Ajker Patrika

যত্রতত্র শিল্পপ্রতিষ্ঠান করা যাবে না: প্রধানমন্ত্রী  

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৩৪
যত্রতত্র শিল্পপ্রতিষ্ঠান করা যাবে না: প্রধানমন্ত্রী  

সরকার দেশের কৃষিজমি রক্ষা করতে চায়। তাই যত্রতত্র শিল্পপ্রতিষ্ঠান করা যাবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, `যত্রতত্র শিল্প করা যাবে না। এটা বাস্তব। কারণ আমরা চাই আমাদের কৃষিজমি রক্ষা করতে। খাদ্যের চাহিদা কখনোই কমবে না। বরং দিনের পর দিন বাড়বে। চাষের উপযোগী জমি রক্ষার্থে আমরা চাইছি …।'

আজ রোববার নবম জাতীয় এসএমই পণ্যমেলা-২০২১-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। 

শেখ হাসিনা বলেন, `সারা দেশে ১০০ শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলেছি। জাতির পিতা যে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তুলেছিলেন, সেগুলোও সম্প্রসারণ করছি। তাই সুনির্দিষ্ট জায়গায় সেই শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। যাতে করে বর্জ্যব্যবস্থা, পরিবেশ ঠিক থাকে। পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয়, সেই দিকে নজর দিতে হবে।' 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, `যত্রতত্র শিল্পপ্রতিষ্ঠান না করে ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প তো নিজেরাই করতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশনকে বলব আপনারা এ ক্ষেত্রে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন, যাতে কেউ যদি উদ্যোক্তা হয়, তিনি কোথায় তাঁর এই কাজগুলো করতে পারেন সেই নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে দেওয়া। নিজস্ব জমি কিংবা নিজের ঘরে করলে, সেখানেও বর্জ্যব্যবস্থা কীভাবে করবে, কীভাবে করলে বাজারজাত করতে পারবে, সেটা ভালোভাবে দেখতে পারবে।' 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, `আমাদের দেশের মানুষ বেশি, কিন্তু জায়গা কম। শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বড় শিল্পের সঙ্গে ক্ষুদ্র, মাঝারিসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্প গড়ে তোলা প্রয়োজন। যাতে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান বাড়বে। আবার মানুষ যেন অল্প পুঁজি দিয়ে কিছু উৎপাদন করতে পারে, বাজারজাত করতে পারে, আর্থিকভাবে সচ্ছলতা লাভ করতে পারে, সে অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।'  

সরকার কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে নজর দিচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, `আমরা মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সবজি থেকে সবকিছু উৎপাদন বাড়াতে পেরেছি। কাজেই উদ্বৃত্ত যে পণ্য রয়েছে, তাকে প্রক্রিয়াজাত করে…। আমাদের দেশেও বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ও মাথাপিছু আয় বেড়েছে। গ্রামের মানুষ যাতে সব নাগরিক সুবিধা পায়। সেই সুবিধাটা আমরা দিতে পারছি।' 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, `দেশের ৯৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দেব সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষে এটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য আমরা অর্জন করব। পাশাপাশি যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করে দিয়েছি। এতে পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে যাতে কোনো সমস্যা থাকে না, সে বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছি। 

শেখ হাসিনা বলেন, `খাদ্যের বাজারটা চিরদিনই থাকবে। দেশের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা বাড়ছে। খাদ্য ও পুষ্টিজ্ঞান সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। আরও সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি আমরা খাদ্যপণ্য বিদেশে রপ্তানি করতে পারব। পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে পৃথিবীর কোন দেশে, কী চাহিদা আছে; সেই মোতাবেক আমাদের দেশের কোনো পণ্য, কাঁচামাল পাওয়া যেতে পারে। সেইগুলো বিবেচনা করে আমরা সহজে শিল্প গড়ে তুলতে পারি। তাতে আমাদের দেশের বাজার সম্প্রসারণ হবে। বিদেশেও পণ্য রপ্তানি করতে পারব।' 

করোনাভাইরাসের পরে খাদ্যের চাহিদা আরও বেড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, `অনেক উন্নত দেশ এখন খাদ্যসংকটে ভুগছে। আমাদের এখানে নাই। কারণ করোনার শুরু থেকেই আমরা নির্দেশনা দিয়েছি খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য। সেই রকম ব্যবস্থা নিয়েছেন। তাই আমরা এখনো ভালো অবস্থানে রয়েছি।'

পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে মান ঠিক রাখার অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, `এ বিষয়ে আমাদের প্রশিক্ষণ অনেক বেশি প্রয়োজন।' চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য দেশের তরুণ সমাজের প্রতি আহ্বান করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নিজে কাজ করবেন, অন্যকে কাজের সুযোগ করে দেবেন।

এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, উৎপাদিত পণ্যের প্রসার, প্রচার ও বাজারজাত করণের বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 

সবাইকে করোনার স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।  

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মো. মাসুদুর রহমান। অনুষ্ঠানে চার বর্ষসেরা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাকে পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শিল্পমন্ত্রী এই পুরস্কার তুলে দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত