রাজীব হাসান
অপেক্ষাটা যে কত দিনের! অবশেষে লিওনেল মেসির হাতে উঠেছে একটি আন্তর্জাতিক শিরোপা। মারাকানার আকাশটা কাল যখন আকাশি-সাদায় রূপ নিয়েছে, তখন সহস্র মাইল দূর থেকে মেসিকে একটি হৃদয়স্পর্শী চিঠি লিখেছেন রাজীব হাসান।
প্রিয় মেসি,
আজ খুব করে রোজারিওর ধুলোমাখা রাস্তায় বলের কারিকুরি করে বেড়ানো হাফ প্যান্ট পরা ছেলেটার কথা মনে পড়ছিল। মনে পড়ছিল, কেবল ফুটবল খেলবে বলে, মায়ের লালচোখ শাসানি ফাঁকি দিয়ে বাথরুমের জানালা গলে বের হয়ে নিউয়েলস ওল্ড বয়েজের অনুশীলন মাঠের পাশের ছোট্ট মাঠটায় ছুট দেওয়া সেই ছেলেটার কথা। কুকিজের লোভে প্রতিপক্ষের সাত কি আটজনকে কাটিয়ে একাই মাঝমাঠ থেকে গোল করা ‘লা পুলগা’র কথা।
ইতিহাস তখনই লিখে রেখেছিল, আপনি সর্বশ্রেষ্ঠের মুকুট পরবেন। সেই ইতিহাস লেখা ছিল রোজারিওর ঘাসহীন ন্যাড়া মাঠে; কার্লেস রেক্সাসের ন্যাপকিনে; এমনকি আপনার গ্রোথ হরমোনের অসুখ শনাক্ত করা রোজারিও সেই চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনেও। চে গুয়েভারার নাড়িপোঁতা রোজারিও থেকে উঠে আসা আপনি কী এক মোহময় জাদুকরি বিপ্লবে পুরো ফুটবল বিশ্বকে কাঁপিয়ে দেবেন। আপনি ম্যারাডোনার পাশে বসবেন; তা নিশ্চিত জানত গেটাফে, ২০০৭; এবং সেই ৫ প্রতিপক্ষকে কাটিয়ে হুবহু ম্যারাডোনার শতাব্দীর সেরা গোল করার দিনটা।
তবু এক জায়গায় এসে গল্পের শেষটা, কেন জানি না, মধুরেণ সমাপয়েৎ হচ্ছিল না। সবকিছু পেয়েও কিসের এক বিরাট শূন্যতা। দুই হাত ভরে পেয়েও খালি ভাঁড়ার। চার-চারটি ফাইনালে পৌঁছেও আপনার বেদন-অশ্রু। তখন মনে হচ্ছিল, এ-ই তো জীবন। ‘এলিয়েন’কেও যে রক্তমাংসের মানুষ বানায়। মনে হচ্ছিল, এই না-পাওয়া নিয়েই আপনি অবসরে যাবেন। ফুটবলবোদ্ধা এবং নিন্দুকেরা এবং ইতিহাস এবং আরও সবাই এবং ন্যু ক্যাম্পের সিনথেটিক ঘাস এবং ঝলসানো ফ্লাড লাইট...সবাই আপনার নামের পাশে লক্ষ্মণরেখার মতো একটা লাইন টেনে দেবে। সেই সূক্ষ্ম লাইন যা গ্রেট আর লিজেন্ডের পার্থক্য বোঝায়।
সময়ের স্রোত আমাদের বয়ে এনেছিল আপনার ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে। ওই তো অস্তাচলের দিগন্তে ম্রিয়মাণ সূর্যটা। ৩৪ পেরিয়েছেন; ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে যা হয়নি, তা কি আর হবে? হয়তো আমাদের জন্য বৃদ্ধ বয়সে থেকে যাবে স্মৃতির জাবর। দাওয়ায় বসে গল্প করতে করতে আমরা বলব, লিওনেল মেসি কোনো খেলোয়াড় ছিল না। ছিল সেই জাদুকর। সময় এবং তার পরিপার্শ্বকে; ভূপাতিত জেরোম বোয়াটেংকে, হতবুদ্ধ ম্যানুয়েল নয়্যারকে; কিংবা ২০০৯-এ এডুইন ফন ডারসারকে স্থির করে দেওয়া এক আলোর গতি। যার কারণে এখনো সময় আটকে আছে। স্থির হয়ে আছে।
কিন্তু এসবই হতো কেবলই সান্ত্বনা…।
কে জানত, শেষের গল্পটা আপনি অন্যভাবে লিখবেন! ২০১৪, মারাকানা; ব্রাজিলীয়রা ১৯৫০-কে স্মরণ রেখে যাকে বলে মারাকানজো; আপনার জীবনেরও একান্ত কান্নার এক অধ্যায় হয়ে থাকবে; সেই মারাকানায় আপনি পোডিয়ামের স্পট লাইটে আবার উঠবেন। এবার শুধু সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বল নয়; এবার শুধু গোল্ডেন বুট নয়; আপনার হাতে উঠবে ঢাউস ট্রফিটা। যার বুকে চুমু এঁকে আপনি বলবেন—তুমি এলে! সেই তুমি, এলে! অজস্র কনফেত্তির বৃষ্টি, গাঢ় অন্ধকারে ঢেকে যাওয়া আকাশে আতশবাজির বর্ণচ্ছটাকে নেপথ্যে রেখে আপনি ফ্রেমবন্দী হবেন সেই ট্রফিটা নিয়ে; যার জন্য অপেক্ষা করছিল ফুটবল-দেবতারাও। এবং সেদিন স্বর্গ থেকে আপনাকে আশীর্বাদ করবেন খোদ দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা।
শেষ বাঁশি বাজার পর দু হাতে কান্না লুকোনোর বৃথা চেষ্টা করা আপনার সজল মুখটা আমি দেখেছি মেসি। চোখের জলের কোনো রং হয় না, কে বলল? সে রং আকাশি-সাদা!
অপেক্ষাটা যে কত দিনের! অবশেষে লিওনেল মেসির হাতে উঠেছে একটি আন্তর্জাতিক শিরোপা। মারাকানার আকাশটা কাল যখন আকাশি-সাদায় রূপ নিয়েছে, তখন সহস্র মাইল দূর থেকে মেসিকে একটি হৃদয়স্পর্শী চিঠি লিখেছেন রাজীব হাসান।
প্রিয় মেসি,
আজ খুব করে রোজারিওর ধুলোমাখা রাস্তায় বলের কারিকুরি করে বেড়ানো হাফ প্যান্ট পরা ছেলেটার কথা মনে পড়ছিল। মনে পড়ছিল, কেবল ফুটবল খেলবে বলে, মায়ের লালচোখ শাসানি ফাঁকি দিয়ে বাথরুমের জানালা গলে বের হয়ে নিউয়েলস ওল্ড বয়েজের অনুশীলন মাঠের পাশের ছোট্ট মাঠটায় ছুট দেওয়া সেই ছেলেটার কথা। কুকিজের লোভে প্রতিপক্ষের সাত কি আটজনকে কাটিয়ে একাই মাঝমাঠ থেকে গোল করা ‘লা পুলগা’র কথা।
ইতিহাস তখনই লিখে রেখেছিল, আপনি সর্বশ্রেষ্ঠের মুকুট পরবেন। সেই ইতিহাস লেখা ছিল রোজারিওর ঘাসহীন ন্যাড়া মাঠে; কার্লেস রেক্সাসের ন্যাপকিনে; এমনকি আপনার গ্রোথ হরমোনের অসুখ শনাক্ত করা রোজারিও সেই চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনেও। চে গুয়েভারার নাড়িপোঁতা রোজারিও থেকে উঠে আসা আপনি কী এক মোহময় জাদুকরি বিপ্লবে পুরো ফুটবল বিশ্বকে কাঁপিয়ে দেবেন। আপনি ম্যারাডোনার পাশে বসবেন; তা নিশ্চিত জানত গেটাফে, ২০০৭; এবং সেই ৫ প্রতিপক্ষকে কাটিয়ে হুবহু ম্যারাডোনার শতাব্দীর সেরা গোল করার দিনটা।
তবু এক জায়গায় এসে গল্পের শেষটা, কেন জানি না, মধুরেণ সমাপয়েৎ হচ্ছিল না। সবকিছু পেয়েও কিসের এক বিরাট শূন্যতা। দুই হাত ভরে পেয়েও খালি ভাঁড়ার। চার-চারটি ফাইনালে পৌঁছেও আপনার বেদন-অশ্রু। তখন মনে হচ্ছিল, এ-ই তো জীবন। ‘এলিয়েন’কেও যে রক্তমাংসের মানুষ বানায়। মনে হচ্ছিল, এই না-পাওয়া নিয়েই আপনি অবসরে যাবেন। ফুটবলবোদ্ধা এবং নিন্দুকেরা এবং ইতিহাস এবং আরও সবাই এবং ন্যু ক্যাম্পের সিনথেটিক ঘাস এবং ঝলসানো ফ্লাড লাইট...সবাই আপনার নামের পাশে লক্ষ্মণরেখার মতো একটা লাইন টেনে দেবে। সেই সূক্ষ্ম লাইন যা গ্রেট আর লিজেন্ডের পার্থক্য বোঝায়।
সময়ের স্রোত আমাদের বয়ে এনেছিল আপনার ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে। ওই তো অস্তাচলের দিগন্তে ম্রিয়মাণ সূর্যটা। ৩৪ পেরিয়েছেন; ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে যা হয়নি, তা কি আর হবে? হয়তো আমাদের জন্য বৃদ্ধ বয়সে থেকে যাবে স্মৃতির জাবর। দাওয়ায় বসে গল্প করতে করতে আমরা বলব, লিওনেল মেসি কোনো খেলোয়াড় ছিল না। ছিল সেই জাদুকর। সময় এবং তার পরিপার্শ্বকে; ভূপাতিত জেরোম বোয়াটেংকে, হতবুদ্ধ ম্যানুয়েল নয়্যারকে; কিংবা ২০০৯-এ এডুইন ফন ডারসারকে স্থির করে দেওয়া এক আলোর গতি। যার কারণে এখনো সময় আটকে আছে। স্থির হয়ে আছে।
কিন্তু এসবই হতো কেবলই সান্ত্বনা…।
কে জানত, শেষের গল্পটা আপনি অন্যভাবে লিখবেন! ২০১৪, মারাকানা; ব্রাজিলীয়রা ১৯৫০-কে স্মরণ রেখে যাকে বলে মারাকানজো; আপনার জীবনেরও একান্ত কান্নার এক অধ্যায় হয়ে থাকবে; সেই মারাকানায় আপনি পোডিয়ামের স্পট লাইটে আবার উঠবেন। এবার শুধু সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বল নয়; এবার শুধু গোল্ডেন বুট নয়; আপনার হাতে উঠবে ঢাউস ট্রফিটা। যার বুকে চুমু এঁকে আপনি বলবেন—তুমি এলে! সেই তুমি, এলে! অজস্র কনফেত্তির বৃষ্টি, গাঢ় অন্ধকারে ঢেকে যাওয়া আকাশে আতশবাজির বর্ণচ্ছটাকে নেপথ্যে রেখে আপনি ফ্রেমবন্দী হবেন সেই ট্রফিটা নিয়ে; যার জন্য অপেক্ষা করছিল ফুটবল-দেবতারাও। এবং সেদিন স্বর্গ থেকে আপনাকে আশীর্বাদ করবেন খোদ দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা।
শেষ বাঁশি বাজার পর দু হাতে কান্না লুকোনোর বৃথা চেষ্টা করা আপনার সজল মুখটা আমি দেখেছি মেসি। চোখের জলের কোনো রং হয় না, কে বলল? সে রং আকাশি-সাদা!
ইংল্যান্ডের ‘দ্য হান্ড্রেড’ টুর্নামেন্টে আজ পুরুষ, নারী দুই দলেরই খেলা রয়েছে। দুই ম্যাচেই মুখোমুখি হবে লন্ডন স্পিরিট-ম্যানচেস্টার অরিজিনালস। এক নজরে দেখে নিন টিভিতে কী কী খেলা রয়েছে।
১৯ মিনিট আগেপুরো টুর্নামেন্টে ৭ ম্যাচের কেবল ১ ম্যাচে হার। বলা হচ্ছে এখানে আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কথা। জিম্বাবুয়ে-দক্ষিণ আফ্রিকা-বাংলাদেশকে নিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ শেষ হয়েছে গতকাল। হারারের ফাইনালে প্রোটিয়াদের হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে শিরোপা উঁচিয়ে ধরল...
৪১ মিনিট আগেওয়েম্বলিতে গত রাতে ফাইনাল হয়েছে ফাইনালের মতোই। কমিউনিটি শিল্ড ফাইনালে প্রাণপণে লড়েছে ক্রিস্টাল প্যালেস-লিভারপুল। এমনকি পেনাল্টি শুটআউটেও কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলেনি। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্যালেস।
১ ঘণ্টা আগেঘরোয়া ফুটবল শুরু হতে দেরি আরও এক মাস। আবাহনী লিমিটেডকে প্রস্তুতিতে নামতে হয়েছে অনেকটা আগে। কাল জাতীয় স্টেডিয়ামে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের প্লে-অফ ম্যাচে কিরগিজস্তানের ক্লাব মুরাস ইউনাইটেডের মুখোমুখি হবে তারা।
২ ঘণ্টা আগে