মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
একটি প্রাক্-প্রাথমিক স্কুলে পড়াতেন তিনি। কিছুদিন একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। ভালোমন্দ মিলিয়ে সুখেই কাটছিল তাঁর দিন। কিন্তু করোনার সময় অনেকের মতো তিনিও খারাপ সময়ের দেখা পান। স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। গ্রামের বাড়ি গিয়ে বসে না থেকে পিঠার ব্যবসা শুরু করেন। এরপর আর তাঁকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সফল এই উদ্যোক্তার নাম কহিনুর তানভীর। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএসএস করেছেন তিনি। তিন সন্তান আর সংসার সামলে সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে কুষ্টিয়া নারী উদ্যোক্তা গ্রুপ থেকে জয়ী পদক পেয়েছেন কহিনুর।
২০২০ সালে মাত্র ২৫০ টাকার হাতে কাটা সেমাই বিক্রি করে কহিনুরের যাত্রা শুরু। এরপর তাঁর পণ্যের সংখ্যা দিন দিন বেড়েছে। কহিনুরের বিক্রীত পণ্যগুলোর অধিকাংশই খাদ্যদ্রব্য। তিনি বিক্রি করেন কুমড়া বড়ি, জবের ছাতু, মিক্সড ছাতু, গমের লাল আটা, আখের ঝোলা গুড়, ঢেঁকিছাঁটা চালের গুঁড়া, বাড়িতে বানানো চাল, মিক্সড বেসন, গমের চাল, নারকেলের নাড়ু, বিভিন্ন ধরনের পিঠা, হাতে কাটা সেমাই, সরিষার তেল।
নারী ব্যবসা করুক, তা যেন অনেকে মানতেই চান না। বিভিন্ন নেতিবাচক কথা শুনতে হয় নারীকে। কহিনুরও এর বাইরে নন। শুরুর দিকে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বিভিন্ন নেতিবাচক কথা শুনেছেন তিনি। বাড়ির বউ পিঠা বিক্রি করে খাবে, এটা অনেকে মেনে নিতে পারেননি। কেউ কেউ যোগাযোগ পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। কহিনুর এসব কথাকে পাত্তা না দিয়ে নিজের মতো কাজ করে গেছেন। কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম সাঁওতা। এই গ্রামেই স্বামী, তিন সন্তান ও শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে থাকেন তিনি। এক ছেলে এবং যমজ মেয়ে তাঁর। তারা স্কুলে পড়ে। তাঁর স্বামী তানভীর মেহেদী কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের প্রভাষক।
অনলাইন, অফলাইন—দুভাবেই পণ্য বিক্রি করেন কহিনুর। তাঁর ফেসবুক পেজের নাম কুহি। কুহি হলো তাঁর ডাকনাম। সে নামেই ২০২০ সালে তিনি পেজ খোলেন ফেসবুকে। পিঠাপুলি আর নানা খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করে কহিনুরের আয় মন্দ নয়। মাসে গড়ে ৭০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেন তিনি। শীতে কুমড়া বড়ির সিজনে কোনো কোনো মাসে বিক্রি ছাড়িয়ে যায় লাখ টাকা। আয়ের টাকায় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ মেটান তিনি। কিছু পুনরায় ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। বাকি যা থাকে, তা দিয়ে নিজের শখ পূরণ করেন।
শুধু বিক্রি নয়, বিক্রির জন্য তৈরি বা সংগ্রহ করা পণ্য ব্যবহৃত হয় তাঁর রান্নাঘরেও। ফলে পণ্যের মানের বেলায় কহিনুর মোটেও আপস করেন না। শুরু থেকে গ্রামে মানসম্মত পণ্য প্রস্তুত ও সরবরাহ করার চেষ্টা করে আসছেন তিনি। ক্রেতা কোনো পণ্য নিয়ে অভিযোগ করলে তিনি পুনরায় সেটি পাঠিয়ে দেন ক্রেতার ঠিকানায়। ক্ষেত্রবিশেষে টাকাও ফেরত দেন।
কহিনুর একা নন। তাঁর সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করেন দুজন। শীতকালে সাহায্যকারীদের সংখ্যা ১০ জন ছাড়িয়ে যায়। কহিনুর জানান, নিজে গ্রামে গ্রামে গিয়ে দেখেশুনে কাঁচামাল সংগ্রহ করেন।
তাঁর অনেক ক্রেতা পণ্যের মান নিয়ে সন্তুষ্ট হয়ে বারবার অর্ডার করেন। রোমেনা ইয়াসমিনের কথাই ধরা যাক। তিনি কহিনুরের পণ্য নিয়ে রিভিউতে লিখেছেন, ‘সরিষার তেল, হাতে কাটা সেমাই, চালের গুঁড়া নিয়েছি। সঙ্গে ফ্রি পেয়েছি লেবু আর কচুশাক। প্রতিটি পণ্যের মান ভালো মনে হয়েছে।’ নাজমা বেগম নামের একজন লিখেছেন, ‘পণ্যগুলো খুবই ভালো। খাঁটি দেশি ভালো জিনিস দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।’ এ রকম অসংখ্য রিভিউর দেখা মিলবে কুহির ফেসবুক পেজের ওয়ালে।
বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য তৈরি তিনি শিখেছেন পরিবার থেকে। ব্যবসা করতে গিয়ে বিভিন্ন পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি, প্যাকেজিং, ব্র্যান্ডিং ইত্যাদি বিষয়ে সহায়তা নিয়েছেন উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স (উই) গ্রুপ থেকে। তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল কুষ্টিয়া নারী উদ্যোক্তা (কুনাউ) ফেসবুক গ্রুপ। বিসিক, দিশা ও কৃষিবিপণি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। বাদ নেই অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রশিক্ষণ কোর্স করাও।
‘কুষ্টিয়া নারী উদ্যোক্তা গ্রুপ থেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রথম যেদিন ‘জয়ী’ পদকে সম্মানিত হয়েছিলাম সেদিনের কথা ভুলবার নয়।’ উদ্যোক্তা জীবনের সবচেয়ে আনন্দের ঘটনা বলতে গিয়ে আপ্লুত হয়ে ওঠেন কহিনুর। ভবিষ্যতে অনেক কিছু করার কথা মাথায় ঘোরে তাঁর। পুঁজি স্বল্পতার জন্য বেশির ভাগ জায়গায় আটকে যান। কিন্তু একজন স্বশিক্ষিত উদ্যমী মানুষকে কি আটকে রাখা যায়? কহিনুর নিশ্চুপ থাকেন। হয়তো তাঁর মাথায় ঘুরছে নতুন কোনো চিন্তা।
একটি প্রাক্-প্রাথমিক স্কুলে পড়াতেন তিনি। কিছুদিন একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। ভালোমন্দ মিলিয়ে সুখেই কাটছিল তাঁর দিন। কিন্তু করোনার সময় অনেকের মতো তিনিও খারাপ সময়ের দেখা পান। স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। গ্রামের বাড়ি গিয়ে বসে না থেকে পিঠার ব্যবসা শুরু করেন। এরপর আর তাঁকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সফল এই উদ্যোক্তার নাম কহিনুর তানভীর। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএসএস করেছেন তিনি। তিন সন্তান আর সংসার সামলে সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে কুষ্টিয়া নারী উদ্যোক্তা গ্রুপ থেকে জয়ী পদক পেয়েছেন কহিনুর।
২০২০ সালে মাত্র ২৫০ টাকার হাতে কাটা সেমাই বিক্রি করে কহিনুরের যাত্রা শুরু। এরপর তাঁর পণ্যের সংখ্যা দিন দিন বেড়েছে। কহিনুরের বিক্রীত পণ্যগুলোর অধিকাংশই খাদ্যদ্রব্য। তিনি বিক্রি করেন কুমড়া বড়ি, জবের ছাতু, মিক্সড ছাতু, গমের লাল আটা, আখের ঝোলা গুড়, ঢেঁকিছাঁটা চালের গুঁড়া, বাড়িতে বানানো চাল, মিক্সড বেসন, গমের চাল, নারকেলের নাড়ু, বিভিন্ন ধরনের পিঠা, হাতে কাটা সেমাই, সরিষার তেল।
নারী ব্যবসা করুক, তা যেন অনেকে মানতেই চান না। বিভিন্ন নেতিবাচক কথা শুনতে হয় নারীকে। কহিনুরও এর বাইরে নন। শুরুর দিকে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বিভিন্ন নেতিবাচক কথা শুনেছেন তিনি। বাড়ির বউ পিঠা বিক্রি করে খাবে, এটা অনেকে মেনে নিতে পারেননি। কেউ কেউ যোগাযোগ পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। কহিনুর এসব কথাকে পাত্তা না দিয়ে নিজের মতো কাজ করে গেছেন। কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম সাঁওতা। এই গ্রামেই স্বামী, তিন সন্তান ও শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে থাকেন তিনি। এক ছেলে এবং যমজ মেয়ে তাঁর। তারা স্কুলে পড়ে। তাঁর স্বামী তানভীর মেহেদী কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের প্রভাষক।
অনলাইন, অফলাইন—দুভাবেই পণ্য বিক্রি করেন কহিনুর। তাঁর ফেসবুক পেজের নাম কুহি। কুহি হলো তাঁর ডাকনাম। সে নামেই ২০২০ সালে তিনি পেজ খোলেন ফেসবুকে। পিঠাপুলি আর নানা খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করে কহিনুরের আয় মন্দ নয়। মাসে গড়ে ৭০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেন তিনি। শীতে কুমড়া বড়ির সিজনে কোনো কোনো মাসে বিক্রি ছাড়িয়ে যায় লাখ টাকা। আয়ের টাকায় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ মেটান তিনি। কিছু পুনরায় ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। বাকি যা থাকে, তা দিয়ে নিজের শখ পূরণ করেন।
শুধু বিক্রি নয়, বিক্রির জন্য তৈরি বা সংগ্রহ করা পণ্য ব্যবহৃত হয় তাঁর রান্নাঘরেও। ফলে পণ্যের মানের বেলায় কহিনুর মোটেও আপস করেন না। শুরু থেকে গ্রামে মানসম্মত পণ্য প্রস্তুত ও সরবরাহ করার চেষ্টা করে আসছেন তিনি। ক্রেতা কোনো পণ্য নিয়ে অভিযোগ করলে তিনি পুনরায় সেটি পাঠিয়ে দেন ক্রেতার ঠিকানায়। ক্ষেত্রবিশেষে টাকাও ফেরত দেন।
কহিনুর একা নন। তাঁর সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করেন দুজন। শীতকালে সাহায্যকারীদের সংখ্যা ১০ জন ছাড়িয়ে যায়। কহিনুর জানান, নিজে গ্রামে গ্রামে গিয়ে দেখেশুনে কাঁচামাল সংগ্রহ করেন।
তাঁর অনেক ক্রেতা পণ্যের মান নিয়ে সন্তুষ্ট হয়ে বারবার অর্ডার করেন। রোমেনা ইয়াসমিনের কথাই ধরা যাক। তিনি কহিনুরের পণ্য নিয়ে রিভিউতে লিখেছেন, ‘সরিষার তেল, হাতে কাটা সেমাই, চালের গুঁড়া নিয়েছি। সঙ্গে ফ্রি পেয়েছি লেবু আর কচুশাক। প্রতিটি পণ্যের মান ভালো মনে হয়েছে।’ নাজমা বেগম নামের একজন লিখেছেন, ‘পণ্যগুলো খুবই ভালো। খাঁটি দেশি ভালো জিনিস দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।’ এ রকম অসংখ্য রিভিউর দেখা মিলবে কুহির ফেসবুক পেজের ওয়ালে।
বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য তৈরি তিনি শিখেছেন পরিবার থেকে। ব্যবসা করতে গিয়ে বিভিন্ন পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি, প্যাকেজিং, ব্র্যান্ডিং ইত্যাদি বিষয়ে সহায়তা নিয়েছেন উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স (উই) গ্রুপ থেকে। তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল কুষ্টিয়া নারী উদ্যোক্তা (কুনাউ) ফেসবুক গ্রুপ। বিসিক, দিশা ও কৃষিবিপণি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। বাদ নেই অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রশিক্ষণ কোর্স করাও।
‘কুষ্টিয়া নারী উদ্যোক্তা গ্রুপ থেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রথম যেদিন ‘জয়ী’ পদকে সম্মানিত হয়েছিলাম সেদিনের কথা ভুলবার নয়।’ উদ্যোক্তা জীবনের সবচেয়ে আনন্দের ঘটনা বলতে গিয়ে আপ্লুত হয়ে ওঠেন কহিনুর। ভবিষ্যতে অনেক কিছু করার কথা মাথায় ঘোরে তাঁর। পুঁজি স্বল্পতার জন্য বেশির ভাগ জায়গায় আটকে যান। কিন্তু একজন স্বশিক্ষিত উদ্যমী মানুষকে কি আটকে রাখা যায়? কহিনুর নিশ্চুপ থাকেন। হয়তো তাঁর মাথায় ঘুরছে নতুন কোনো চিন্তা।
মানুষ স্বপ্নবাজ প্রাণী। যুদ্ধ ও সংঘাতময় পৃথিবীতে ভিটে চ্যুত মানুষও স্বপ্ন দেখে। এই স্বার্থ আর সংঘাতময় পৃথিবীতে মানুষ তার জীবনের চেয়েও বড়। নইলে বেঁচে থাকে কীভাবে! বিশ্ব শরণার্থী দিবসে তেমনি কিছু নারীর গল্প রইল, যাঁরা উদ্বাস্তু জীবনেও স্বপ্ন দেখেছেন জীবনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।
২ দিন আগেকারও কোলে শিশুসন্তান, কেউ অন্তঃসত্ত্বা, কারও হাতে স্যালাইনের ক্যানুলা। চাকরি বাঁচাতে এই অবস্থায় ২১ দিন ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছেন তাঁরা। করবেন নাই-বা কেন, তাঁদের কেউ সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, কারও বেতনের টাকায় চলছে পরিবারের অসুস্থ সদস্যের চিকিৎসা; কেউ আবার বেতনের টাকায় সন্তানের জন্য...
৫ দিন আগেযুদ্ধের কারণে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা এবং দৈনন্দিন আতঙ্ক ইসরায়েলি নারীদের গভীরভাবে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এমন তথ্যের আভাস পাওয়া গেছে।
৫ দিন আগেঅনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় মাত্র ২০ হাজার টাকায় বোরকার ব্যবসা শুরু করেন। ডিজাইন, কাপড় সংগ্রহ, ডেলিভারি—সবই এক হাতে সামলাতেন তিনি। বর্তমানে ঢাকায় তাঁর দুটি শোরুম রয়েছে। বিনিয়োগের পরিমাণ বহু আগেই কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, জাপান, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে...
৫ দিন আগে