Ajker Patrika

প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রচারবিমুখদের পুরস্কৃত করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রচারবিমুখদের পুরস্কৃত করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের আনাচকানাচে থাকা দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করা প্রচারবিমুখদের পুরস্কৃত করার জন্য বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘যাঁরা মানুষের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন। হয়তোবা তাঁরা প্রচারে আসেন না, দৃষ্টিসীমার বাইরে থাকে। তাঁদের বের করে পুরস্কৃত করা উচিত। তাঁদের দেখে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও অন্যরা শিখবে।’

আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সরকার প্রধান। 

স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশের আনাচকানাচে অনেক মানুষ পড়ে আছেন, যাঁরা মানুষের সেবা করেন নিজের উদ্যোগে। সেই ধরনের মানুষগুলোকে খুঁজে বের করতে হবে। তাঁদেরও পুরস্কৃত করতে হবে।’

মানুষের সেবা ও কল্যাণের মাধ্যমে যে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়, তা হাজার ধন-সম্পদ বানালেও হয় না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেটা আসে না। তাই সেভাবেই আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে। কারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা দিচ্ছেন, কাজ করছেন, তার খোঁজ নিতে হবে।’ 

স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দেওয়া সম্মানের জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নয় ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পদক-২০২২ দেওয়া হয়। 

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও তাঁদের প্রতিনিধিদের হাতে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে তিনি পদকপ্রাপ্তদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন।

আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক বক্তব্য রাখলাম, কিছু মনে করবেন না। বহুদিন পরে মুক্তি পেলামতো! আসলেই করোনাভাইরাসের সময়তো একেবারেই বন্দিখানায় ছিলাম।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতা পুরস্কার একবার দিতে পারিনি। কিন্তু বারবারতো আমি নিজেকে বঞ্চিত করতে পারি না। স্বাধীনতা পুরস্কার নিজ হাতে তুলে দেওয়া, আমার জন্য সম্মানের। তাই বহুদিন পরে এই অফিসে আসার সুযোগ পেলাম। এত দিনতো ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে চালাচ্ছিলাম।’

এর আগে ২০২১ সালে গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পদকপ্রাপ্ত ও তাঁদের প্রতিনিধির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২১’ পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ দেশকে আমরা এমন ভাবে গড়ে তুলব বাঙালি জাতিকে যেন আর কখনো বিশ্বের কারও কাছে মাথা নত করে চলতে না হয়। মাথা উঁচু করে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলব এবং মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে আমরা এগিয়ে যাব।’

অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘আজকে আমরা উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছি। এই যাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে, সমগ্র জাতির কাছে, প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে সেটাই আমরা আহ্বান থাকবে, অনুরোধ থাকবে।’

স্বাবলম্বী হওয়া দাতা দেশের প্রভাব কমেছে স্বাবলম্বিতা অর্জন করায় বাংলাদেশের ওপর দাতাদেশগুলোর প্রভাব কমেছে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকগুলো মেগা প্রজেক্ট আমরা করে যাচ্ছি। আমাদের যেকোনো উন্নয়ন প্রকল্প করতে গেলে আগে অনেকের কাছ থেকে অনেক পরামর্শ, অনেক দিকনির্দেশনা, অনেক কিছুই শুনতে হতো। আজকে আমরা আমাদের অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বিতা এত দূর অর্জন করেছি যে আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পের ৯০ ভাগই আমরা নিজস্ব অর্থায়নে করতে সক্ষমতা অর্জন করেছি। এটা যেন অব্যাহত থাকে সেটাই আমরা চাই।’

উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনে সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ব-দ্বীপ, এই বাংলাদেশ। এই অঞ্চলের মানুষ যেন ভবিষ্যতে একটা সুরক্ষিত জীবন পায়, উন্নত জীবন পায় এবং তা প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন পেতে থাকে একটা সুন্দর জীবন, সুন্দর ভবিষ্যৎ, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা ডেলটা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়ন করে তার কিছু আমরা বাস্তবায়নের কাজও শুরু করে দিয়েছি।’

মহামারিতে উন্নত বিশ্বের অনেক দেশেই খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক উন্নত দেশেও ব্যাপকভাবে খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। অনেক মানুষ হয়তো এক বেলা খাবার জোটাতেও পারে না। এ রকম অনেক উন্নত দেশও আছে। এমনকি যারা বিশ্বে মোড়লগিরি করে বেড়ায় তাদের অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। তাদেরও এক বেলা খাবার জোটে না। এ রকম পরিস্থিতি তাদের সৃষ্টি হয়েছে। সেদিক থেকে যদি আমরা বিবেচনা করি করোনা মোকাবিলা করেও বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারা আমরা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি।’

মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। স্বাধীনতা পদক প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত