Ajker Patrika

‘শিক্ষিত মূর্খ তৈরি করা হচ্ছে, যাতে স্বৈরাচারী শাসন জারি রাখা যায়’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫: ২৫
‘শিক্ষিত মূর্খ তৈরি করা হচ্ছে, যাতে স্বৈরাচারী শাসন জারি রাখা যায়’

পরিকল্পিতভাবে জাতিকে মেধাহীন করে গড়তে বর্তমান শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ‘শিক্ষা, সংস্কৃতি, সভ্যতা ও ট্রান্সজেন্ডার বিতর্ক: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভার বক্তারা। তাঁরা বলেছেন, দেশে শিক্ষিত মূর্খ তৈরি করা হচ্ছে, যাতে স্বৈরাচারী শাসন জারি রাখা যায়। 

আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে ভয়েস অব ল’ইয়ার্স বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থা পরিকল্পিতভাবে বর্তমান অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে। শিক্ষিত মূর্খ তৈরি করা হচ্ছে, যাতে এখানকার মানুষকে শোষণ করা যায়। তাদের ওপর স্বৈরাচারী শাসন জারি রাখা যায়।’ 

অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার আরও বলেন, ‘এখানকার যাঁরা পলিসি মেকার, তাঁরা চান না এখানকার মানুষ শিক্ষিত হোক। তাঁদের ছেলেমেয়েদের বিদেশে পড়াচ্ছেন। আমার ছেলেমেয়েকে এখানেই পড়াতে হবে—এই চিন্তা না থাকলে কখনোই এখানকার শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাব না। পলিসি মেকারদের, অর্থাৎ সরকারকে পরিবর্তন করতে হবে।’ 

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, ‘এই সরকার যেমন ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত নয়, তেমনি তারা একটি আরোপিত শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে এই জাতিকে শাসন করতে চায়। আজ যে ট্রান্সজেন্ডারের কথা আসছে, তা পাশ্চাত্যের ক্ল্যাশ অব সিভিলাইজেশনের আলোকে আসছে।’ 

সাবেক এই উপাচার্য আরও বলেন, ‘পাশ্চাত্য যেমন তাদের সংস্কৃতি আমাদের ওপর চাপাতে চাইছে, তেমনি সরকারও আমাদের ইসলামের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করছে। এখন বলা হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ভালো করতে হবে। এই সরকার যদি থাকে, তাহলে দেশের স্বাধীনতা আর থাকবে না।’ 

সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রম লিঙ্গ পরিচয় সংকট তৈরি করবে, যা সামাজিক বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যাবে। এর ফলে পরিবারব্যবস্থায় ভাঙন, মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ও মানসিক রোগ বৃদ্ধি, অপরাধ ও আত্মহত্যা বৃদ্ধি পাবে।’ 

এ ছাড়া সমগ্র কারিকুলাম সংশোধন, পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু পুনরায় লেখা, শরীফার গল্প বাদ দেওয়া, দেশে এলজিবিটিকিউ কার্যক্রম বন্ধ করা, ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ অর্থে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দ ব্যবহার না করা, ট্রান্সজেন্ডারদের ধূর্ততা থেকে হিজড়াদের রক্ষা করা, হিজড়াদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং তাদের চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নত করাসহ ট্রান্সজেন্ডারদের কাউন্সেলিং ব্যবস্থার দাবি জানান আরিফুল ইসলাম। 

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রধান ব্যক্তিদের কেউই এই দেশে পড়াশোনা করে না। তাই তাঁরা দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ভাবেন না। রাজনৈতিক পরিবর্তন ছাড়া এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়। আমরা একটা কমিশন করে নতুন শিক্ষানীতি তৈরি করব।’ 

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিচারপতি আব্দুস সালাম মামুন, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমেদ, ঢাকা ট্যাক্সেস বারের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত