নয়, বরং এটি সমাজের দর্পণ। অনলাইনে আক্রমণ যতই আসুক, কার্টুনিস্টরা তাঁদের তুলি থামাবেন না। নারীর প্রতি সংবেদনশীলতা এবং সমাজের অসংগতি দূর করার লড়াইয়ে কার্টুন অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আর সে জন্যই ‘কার্টুন ফর ইকুয়ালিটি-প্রিভেন্ট ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট ওমেন অ্যান্ড গার্লস’-এর মতো প্রদর্শনীর আয়োজন হওয়া উচিত নিয়মিত বিরতিতে। এই প্রদর্শনীর পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল কানাডা সরকার। আয়োজনে ছিল ইউএন ওমেন বাংলাদেশ, বহ্নিশিখা ও মায়ের দোয়া স্টুডিও।

প্রতিবাদের অনেক ভাষার অন্যতম কার্টুন। এটি এক অনন্য প্রকাশভঙ্গি। শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এটি এমন এক ভাষা, যা চোখে দেখা তো যায়-ই, করা যায় অনুভবও। আমাদের দেশের নারী কার্টুনিস্টরা নারীদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন বৈষম্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে এই শিল্পমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন।
‘দেখছেন কেমন জামা পরেছে’, ‘বাচ্চা নিয়ে চাকরি করবে কীভাবে’, ‘আপনার স্বামীর তো অনেক টাকা, আপনি চাকরি করে কী করবেন’...নারীদের উদ্দেশে এমন কথা হরহামেশা বলা হয় আমাদের দেশে। জন্মের পর একটি মেয়েশিশু গোলাপি জামা পরবে কি না, সেটি নির্ধারণ করা থেকে শুরু করে সেই শিশু বড় হয়ে কেমন পোশাক পরবে, কোথায় যাবে, কবে বিয়ে করবে, সন্তান নেবে কি না, চাকরি করবে কি না—এসব আমাদের সমাজ ঠিক করে দেয়। এবং এখনো। তার ওপর আছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা।
এসব ঘটনার প্রতিবাদ হতে থাকে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন মাধ্যমে। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তেমনই এক আয়োজন ছিল। সেখানে গ্যালারিজুড়ে ছিল নারীদের অস্তিত্ব; তাদের অধিকার এবং তাদের ওপর হওয়া সহিংসতা ও নির্যাতনের চিত্র। কেউ সেসব ঘটনা তুলে ধরেছিলেন রংতুলিতে, কেউবা এঁকেছেন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। গ্যালারি ঘুরে নিত্য ঘটনাগুলোই বারবার চোখের সামনে ফুটে উঠছিল; গণপরিবহনে নারীদের হেনস্তা, তাদের ভিডিও ধারণ, পোশাক নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা আর কটূক্তি। একটি ছবিতে ফুটে উঠেছে এক নারী নভোচারী চাঁদে গিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর পেছনে পৃথিবী থেকে কিছু মুখ উঠে এসেছে, যারা বলছে, ‘ওড়না কোথায়?’ হ্যাঁ, আমাদের সমাজে এটাই এক চরম বাস্তবতা হয়ে ফুটে উঠেছে। গণপরিবহনে একজন বোরকা পরা নারী যেভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছে, জিনস টপ কিংবা কামিজ পরা নারীও সেভাবেই হেনস্তার শিকার হচ্ছে।
কার্টুন চিত্রগুলো একজন নারীর জীবনের খুব অন্ধকার বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তুলে ধরছিল। প্রদর্শনীর শেষ দিন গ্যালারি ঘুরে দেখতে দেখতে কথা হলো সৈয়দা আফরিনের সঙ্গে। তিনি এক দর্শনার্থী। বললেন, ‘অনেক সময় নিয়ে সব কাজ দেখলাম। এই চারদেয়ালের প্রতিটি ছবিই যেন একজন নারীর জীবনের বাস্তবতা। বাসে, রাস্তায়, ঘরে আমরা আসলে এভাবেই বেঁচে থাকি সমাজে। এখানে যত ছবি আছে, সেগুলোর মধ্যে ৮০ ভাগ ছবির কর্মকাণ্ড একটা মেয়ে তার জীবনে পেয়েছে।’
বাস্তবতা তো আর বাস্তবেই শেষ হয় না। পিছু ছাড়ে না অনলাইনের বিশাল দুনিয়াতেও। অনলাইনের যেকোনো প্ল্যাটফর্মে নারীদের নিয়ে যা কিছুই বলা বা আঁকা হোক না কেন, ছুটে আসবে ট্যাগিং, সাইবার বুলিং আর বিষাক্ত মন্তব্য।

কার্টুন শিল্পী ও শিক্ষক সামিয়া সাবিহা রিনি সে কথাই জানালেন। বললেন, ‘কোনো কাজে নারীর বিষয়ে কিছু বলতে গেলেই একটা ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়। কোনো মাতৃমূর্তি নিয়ে কাজ করলে, সেটাও মানুষ ভালো চোখে দেখে না। নারীর জন্য যখন প্রতিবাদের কিংবা অধিকার আদায়ের ভাষা হিসেবে নারীর অবয়ব আঁকা হয়, সেখানেও বাজে মন্তব্যের সম্মুখীন হতে হয়। নারীকে নিয়ে আঁকা কার্টুন সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে দেখবেন, কত কটূক্তিতে ভরে যায় মন্তব্যের ঘরগুলো। এই ধরনের মানসিকতাটাও তো পরিবর্তন করতে হবে।’
এসব কথাবার্তা যখন চলছে, তখনই চোখে পড়ল একটি কাঠের চাকা। চাকা ঘোরালেই ফুটে উঠছিল নারীর জীবনের গল্প। কীভাবে তার জীবন বদলায়, কীভাবে বিয়ের পর সে একটি পরিবারের ভার বহন করতে করতে নিজেকে একসময় হারিয়ে ফেলে। নারীর কাঁধ থেকে দায়িত্বের বোঝা তখনই নেমে যায়, যখন সে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে। সাবিনা এসব দেখতে দেখতে আনমনা হয়ে বললেন, ‘আমরা ভেবে কথা বলি না। একটা কথা কীভাবে বলব, সেটাও ভাবি না। নারীদের কাজকে অ্যাপ্রিশিয়েট করি না। এটি ভেতর থেকে একজন মানুষকে ভেঙে দেয়।’

প্রদর্শনীর শেষ প্রান্তে ছিল একেবারে ভিন্ন এক চিঠি। যার বাক্যগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল সুই-সুতার মধ্য দিয়ে। নকশিকাঁথার ফোঁড়ে মেয়ে তার মাকে লিখেছিল নিজের মনের কথাগুলো। এই শিল্পকর্মের শিল্পীর নাম নুসরাত লাক্সুমী। তিনি বলেন, ‘আমার মা গান শিখতেন। বিয়ের পর ছেড়ে দিয়েছেন। আমি যখন আম্মুকে কল্পনা করি, ভাবি তিনি লেখাপড়া করছেন, নিজের মতো করে চলছেন, গান করছেন। আমি আমার মায়ের লড়াই দেখেছি। কিন্তু অনেক সময় তাঁর কথা আমাকে আঘাত করে। আমি জানি, তিনি কেন সেসব বলছেন। আমি সেই কথাগুলোই এই চিঠিতে লিখেছি।’ নুসরাতের অন্য একটি কাজে ফুটে উঠেছে সুখী পরিবারের চিত্র। যেখানে পরিবারের মেয়েরা নিজেদের মতো করে সময় কাটাচ্ছে, ঘুরছে, গল্প করছে।

একসময় সংবাদপত্রের পাতায় কার্টুন ছিল স্বতন্ত্র এক সংবাদ। সমাজ বা দেশের বহু বিচিত্র অসুখের লক্ষণ ফুটে উঠত কয়েকটি রেখায়। কিন্তু ডিজিটাল যুগে প্রবেশের পর একসময় যেন হারিয়ে যেতে বসেছিল সেই ধারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান ধরনের কনটেন্টের ভিড়ে, কার্টুন যেন হারিয়ে গিয়েছিল নিজের জায়গা থেকে। তবে একেবারেই হারিয়ে যায়নি। কার্টুন কোনো সাময়িক শিল্প নয়, বরং এটি সমাজের দর্পণ। অনলাইনে আক্রমণ যতই আসুক, কার্টুনিস্টরা তাঁদের তুলি থামাবেন না। নারীর প্রতি সংবেদনশীলতা এবং সমাজের অসংগতি দূর করার লড়াইয়ে কার্টুন অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আর সে জন্যই ‘কার্টুন ফর ইকুয়ালিটি-প্রিভেন্ট ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট ওমেন অ্যান্ড গার্লস’-এর মতো প্রদর্শনীর আয়োজন হওয়া উচিত নিয়মিত বিরতিতে। এই প্রদর্শনীর পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল কানাডা সরকার। আয়োজনে ছিল ইউএন ওমেন বাংলাদেশ, বহ্নিশিখা ও মায়ের দোয়া স্টুডিও।

নিজেদের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য নারীদের বিভিন্ন অদ্ভুত ধরনের কৌশল অবলম্বন করার নজির রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবশ্য সেই সৌন্দর্যের সংজ্ঞায়ন করেছে পুরুষ। কাম, আনুগত্য ও আধিপত্যের প্রতীক হয়ে রয়েছে এসব সৌন্দর্যের ধারণা।
১৩ এপ্রিল ২০২৪
নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন কানন জেনেট গোমেজ। বাহারি নকশা করা সেই পোশাকগুলো দেখে অনেকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন তাঁকে। শখের বশে একসময় তিনি প্রথমে সবার জন্য পোশাক তৈরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পান।
১ দিন আগে
রাস্তায় নারীদের হয়রানি করার ঘটনা পৃথিবীতে এতটাই স্বাভাবিক যে তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানও বাদ যাচ্ছেন না! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। হয়রানির এই ঘটনা ঘটেছে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে। অবশ্য তাতে টনক নড়েছে পুরো দেশের।
১ দিন আগে
তাঁকে বলা হয় মাদার অব আমেরিকান মডার্নিজম। তাঁর কর্মজীবন বিস্তৃত ছিল সাত দশক ধরে। তিনি জর্জিয়া টোটো ও’কিফ। জীবনের একপর্যায়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকলেও তিনি তাঁর শেষ সহায়তাবিহীন তেলচিত্রটি আঁকেন ১৯৭২ সালে।
১ দিন আগেমুহাম্মদ শফিকুর রহমান

নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন কানন জেনেট গোমেজ। বাহারি নকশা করা সেই পোশাকগুলো দেখে অনেকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন তাঁকে। শখের বশে একসময় তিনি প্রথমে সবার জন্য পোশাক তৈরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পান।
এই উৎসাহ থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে তিনি খুলে ফেলেন নিজের ফেসবুক পেজ জেনেট ক্রিয়েশন। সেখান থেকে শুরু তাঁর পেশাদার উদ্যোক্তা-জীবনের যাত্রা। বর্তমানে তাঁর তৈরি পোশাক শুধু দেশের বাজারেই নয়, একাধিক দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
বেড়ে ওঠা
জেনেটের শৈশব কেটেছে গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জে। তিনি এসএসসি সম্পন্ন করেন মিশনারিজ স্কুল সেন্ট মেরিস থেকে, তারপর ঢাকার হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্মে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। অনার্সে পড়াশোনার পাশাপাশি বাফা থেকে চারুকলার ওপর ৫ বছরের কোর্স সম্পন্ন করেন জেনেট। ২০১১ সালে নারী অধিদপ্তর থেকে সরকারিভাবে ব্লক-বাটিকের ওপর তিন মাসের প্রশিক্ষণ নেন তিনি। স্বামী, পুত্রসন্তান ও শাশুড়িকে নিয়ে জেনেটের পরিবার। বসবাস করেন ঢাকার পূর্ব রাজাবাজার এলাকায়।
শুরু যেভাবে
মাত্র ৭ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে শাড়ি ও পোশাক তৈরির কাজ শুরু জেনেটের। তাঁর প্রথম অর্ডার ছিল একটি হ্যান্ডপেইন্টেড শাড়ি। তারপর অর্ডার আসতে শুরু করে। এভাবেই ধীরে ধীরে জেনেটের পরিশ্রম ও সৃজনশীলতায় গড়ে ওঠে জেনেট ক্রিয়েশন। বর্তমানে তাঁর সঙ্গে যুক্ত আছেন ছয়জন কর্মী।
পোশাকের ব্যবসা কেন
পোশাক মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি অংশ। বছরব্যাপী এর চাহিদা বিদ্যমান থাকে। পোশাকের নকশার প্রতি ছোটবেলা থেকে একধরনের ভালোবাসা ছিল জেনেটের। ব্যবসা শুরুর আগে নিজের পোশাকের ডিজাইন তিনি নিজেই করতেন।
আর সে কারণেই পোশাকের ব্যবসা শুরু করেন। শাড়ি পরা বেশ পছন্দ জেনেটের। সে কারণে শাড়ি নিয়েই তাঁর কাজ বেশি। এর পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে নকশা করা টিপ ও চুড়িও তৈরি করেন তিনি।

বিভিন্ন পণ্যের সমাহার
সুতি, সিল্ক, টাইডাই, হ্যান্ডপেইন্ট, ব্লকপ্রিন্ট ও এমব্রয়ডারি করা পোশাক পাওয়া যায় জেনেট ক্রিয়েশনে। পাশাপাশি রয়েছে শাড়ি, ব্লাউজ, টু-পিস, শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি শার্ট, পাঞ্জাবিসহ নানা কিছু।
জেনেট গোমেজের সিগনেচার পণ্য হলো টাইডাই শাড়ি। তবে শৌখিন নারীদের পোশাক বা শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পরার টিপও তৈরি করেন তিনি। তাঁর এই সূক্ষ্ম রুচি এবং নান্দনিক চিন্তাভাবনাই জেনেট ক্রিয়েশনকে করেছে অনন্য ও জনপ্রিয়।
দেশের বাইরে
আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, ফ্রান্স ও কানাডায় বেশি যায় জেনেটের পণ্য। প্রবাসীরা দেশে এসে ফিরে যাওয়ার সময় তাঁর পণ্য সঙ্গে নিয়ে যান। আবার কুরিয়ারের মাধ্যমেও ক্রেতাদের পণ্য পাঠানো হয়। গতানুগতিক ধারার বাইরের নকশা এবং গুণগত মান ঠিক রাখেন তিনি। এ কারণে দেশ-বিদেশে তাঁর পোশাকের চাহিদা বেড়েছে।

লাভের হিসাব
জেনেট বর্তমানে প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করেন। লাভের কিছু টাকা তিনি আবার ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। সংসারের কাজ সামলে ব্যবসার কাজ চালাতে হয় তাঁকে। তাঁর পণ্যের ফটোশুটে নিজেই মডেল হন জেনেট। ফটোগ্রাফারের কাজ করেন তাঁর স্বামী। ব্যবসাটা পুরো অনলাইনভিত্তিক। বছরে বেশ কিছু মেলায় তিনি অংশ নেন বলে জানান।
নতুনদের জন্য
নতুনদের জন্য জেনেটের পরামর্শ হলো, ব্যবসা শুরু করতে চাইলে অন্য কারও অনুকরণ বা অনুসরণ না করে যে কাজ করতে ভালোবাসেন, ভালো পারেন,
সেই বিষয়ে বাণিজ্যিকভাবে শুরু
করতে পারেন এবং সেই বিষয়ের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা দরকার।
ভবিষ্যতের ভাবনা
ভবিষ্যতে ছোট আকারে একেবারে নিজের মতো করে একটি স্টুডিও কিংবা শপ তৈরি করার ইচ্ছা জেনেটের; যাতে ক্রেতারা সরাসরি স্পর্শ করে পণ্য কেনার সুযোগ পান।

নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন কানন জেনেট গোমেজ। বাহারি নকশা করা সেই পোশাকগুলো দেখে অনেকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন তাঁকে। শখের বশে একসময় তিনি প্রথমে সবার জন্য পোশাক তৈরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পান।
এই উৎসাহ থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে তিনি খুলে ফেলেন নিজের ফেসবুক পেজ জেনেট ক্রিয়েশন। সেখান থেকে শুরু তাঁর পেশাদার উদ্যোক্তা-জীবনের যাত্রা। বর্তমানে তাঁর তৈরি পোশাক শুধু দেশের বাজারেই নয়, একাধিক দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
বেড়ে ওঠা
জেনেটের শৈশব কেটেছে গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জে। তিনি এসএসসি সম্পন্ন করেন মিশনারিজ স্কুল সেন্ট মেরিস থেকে, তারপর ঢাকার হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্মে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। অনার্সে পড়াশোনার পাশাপাশি বাফা থেকে চারুকলার ওপর ৫ বছরের কোর্স সম্পন্ন করেন জেনেট। ২০১১ সালে নারী অধিদপ্তর থেকে সরকারিভাবে ব্লক-বাটিকের ওপর তিন মাসের প্রশিক্ষণ নেন তিনি। স্বামী, পুত্রসন্তান ও শাশুড়িকে নিয়ে জেনেটের পরিবার। বসবাস করেন ঢাকার পূর্ব রাজাবাজার এলাকায়।
শুরু যেভাবে
মাত্র ৭ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে শাড়ি ও পোশাক তৈরির কাজ শুরু জেনেটের। তাঁর প্রথম অর্ডার ছিল একটি হ্যান্ডপেইন্টেড শাড়ি। তারপর অর্ডার আসতে শুরু করে। এভাবেই ধীরে ধীরে জেনেটের পরিশ্রম ও সৃজনশীলতায় গড়ে ওঠে জেনেট ক্রিয়েশন। বর্তমানে তাঁর সঙ্গে যুক্ত আছেন ছয়জন কর্মী।
পোশাকের ব্যবসা কেন
পোশাক মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি অংশ। বছরব্যাপী এর চাহিদা বিদ্যমান থাকে। পোশাকের নকশার প্রতি ছোটবেলা থেকে একধরনের ভালোবাসা ছিল জেনেটের। ব্যবসা শুরুর আগে নিজের পোশাকের ডিজাইন তিনি নিজেই করতেন।
আর সে কারণেই পোশাকের ব্যবসা শুরু করেন। শাড়ি পরা বেশ পছন্দ জেনেটের। সে কারণে শাড়ি নিয়েই তাঁর কাজ বেশি। এর পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে নকশা করা টিপ ও চুড়িও তৈরি করেন তিনি।

বিভিন্ন পণ্যের সমাহার
সুতি, সিল্ক, টাইডাই, হ্যান্ডপেইন্ট, ব্লকপ্রিন্ট ও এমব্রয়ডারি করা পোশাক পাওয়া যায় জেনেট ক্রিয়েশনে। পাশাপাশি রয়েছে শাড়ি, ব্লাউজ, টু-পিস, শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি শার্ট, পাঞ্জাবিসহ নানা কিছু।
জেনেট গোমেজের সিগনেচার পণ্য হলো টাইডাই শাড়ি। তবে শৌখিন নারীদের পোশাক বা শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পরার টিপও তৈরি করেন তিনি। তাঁর এই সূক্ষ্ম রুচি এবং নান্দনিক চিন্তাভাবনাই জেনেট ক্রিয়েশনকে করেছে অনন্য ও জনপ্রিয়।
দেশের বাইরে
আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, ফ্রান্স ও কানাডায় বেশি যায় জেনেটের পণ্য। প্রবাসীরা দেশে এসে ফিরে যাওয়ার সময় তাঁর পণ্য সঙ্গে নিয়ে যান। আবার কুরিয়ারের মাধ্যমেও ক্রেতাদের পণ্য পাঠানো হয়। গতানুগতিক ধারার বাইরের নকশা এবং গুণগত মান ঠিক রাখেন তিনি। এ কারণে দেশ-বিদেশে তাঁর পোশাকের চাহিদা বেড়েছে।

লাভের হিসাব
জেনেট বর্তমানে প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করেন। লাভের কিছু টাকা তিনি আবার ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। সংসারের কাজ সামলে ব্যবসার কাজ চালাতে হয় তাঁকে। তাঁর পণ্যের ফটোশুটে নিজেই মডেল হন জেনেট। ফটোগ্রাফারের কাজ করেন তাঁর স্বামী। ব্যবসাটা পুরো অনলাইনভিত্তিক। বছরে বেশ কিছু মেলায় তিনি অংশ নেন বলে জানান।
নতুনদের জন্য
নতুনদের জন্য জেনেটের পরামর্শ হলো, ব্যবসা শুরু করতে চাইলে অন্য কারও অনুকরণ বা অনুসরণ না করে যে কাজ করতে ভালোবাসেন, ভালো পারেন,
সেই বিষয়ে বাণিজ্যিকভাবে শুরু
করতে পারেন এবং সেই বিষয়ের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা দরকার।
ভবিষ্যতের ভাবনা
ভবিষ্যতে ছোট আকারে একেবারে নিজের মতো করে একটি স্টুডিও কিংবা শপ তৈরি করার ইচ্ছা জেনেটের; যাতে ক্রেতারা সরাসরি স্পর্শ করে পণ্য কেনার সুযোগ পান।

নিজেদের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য নারীদের বিভিন্ন অদ্ভুত ধরনের কৌশল অবলম্বন করার নজির রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবশ্য সেই সৌন্দর্যের সংজ্ঞায়ন করেছে পুরুষ। কাম, আনুগত্য ও আধিপত্যের প্রতীক হয়ে রয়েছে এসব সৌন্দর্যের ধারণা।
১৩ এপ্রিল ২০২৪
প্রতিবাদের অনেক ভাষার অন্যতম কার্টুন। এটি এক অনন্য প্রকাশভঙ্গি। শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এটি এমন এক ভাষা, যা চোখে দেখা তো যায়-ই, করা যায় অনুভবও। আমাদের দেশের নারী কার্টুনিস্টরা নারীদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন বৈষম্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে এই শিল্পমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন।
১ দিন আগে
রাস্তায় নারীদের হয়রানি করার ঘটনা পৃথিবীতে এতটাই স্বাভাবিক যে তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানও বাদ যাচ্ছেন না! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। হয়রানির এই ঘটনা ঘটেছে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে। অবশ্য তাতে টনক নড়েছে পুরো দেশের।
১ দিন আগে
তাঁকে বলা হয় মাদার অব আমেরিকান মডার্নিজম। তাঁর কর্মজীবন বিস্তৃত ছিল সাত দশক ধরে। তিনি জর্জিয়া টোটো ও’কিফ। জীবনের একপর্যায়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকলেও তিনি তাঁর শেষ সহায়তাবিহীন তেলচিত্রটি আঁকেন ১৯৭২ সালে।
১ দিন আগেফিচার ডেস্ক

রাস্তায় নারীদের হয়রানি করার ঘটনা পৃথিবীতে এতটাই স্বাভাবিক যে তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানও বাদ যাচ্ছেন না! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। হয়রানির এই ঘটনা ঘটেছে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে। অবশ্য তাতে টনক নড়েছে পুরো দেশের। তাই এবার প্রেসিডেন্ট তাঁর দেশের যৌন হয়রানিবিরোধী আইনগুলো খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। ডেটা প্ল্যাটফর্ম স্ট্যাটিস্টার তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে মেক্সিকোতে লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতার কারণে ৭৯৭ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে!
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি ৬৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্টের কাঁধে হাত রেখে তাঁকে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করছেন। দেখা যায়, শেইনবাউম লোকটির হাত সরিয়ে দিচ্ছেন। নিরাপত্তাকর্মীরা উপস্থিত না থাকায় অন্য একজন কর্মী এসে লোকটিকে সরিয়ে দেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তাঁর সঙ্গে হওয়া এ ঘটনায় দেশটিতে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হচ্ছে।
মেক্সিকো দীর্ঘদিন ধরে যৌন হয়রানি ও নারী হত্যার (ফেমিসাইড) সংকটে জর্জরিত। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এ ঘটনা দেশটির যৌন হয়রানিবিরোধী আইনগুলো কতটা কার্যকর, সেই প্রশ্নও তুলেছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, মেক্সিকোর ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রায় ৭০ শতাংশ মেয়ে ও নারী জীবনে অন্তত একবার যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন।
মেক্সিকোর নারীবিষয়ক সেক্রেটারি সিতলাল্লি হার্নান্দেজ বলেছেন, ‘এ বছর এ পর্যন্ত ২৫ হাজারের বেশি যৌন হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।’ তবে সমস্যার মাত্রা পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি বলে মনে করা হয়। কারণ, অন্য অনেক দেশের মতো মেক্সিকোতেও নারী ভুক্তভোগীকেই সাধারণভাবে দোষারোপ করা হয় কিংবা তাদের অভিযোগ গুরুত্বসহকারে নেওয়া হয় না। এই ভয়ে অভিযোগ করতে দ্বিধা থাকে ভুক্তভোগীদের।
এদিকে নারী হত্যা মেক্সিকোর রাজধানীসহ পুরো দেশে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে যৌন হয়রানি সব রাজ্যে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় না। দেশটির ফেডারেল পেনাল কোড অনুসারে, যৌন হয়রানির সংজ্ঞা হলো, এমন ব্যক্তি যে অশ্লীল উদ্দেশ্যে, বারবার যেকোনো লিঙ্গের একজন ব্যক্তিকে হয়রানি করে। মেক্সিকো সিটিসহ মেক্সিকোর ৩১টি রাজ্যের মধ্যে শুধু ১৬টিতে যৌন হয়রানিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড জিওগ্রাফি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের কমপক্ষে ৭০ দশমিক ১ শতাংশ মেক্সিকান নারী তাঁদের জীবনকালে অন্তত একবার কোনো না কোনো ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন। সেটা হতে পারে যৌন, মনস্তাত্ত্বিক, অর্থনৈতিক কিংবা শারীরিক সহিংসতা। ২০২৩ সালে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক কমিশন জানিয়েছে, মেক্সিকোতে প্রত্যেক ১ লাখ নারীর মধ্যে ১ দশমিক ৩টি নারী হত্যার ঘটনা ঘটে। এর অর্থ হলো, ৮৫২ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। আর দিনের হিসাব করলে প্রতিদিন দুজনের বেশি নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
নারী হত্যার উচ্চ হারে লাতিন আমেরিকার দেশ হিসেবে মেক্সিকো একা নয়। সেই তালিকায় আছে ব্রাজিল, ডমিনিকান রিপাবলিক ও হন্ডুরাস।
সূত্র: আল জাজিরা, ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর

রাস্তায় নারীদের হয়রানি করার ঘটনা পৃথিবীতে এতটাই স্বাভাবিক যে তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানও বাদ যাচ্ছেন না! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। হয়রানির এই ঘটনা ঘটেছে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে। অবশ্য তাতে টনক নড়েছে পুরো দেশের। তাই এবার প্রেসিডেন্ট তাঁর দেশের যৌন হয়রানিবিরোধী আইনগুলো খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। ডেটা প্ল্যাটফর্ম স্ট্যাটিস্টার তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে মেক্সিকোতে লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতার কারণে ৭৯৭ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে!
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি ৬৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্টের কাঁধে হাত রেখে তাঁকে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করছেন। দেখা যায়, শেইনবাউম লোকটির হাত সরিয়ে দিচ্ছেন। নিরাপত্তাকর্মীরা উপস্থিত না থাকায় অন্য একজন কর্মী এসে লোকটিকে সরিয়ে দেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তাঁর সঙ্গে হওয়া এ ঘটনায় দেশটিতে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হচ্ছে।
মেক্সিকো দীর্ঘদিন ধরে যৌন হয়রানি ও নারী হত্যার (ফেমিসাইড) সংকটে জর্জরিত। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এ ঘটনা দেশটির যৌন হয়রানিবিরোধী আইনগুলো কতটা কার্যকর, সেই প্রশ্নও তুলেছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, মেক্সিকোর ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রায় ৭০ শতাংশ মেয়ে ও নারী জীবনে অন্তত একবার যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন।
মেক্সিকোর নারীবিষয়ক সেক্রেটারি সিতলাল্লি হার্নান্দেজ বলেছেন, ‘এ বছর এ পর্যন্ত ২৫ হাজারের বেশি যৌন হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।’ তবে সমস্যার মাত্রা পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি বলে মনে করা হয়। কারণ, অন্য অনেক দেশের মতো মেক্সিকোতেও নারী ভুক্তভোগীকেই সাধারণভাবে দোষারোপ করা হয় কিংবা তাদের অভিযোগ গুরুত্বসহকারে নেওয়া হয় না। এই ভয়ে অভিযোগ করতে দ্বিধা থাকে ভুক্তভোগীদের।
এদিকে নারী হত্যা মেক্সিকোর রাজধানীসহ পুরো দেশে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে যৌন হয়রানি সব রাজ্যে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় না। দেশটির ফেডারেল পেনাল কোড অনুসারে, যৌন হয়রানির সংজ্ঞা হলো, এমন ব্যক্তি যে অশ্লীল উদ্দেশ্যে, বারবার যেকোনো লিঙ্গের একজন ব্যক্তিকে হয়রানি করে। মেক্সিকো সিটিসহ মেক্সিকোর ৩১টি রাজ্যের মধ্যে শুধু ১৬টিতে যৌন হয়রানিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড জিওগ্রাফি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের কমপক্ষে ৭০ দশমিক ১ শতাংশ মেক্সিকান নারী তাঁদের জীবনকালে অন্তত একবার কোনো না কোনো ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন। সেটা হতে পারে যৌন, মনস্তাত্ত্বিক, অর্থনৈতিক কিংবা শারীরিক সহিংসতা। ২০২৩ সালে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক কমিশন জানিয়েছে, মেক্সিকোতে প্রত্যেক ১ লাখ নারীর মধ্যে ১ দশমিক ৩টি নারী হত্যার ঘটনা ঘটে। এর অর্থ হলো, ৮৫২ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। আর দিনের হিসাব করলে প্রতিদিন দুজনের বেশি নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
নারী হত্যার উচ্চ হারে লাতিন আমেরিকার দেশ হিসেবে মেক্সিকো একা নয়। সেই তালিকায় আছে ব্রাজিল, ডমিনিকান রিপাবলিক ও হন্ডুরাস।
সূত্র: আল জাজিরা, ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর

নিজেদের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য নারীদের বিভিন্ন অদ্ভুত ধরনের কৌশল অবলম্বন করার নজির রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবশ্য সেই সৌন্দর্যের সংজ্ঞায়ন করেছে পুরুষ। কাম, আনুগত্য ও আধিপত্যের প্রতীক হয়ে রয়েছে এসব সৌন্দর্যের ধারণা।
১৩ এপ্রিল ২০২৪
প্রতিবাদের অনেক ভাষার অন্যতম কার্টুন। এটি এক অনন্য প্রকাশভঙ্গি। শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এটি এমন এক ভাষা, যা চোখে দেখা তো যায়-ই, করা যায় অনুভবও। আমাদের দেশের নারী কার্টুনিস্টরা নারীদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন বৈষম্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে এই শিল্পমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন।
১ দিন আগে
নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন কানন জেনেট গোমেজ। বাহারি নকশা করা সেই পোশাকগুলো দেখে অনেকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন তাঁকে। শখের বশে একসময় তিনি প্রথমে সবার জন্য পোশাক তৈরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পান।
১ দিন আগে
তাঁকে বলা হয় মাদার অব আমেরিকান মডার্নিজম। তাঁর কর্মজীবন বিস্তৃত ছিল সাত দশক ধরে। তিনি জর্জিয়া টোটো ও’কিফ। জীবনের একপর্যায়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকলেও তিনি তাঁর শেষ সহায়তাবিহীন তেলচিত্রটি আঁকেন ১৯৭২ সালে।
১ দিন আগেফিচার ডেস্ক

তাঁকে বলা হয় মাদার অব আমেরিকান মডার্নিজম। তাঁর কর্মজীবন বিস্তৃত ছিল সাত দশক ধরে। তিনি জর্জিয়া টোটো ও’কিফ। জীবনের একপর্যায়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকলেও তিনি তাঁর শেষ সহায়তাবিহীন তেলচিত্রটি আঁকেন ১৯৭২ সালে। ৯০ বছর বয়সে তিনি মন্তব্য করেন, ‘আমি যা আঁকতে চাই, তা দেখতে পাই। যে জিনিসটি আমাকে সৃষ্টি করতে উৎসাহিত করে, তা এখনো আছে।’
ও’কিফ প্রকৃতিকেন্দ্রিক চিত্রকর্ম, বিশেষত ফুল ও মরুভূমি অনুপ্রাণিত ল্যান্ডস্কেপগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর এই চিত্রকর্মগুলো প্রধানত তাঁর
বাড়ি এবং পরিবেশ থেকে অনুপ্রাণিত ছিল। ১৯১৬ সালে শিল্প ব্যবসায়ী ও ফটোগ্রাফার আলফ্রেড স্টিগ্লিটজ ও’কিফ চিত্রকর্মের একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। স্টিগ্লিটজের অনুরোধে ১৯১৮ সালে তিনি নিউইয়র্কে চলে আসেন এবং শিল্পী হিসেবে গুরুত্বসহকারে কাজ শুরু করেন। ও’কিফ বিভিন্ন ধরনের বিমূর্ত শিল্প এঁকেছিলেন। সেগুলোর মধ্যে ‘রেড ক্যানা’ শিরোনামের চিত্রকর্ম অন্যতম। তিনি পেরুর পর্বতশৃঙ্গ এবং জাপানের মাউন্ট ফুজির মতো দর্শনীয় স্থানগুলোর ছবি আঁকেন ও স্কেচ করেন।
ও’কিফের ১৯৩২ সালের চিত্রকর্ম ‘জিমসন উইড/হোয়াইট ফ্লাওয়ার নাম্বার ওয়ান’ বিক্রি করা হয় ২০১৪ সালে। বিক্রয়মূল্য ছিল ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ ডলার। এটি ছিল সেই সময়ে একজন নারী শিল্পীর আঁকা যেকোনো চিত্রকর্মের সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য। ও’কিফের জন্ম ১৮৮৭ সালের ১৫ নভেম্বর। তিনি মৃত্যুবরণ করেন ১৯৮৬ সালের ৬ মার্চ।

তাঁকে বলা হয় মাদার অব আমেরিকান মডার্নিজম। তাঁর কর্মজীবন বিস্তৃত ছিল সাত দশক ধরে। তিনি জর্জিয়া টোটো ও’কিফ। জীবনের একপর্যায়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকলেও তিনি তাঁর শেষ সহায়তাবিহীন তেলচিত্রটি আঁকেন ১৯৭২ সালে। ৯০ বছর বয়সে তিনি মন্তব্য করেন, ‘আমি যা আঁকতে চাই, তা দেখতে পাই। যে জিনিসটি আমাকে সৃষ্টি করতে উৎসাহিত করে, তা এখনো আছে।’
ও’কিফ প্রকৃতিকেন্দ্রিক চিত্রকর্ম, বিশেষত ফুল ও মরুভূমি অনুপ্রাণিত ল্যান্ডস্কেপগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর এই চিত্রকর্মগুলো প্রধানত তাঁর
বাড়ি এবং পরিবেশ থেকে অনুপ্রাণিত ছিল। ১৯১৬ সালে শিল্প ব্যবসায়ী ও ফটোগ্রাফার আলফ্রেড স্টিগ্লিটজ ও’কিফ চিত্রকর্মের একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। স্টিগ্লিটজের অনুরোধে ১৯১৮ সালে তিনি নিউইয়র্কে চলে আসেন এবং শিল্পী হিসেবে গুরুত্বসহকারে কাজ শুরু করেন। ও’কিফ বিভিন্ন ধরনের বিমূর্ত শিল্প এঁকেছিলেন। সেগুলোর মধ্যে ‘রেড ক্যানা’ শিরোনামের চিত্রকর্ম অন্যতম। তিনি পেরুর পর্বতশৃঙ্গ এবং জাপানের মাউন্ট ফুজির মতো দর্শনীয় স্থানগুলোর ছবি আঁকেন ও স্কেচ করেন।
ও’কিফের ১৯৩২ সালের চিত্রকর্ম ‘জিমসন উইড/হোয়াইট ফ্লাওয়ার নাম্বার ওয়ান’ বিক্রি করা হয় ২০১৪ সালে। বিক্রয়মূল্য ছিল ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ ডলার। এটি ছিল সেই সময়ে একজন নারী শিল্পীর আঁকা যেকোনো চিত্রকর্মের সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য। ও’কিফের জন্ম ১৮৮৭ সালের ১৫ নভেম্বর। তিনি মৃত্যুবরণ করেন ১৯৮৬ সালের ৬ মার্চ।

নিজেদের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য নারীদের বিভিন্ন অদ্ভুত ধরনের কৌশল অবলম্বন করার নজির রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবশ্য সেই সৌন্দর্যের সংজ্ঞায়ন করেছে পুরুষ। কাম, আনুগত্য ও আধিপত্যের প্রতীক হয়ে রয়েছে এসব সৌন্দর্যের ধারণা।
১৩ এপ্রিল ২০২৪
প্রতিবাদের অনেক ভাষার অন্যতম কার্টুন। এটি এক অনন্য প্রকাশভঙ্গি। শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এটি এমন এক ভাষা, যা চোখে দেখা তো যায়-ই, করা যায় অনুভবও। আমাদের দেশের নারী কার্টুনিস্টরা নারীদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন বৈষম্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে এই শিল্পমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন।
১ দিন আগে
নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন কানন জেনেট গোমেজ। বাহারি নকশা করা সেই পোশাকগুলো দেখে অনেকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন তাঁকে। শখের বশে একসময় তিনি প্রথমে সবার জন্য পোশাক তৈরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পান।
১ দিন আগে
রাস্তায় নারীদের হয়রানি করার ঘটনা পৃথিবীতে এতটাই স্বাভাবিক যে তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানও বাদ যাচ্ছেন না! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। হয়রানির এই ঘটনা ঘটেছে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে। অবশ্য তাতে টনক নড়েছে পুরো দেশের।
১ দিন আগে