Ajker Patrika

হারিয়ে যাওয়া আল আমিনের নিজেকে ফিরে পাওয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কদিন আগে শেষ হওয়া প্রিমিয়ার লিগে আল আমিন করেছেন ১০ গোল। ছবি: সংগৃহীত
কদিন আগে শেষ হওয়া প্রিমিয়ার লিগে আল আমিন করেছেন ১০ গোল। ছবি: সংগৃহীত

জ্যৈষ্ঠের খরতাপে পুলিশ এফসির মাঠে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা। অপেক্ষাটা ফরোয়ার্ড আল আমিনের জন্য। হন্তদন্ত হয়ে এসেই বারবার দুঃখ প্রকাশ করলেন। আল আমিনের বিনয় আপনাকে মুগ্ধ করবে। যেহেতু স্ট্রাইকার, তিনি আরও মুগ্ধতা ছড়াতে পারেন গোল দিয়ে। ফুটবলে স্ট্রাইকার বা গোলদাতাদের সবচেয়ে বেশি কদর তো এ কারণেই। পুলিশ এফসির হয়ে আল আমিন দ্যুতি ছড়িয়েছেন কদিন আগে সমাপ্ত প্রিমিয়ার লিগে। তবে গোলসংখ্যায় ‘হেরে’ গেছেন জাতীয় দলের সতীর্থ ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেনের কাছে।

প্রিমিয়ার লিগে রাকিবের গোল ১১, আল আমিনের সেখানে ১০টি। রাকিবের কাছে হেরে কোনো আফসোস নেই তাঁর। গত বুধবার আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলছিলেন, ‘লিগে শুরুটা ভালো হয়েছিল আমার। রাকিব ভাই অনেক ভালো খেলোয়াড়, এতে কোনো সন্দেহ নেই। চেষ্টা করেছি, স্থানীয়দের ভেতর যেন শীর্ষে থাকতে পারি। শেষ ম্যাচের আগে আমাদের গোলসংখ্যা একই ছিল। কিন্তু শেষ ম্যাচে রাকিব ভাই গোল পেয়েছে। আমার এটা নিয়ে আফসোসের কিছু নেই, আমি খুশি।’

ক্লাব ফুটবলের মৌসুম শেষ। আল আমিনের যাবতীয় মনোযোগ এখন জাতীয় দলে। বিশেষ করে ১০ জুন সিঙ্গাপুর ম্যাচে। সিঙ্গাপুরে বিপক্ষে জিততে আল আমিন যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী, ‘এবারের দলটা বেশ ভালো হয়েছে। আমরা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। বাংলাদেশের যারা প্রবাসী আছে, তারাও আসুক। তারা এলে আমরা স্বপ্ন দেখি একদিন বিশ্বকাপও জিতব! তবে আপাতত মনোযোগ সিঙ্গাপুরকে ঘিরে।’

প্রবাসী ফুটবলাররা এলে স্থানীয়দের কেউ কেউ জায়গা হারাবেন। জায়গা হারানোর ব্যাপারে স্থানীয়রা একেবারেই যে শঙ্কায় ভোগেন না, সেটি পরিষ্কার করলেন আল আমিন, ‘কে কী মনে করে জানি না। আমার স্বপ্ন থাকবে আমি হামজা-শমিতদের সঙ্গে খেলব। তাদের সঙ্গে একই ড্রেসিংরুমে থাকাটা স্বপ্নের মতো। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারব। চাই, তারা আসুক।’

যে আল আমিন এখন জাতীয় দলের একজন সম্ভাবনাময় ফরোয়ার্ড, তিনিই কি না ২০২১-২২ সালে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। আরামবাগের সেই দলে যাঁরা নিষিদ্ধ হয়েছিলেন, বেশির ভাগই ফুটবল থেকে হারিয়ে গেছেন, সেখানে আল আমিনের চোখে বড় স্বপ্ন। হারিয়ে গিয়েও কীভাবে খুঁজে পেলেন পথের দেখা, এপিবিএন পুলিশের সুইমিং পুলের পাশে বসে আল আমিন সে গল্প শোনালেন আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে, ‘তখন আমার বয়স ছিল ১৬। ম্যাচ পাতানো সম্পর্কে কিছু বুঝতাম না। ভেবেই নিয়েছিলাম যে ফুটবলটা ছেড়ে দেব। আমি পুরোপুরিভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। একাডেমি আমার পাশে ছিল। সেখানে চার মাস অনেক পরিশ্রম করি। সেখান থেকে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে পাঠানো হলো। খুব ভালো ছন্দে ছিলাম। পুলিশে যোগ দেওয়ার পর আমার প্রথম লক্ষ্য ছিল যেকোনো কিছু করে দেখাব। শুরুটা অবশ্য খারাপ ছিল। কোচ বলছিলেন স্ট্রাইকার হয়ে যদি গোল না পাও, তাহলে কীভাবে তোমাকে খেলাব। তারপর আমাকে আলাদাভাবে অনুশীলন করানো হয়। যখন আত্মবিশ্বাস চলে আসে, তখন এমনি গোল এসেছে।’

কঠিন সময়ে আল আমিনের বড় শিক্ষা, ধৈর্য থাকলে সুদিন আসবেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা ছাত্রদল কর্মী ইপ্সিতার, ধর্ষণের অভিযোগ আসে ৯৯৯ থেকে

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

নূরুল হুদাকে হেনস্তা: বিচারের দাবিতে ৩৪ বীর মুক্তিযোদ্ধার বিবৃতি

চ্যাটজিপিটিকে যেভাবে প্রশ্ন করবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত