Ajker Patrika

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা এনেছে: শেখ হাসিনা

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২১, ২০: ৫১
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা এনেছে: শেখ হাসিনা

বাংলাদেশ ও ভারতের অব্যাহত সহযোগিতামূলক সম্পর্ক এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা এনেছে। আজ বুধবার বিকেলে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেছেন। বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রতিমন্ত্রী মো. শাহ্‌রিয়ার আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। 

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের সোনালি অধ্যায় অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয়। সব ধরনের বড় বড় সমস্যা নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছি। আগামী ৫০ বছর আশা করি অভিন্ন স্বার্থে একে অপরের সাহায্য করব, সবাই আমরা উন্নতির শিখরে পৌঁছাব।’ 
 
করোনা সহযোগিতা নিয়েও কথা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছি যে আনুষ্ঠানিক বিভিন্ন ফোরামে আলোচনার মাধ্যমে এই দুই দেশ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের অনেক উন্নয়ন করেছে। এর একটি হচ্ছে স্থিতিশীলতা। তিনি শুধু বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নয়, অঞ্চলের স্থিতিশীলতাও এনেছেন। কানেকটিভিটির কথা বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে।’ 
 
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে বলেছেন যে ভারতের সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক। আর এ সম্পর্কের ফলে এখানে শান্তি বিরাজ করছে। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন অংশীদারত্বের কথাও বলেন তিনি।’ 
 
সীমান্ত হত্যা নিয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। অব্যাহতভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের সহযোগিতায় এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছে, এটি আরও অনেক দূর যাবে। দারিদ্র্য দূরীকরণে সহযোগিতা আরও বাড়ানো দরকার বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। 

সীমান্ত হত্যা বা তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গার কথা বলেছি। আমরা বলেছি আমাদের বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করব।’ 

এদিকে বাংলাদেশে দুর্গাপূজার পর যে সমস্যা হয়েছিল তা সমাধানের জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিসেবে কাউকে বিবেচনা করা হয় না, সমান নাগরিক অধিকার দেওয়া হয়। 
 
ভারতে অন অ্যারাইভাল ভিসা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটি ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ। 
 
আজ বিকেল ৪টার দিকে এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে হোটেল সোনারগাঁওয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করেন ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। 

সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রামনাথ কোবিন্দ। বৈঠকে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি টি-৫৫ ট্যাংক এবং একটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানের সাদৃশ্য বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য মো. আবদুল হামিদকে উপহার হিসেবে দেন রামনাথ কোবিন্দ। এরপর বঙ্গভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আয়োজিত নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন। নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অংশ নেন। 

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা আসেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সফরে ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রয়েছেন ভারতের ফার্স্ট লেডি এবং রাষ্ট্রপতির কন্যা। দুপুরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। সেখান থেকে ধানমন্ডি ৩২-এ অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান ভারতের রাষ্ট্রপতি। ভারতের রাষ্ট্রপতিকে এ সময়ে স্বাগত জানান বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা। 
 
গণভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকসফরের দ্বিতীয় দিন ১৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে যাবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এ সময় তাঁকে স্বাগত জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ভারতের রাষ্ট্রপতি ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। 

এরপর বিকেল সাড়ে ৫টায় জাতীয় সংসদ ভবনের সাউথ প্লাজায় বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক মুহূর্তে ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নেবেন। এখানেও ভারতের রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন কোবিন্দ। 
 
সফরের তৃতীয় দিন ১৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় ভারতের রাষ্ট্রপতি ঢাকার রমনার কালীমন্দিরের সদ্য সংস্কারকৃত অংশের উদ্বোধন করবেন এবং মন্দিরটি পরিদর্শন করবেন। এ সময়ে তিনি মন্দিরসংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত পরিসরে মতবিনিময়ের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। পরে ওই দিন বেলা ১টায় রাষ্ট্রীয় সফর শেষে তিনি দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। 
 
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশ এসেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিববর্ষের সমাপনী দিন উদ্‌যাপন এবং বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাঁর এ সফর। সফরে ভারতের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, দুজন সংসদ সদস্য, পররাষ্ট্রসচিব সহ বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গী হিসেবে রয়েছেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তাঁর প্রথম বাংলাদেশ সফর। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিলেটে পাথর লুটে জড়িত দুই দলের ৩৫ নেতা

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত