Ajker Patrika

১৪ জুলাই আওয়ামী লীগের ‘রাজাকার ন্যারেটিভ’ ভেঙে দিয়েছে মেয়েরা: সামান্তা শারমীন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২৫, ২২: ৫০
১৪ জুলাই আওয়ামী লীগের ‘রাজাকার ন্যারেটিভ’ ভেঙে দিয়েছে মেয়েরা: সামান্তা শারমীন

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের সময় গত বছর ১৪ জুলাই গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হল থেকে বেরিয়ে যে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তা ‘আওয়ামী লীগের রাজাকার ন্যারেটিভ’ ভেঙে দিয়েছে এবং সেই রাতেই ‘বাংলাদেশের সবকিছু বদলে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সম্প্রতি রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।

সামান্তা শারমীন বলেন, ‘১৪ জুলাই পুরা বাংলাদেশের সবকিছু বদলায় গেছে, শুধুমাত্র ১৪ জুলাই রাতের জন্য—এটা আমাদেরকে বলতেই হবে। ১৪ জুলাই প্রত্যেকটা হলের মেয়েরা আওয়ামী লীগের একমাত্র ন্যারেটিভ রাজাকার... একমাত্র ন্যারেটিভকে ভেঙে দিছে মেয়েরা। আমাদের আপ্রাইজিংয়ের বাঁকে বাঁকে অনেক ধরনের টার্নিং মোমেন্ট ছিল, যেখানে আসলে আমরা হয়তো হতাশ হয়ে যাচ্ছিলাম, আবার আমরা আপলিফট হয়েছি। কিন্তু আপ্রাইজিংয়ের পুরো ন্যারেটিভটা বদলায় দিছে... এটার পুরোটার দিক নির্দেশনা দিছে হচ্ছে মেয়েরা—এটা আমাদেরকে বলতে পারতেই হবে এবং সেটা ঘটেছে ১৪ জুলাই।’

গত বছর ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ কোটা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা পাবে না তো রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে?

এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি ‘আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলেছেন’—এই দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এরপর তা দাবানলের মতো সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৪ জুলাই গভীর রাতে রাজপথে নেমে আসেন রোকেয়া হলসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী। তাদের মুখে স্লোগান ছিলো ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’।

তবে, শেখ হাসিনা পরে তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে দাবি করেছিলেন, তার মন্তব্যের প্রেক্ষাপট না বুঝে ভুলভাবে উপস্থাপন করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিক্ষোভ তৈরি করা হয়েছে। তিনি আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বলেননি। কিন্তু তাতে বিক্ষোভ প্রশমিত হয়নি।

এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলনের পালে নতুন হাওয়া লাগে, সেটি সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলনে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখোমুখি হয় আওয়ামী লীগ সরকার। অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা।

নারী দিবস সামনে রেখে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ‘নারীর লড়াই, নিরাপত্তা, নেতৃত্ব ও সমাজের বাধা’ শীর্ষক ওই আলোচনার আয়োজন করে প্রথম আলো।

আলোচনায় অংশ নিয়ে এনসিপি নেতা সামান্তা বলেন, ‘আমি একেবারেই চাই না যে ফর সেক অব উইমেন পার্টিসিপেশন, কেউ হচ্ছে যোগ্যতা না থাকলেও কোথাও যা—এটা আমি চাই না। এটা লাউড এন্ড ক্লিয়ার—এটা আমি চাই না। তার মানে হচ্ছে আমাদের কাজ হচ্ছে মেয়েদেরকে যোগ্য করে তোলা... যত রকমের প্রসেস নেওয়া যায় এবং একদম ব্যক্তিগত পার্টিসিপেশন থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগ থেকে শুরু করে যতভাবে মেয়েদেরকে এখানে পলিটিক্যালি গ্রুমিং করা যায়, পলিটিক্যালি এস্টাবলিশ করা যায় তাদের।’

নারীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থার করার ক্ষেত্রে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে সামান্তা বলেন, ‘এটা আমাদেরকে দায়িত্ব নিয়ে করতে হবে। এটা স্টেটের কাজ, এটা আমাদের করার কথা না। কিন্তু তারপরও যখন করতে হচ্ছে আমরা করব। কারণ, এটা যদি না করি তাহলে আবার দেখা যাবে আমরা পুরোনো গ্যারাকলে পড়ে যাচ্ছি। তো এই গ্যারাকলে আমরা আর পড়তে চাই না। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই যোগ্যতার ভিত্তিতে নারী নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে। যোগ্য নয়, কিন্তু তারপরও বসিয়ে দিলে এটা আমাদের জন্য খুবই খুবই... এটা লং টার্মে আমাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে ওঠে, যোগ্য করে তুলতে হবে। যোগ্যতার ভিত্তিতে বসাতে হবে।’

সামান্তা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের আনাচকানাচে নারীদের কথা বলার জন্য এবং তাঁদের অভিজ্ঞতা শোনার জন্য নানা ধরনের আয়োজন দেখতে পাচ্ছি। এসব আয়োজন আমাদের নানা মাত্রায় নিতে হবে। আলোচনা-সমালোচনা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, এর সঙ্গে রাজনীতিও গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘২৪-এর গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমাদের জাতিগত একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। এখানে সবার মধ্যে একধরনের বোধের জন্ম হয়েছে যে আমাদের একতা প্রয়োজন। এটি এখনো অস্পষ্ট, দৃশ্যমান হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার আপাতত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মিলে একে দৃশ্যমান করার চেষ্টা করছে। প্রতিটি সেক্টরের মধ্যে সংযোগের মাধ্যমে একতা গড়া প্রয়োজন। নারীদের ক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

সামান্তা বলেন, ‘মনোনয়নের মাধ্যমে যেসব নারী সংসদে আসছেন, তাঁরা নারী সমাজকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেন না। বরং তাঁরা দলীয় স্বার্থকেই তুলে ধরেন। সংরক্ষিত ও মনোনীত নারী আসন আসলে নারী নেতৃত্ব তৈরির উল্টো পথ। সরাসরি মানুষের ভোটে জয়লাভ করে উঠে আসার মধ্যে দুর্দান্ত আত্মবিশ্বাস কাজ করে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি

বিরাজমান পরিস্থিতি এবং সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে অবহিত করতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হবে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান। সোমবার (১০ নভেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে বলে জানান শায়রুল।

এর আগে সোমবার রাত সোয়া ৯টার দিকে স্থায়ী কমিটির সভা শুরু হয়। রাত সোয়া ১১টায় এই সভা শেষ হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদাবাজদের সঙ্গে জোট করে নির্বাচন করার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো: হাসনাত আবদুল্লাহ

চাঁদপুর প্রতিনিধি
সভায় বক্তব্য দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সভায় বক্তব্য দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, যারা পাড়া-মহল্লায় রমরমা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত, তাদের সঙ্গে জোট করে নির্বাচন করার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো।

সোমবার (১০ নভেম্বর) রাতে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এনসিপি জেলা কমিটির সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বিএনপি অনেক কষ্ট করে দলটা টিকিয়ে রেখেছে। বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী তাদের নেতাদের মাধ্যমে কোণঠাসা হয়ে রয়েছে। তারা অনেক সময় আমাদের বলে, ‘‘তোমরা দেশটাকে সঠিক পথে নাও। আমাদের দলটাকে তারা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। আমরা রক্ত ও ঘাম দিয়ে আন্দোলন করেছি ভোটের অধিকার ও মানুষের স্বাধীনতার জন্য।’’’

হাসনাত বলেন, ‘বিএনপির মধ্যে অনেক ভালো মানুষ রয়েছে, যারা কোনো অপরাধমূলক কাজে জড়িত নেই, তাদের আমরা আমাদের দলে নিয়ে নেব। যারা জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বিশ্বাস করে, তারা কখনো চাঁদাবাজি করতে পারে না।’

নিজ দল সম্পর্কে এনসিপির এ নেতা বলেন, ‘অনেকেই এখন চায়ের দোকানে বসে মশকরা করে এনসিপি করেন, ভোটের পর আর খবর থাকবে না। আমি তাদের বলব—ভালো কাজ অল্পসংখ্যক লোক দিয়েই শুরু হয়। অনেক সময় বলা হয়, সমাজে যারা সংখ্যায় বেশি, তারাই কল্যাণকামী। এটা ভুল। কল্যাণকামীরা সব সময়ই কমসংখ্যক হয়। হাসিনার সময় যারা লড়াই-সংগ্রাম করেছে, তাদের সংখ্যাও কম ছিল।’

নিজ দলের নেতা-কর্মীর উদ্দেশে হাসনাত বলেন, ‘জেলার আট উপজেলায় যে জনপ্রতিনিধি দরকার, সেই পরিমাণ লোক এখানে উপস্থিত হয়নি। তাহলে কীভাবে আপনারা কাজ করবেন। কোরাম করা লোকদের আমাদের প্রয়োজন নেই। ভালো ১০ জন দিয়ে এনসিপির কমিটি হবে।’

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে এনসিপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা দেখছি ভালো নির্বাচন হবে। তবে অনেকেই ব্যালট না নিয়ে বুলেট বেছে নিয়েছে। তারা ভাবছে, বুলেটের ভয় দেখিয়ে দেশের মানুষকে ফ্যাসিবাদী শাসনের মতো নিয়ে যেতে পারবে। ইতিমধ্যে এনসিপির বিষয়ে তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলছে—যদি এনসিপিতে ভোট দাও, তাহলে নির্বাচনের পরে খবর আছে। আমরা জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই, যারা ভয় পায়, তারাই জনগণকে ভয় দেখায়। যারা ভয় দেখায়, তারা অতি নিকটবর্তী ক্ষতির মধ্যে আছে। যারা সাহসী মানুষ, তারা ভয় দেখায় না, তারা মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করে। একটি দল এখন অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে।’

এ সময় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আতাউল্লাহ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব মুহাম্মদ মিরাজ মিয়া, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ তালুকদারসহ অনেকে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রধান সমন্বয়কারী মো. মাহবুব আলম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা জাতীয় ছাত্রশক্তি নেতা মো. সাগর হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ঝগড়াঝাঁটি না করে জনগণের কাছে যান: আমীর খসরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘ঢাকায় বসে সিদ্ধান্ত দেওয়ার মালিকানা আমাদের কেউ দেয় নাই। জনগণের নির্বাচিত সংসদ হবে যেটা, সেই সংসদ আগামী দিনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে যাঁরা নির্বাচিত হয়ে সংসদে বসবেন, সেই সংসদ কী হবে, তারা কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেই সিদ্ধান্ত এখন আমরা দিতে পারি না।’

রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) মিলনায়তনে সোমবার (১০ নভেম্বর) এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গণপ্রকৌশলী দিবস উপলক্ষে এই আলোচনার আয়োজন করা হয়।

আমীর খসরু বলেন, ‘অনেকে চেষ্টা করছেন, সেই সিদ্ধান্তগুলো আমরা এখন নিই। আগামী দিনের সংসদ এটা বাধ্যতামূলকভাবে করতে পারে, এটা গণতন্ত্রের কোনো সংজ্ঞায় পড়ে না। সুতরাং যতটুকু ঐকমত্য হয়েছে, সনদ সই হয়েছে, চ্যাপ্টার ক্লোজ...লেট আস গো টু ইলেকশন। ইলেকশনে গিয়ে জনগণের কাছে নিয়ে যান, আপনাদের যদি নিজস্ব কোনো দাবিদাওয়া থাকে আগামী দিনের জন্য, দয়া করে জনগণের কাছে যান। ঢাকায় বসে এইগুলা নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি করে সময় নষ্ট না করে অন্যদের কাউকে বাধ্য না করে আপনি জনগণের কাছে যান।’

সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এত দিন জনগণের মালিকানার কথা বলেছি। এইখানে আপনি যদি মালিক হয়ে যান যে জনগণকে এত দিন মালিক বললেন, জনগণের কাছে আপনি যাচ্ছেন না। এখন আমরা নিজেরাই মালিক হয়ে যাচ্ছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, বাংলাদেশ এটা হবে, সেটা হবে, ওটা হতে হবে। তাইলে জনগণ কোথায় গেল? এখানে আমরা নিজেরাই তো মালিক হয়ে গেছি।’

খসরু আরও বলেন, আগামী দিনের বাংলাদেশে কী সিদ্ধান্ত হবে, কোনো ঐকমত্য কমিশনও সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। কোনো রাজনৈতিক দলও সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। দয়া করে, জনগণের কাছে যান, আগামী নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে তারপরে সংসদে যান। ঢাকায় বসে দলাদলি করে রাস্তা দখল করে জনগণকে বাইরে রাখলে হবে না। গণতন্ত্র কাজ করে জনগণের মাধ্যমে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শরিকদের জন্যই ৬৩টি আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে: মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবে মতবিনিময়কালে বিএনপির মহাসচিব। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবে মতবিনিময়কালে বিএনপির মহাসচিব। ছবি: আজকের পত্রিকা

৬৩টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি জানান, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে যে যুগপৎ আন্দোলন হয়েছে, তাতে প্রায় ৪২টি রাজনৈতিক দল তাদের সঙ্গে ছিল। মূলত সেই শরিক দলগুলোকে কোথায় কোথায় আসন দেওয়া সম্ভব, তা দেখতেই আসনগুলো ফাঁকা রাখা হয়েছে।

আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) রাতে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপির মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা যখন আন্দোলন করি ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে, তখন প্রায় ৪২টি রাজনৈতিক দল আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করেছে। সেই রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা কোথায় কোথায় আসন দেওয়া সম্ভব, সেটা দেখার জন্যই মূলত এই আসনগুলোকে ব্র্যাকেট রাখা হয়েছে।’ এ সময় তিনি অন্যান্য আসনেও কিছু পরিবর্তন হতে পারে বলে উল্লেখ করেন।

নির্বাচনী প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, যারা পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) না হলে নির্বাচন হবে না বলে চাপ সৃষ্টি করছেন, তাঁরা ফ্যাসিস্টদের তৈরি করছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট তারাই তৈরি করছেন, যাঁরা বলেন পিআর দিতে হবে, তা না হলে নির্বাচন হবে না...এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাঁরা আজকে যে বিষয়গুলো নিয়ে চাপ সৃষ্টি করছেন সরকারের ওপরে; আমার বিশ্বাস, আমরা যারা শিক্ষিত লোক আছি, তারাও ঠিকমতো বুঝি না। এখন এমন একটা জিনিসকে চাপিয়ে দেওয়ার মধ্যে উদ্দেশ্য আছে। তাঁরা মনে করছেন, পিআর করলে অনেকগুলো বেশি আসন পাবেন। নট ট্রু। এটা ঠিক নয়।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, নির্বাচনের ট্রেন চালু করতে হবে। কারণ, আওয়ামী লীগ গত ১৫-১৬ বছর ধরে মানুষকে নির্বাচন বিমুখ করে রেখেছে।’

এর আগে বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের বদেশ্বর এলাকায় এক মতবিনিময় সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হাসিনা পালানোর পর এখন একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, এখন আমরা আমাদের মতো করে আলোচনার মাধ্যমে একটি সুন্দর বাংলাদেশ তৈরি করব।’

বিএনপি মহাসচিব তারেক রহমানের দেওয়া ৩১ দফা কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে বলেন, সেই বাংলাদেশে হিংসা থাকবে না, প্রতিশোধ থাকবে না এবং কেউ কাউকে ক্ষতি করার চেষ্টা করবে না।

তারেক রহমানের এই কর্মসূচির মধ্যে কীভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে, কীভাবে সাধারণ মানুষের উপকারে আসবে এবং কীভাবে মায়েরা-বোনেরা সবাই ভালো থাকবেন, সেই দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত