প্রতিনিধি, কলকাতা
মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বারবার নিজেকে ভারতীয় বলে দাবি করে গেছেন। বলেছেন, ১৯৬৬ সালে ভারতীয় হিসেবে ভোটও দিয়েছেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনালে নিজের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পারায় আজ বাংলাদেশি হিসেবেই মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক রঞ্জিত কুমার সেনকে (৭৫)।
রঞ্জিত কুমার নিজেকে ভারতীয় দাবি করলেও প্রমাণ না পাওয়ায় আসামের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তাঁকে বিদেশি ঘোষণা করে। ২০১৮ সালের ৬ এপ্রিল তাঁকে ডিটেনশন ক্যাম্প বা বিদেশি বন্দিশালায় পাঠানো হয়। পরে ২০২০ সালের ২৭ এপ্রিল করোনার কারণে জামিনে মুক্তি পান তিনি। বন্দিদশাতেই হারান স্ত্রীকে।
জামিনে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেলেও নাগরিকত্ব মেলেনি তাঁর। থাকতে হয়েছে বিদেশি হয়েই। প্রতি সপ্তাহে থানায় হাজিরা দেওয়া ছিল বাধ্যতামূলক। দূরে কোথাও যেতেও পারতেন না।
এ প্রসঙ্গে রঞ্জিত কুমারের ছেলে ঋত্বিক সাংবাদিকদের জানান, জেল থেকে বের হলেও তাঁর বাবা মানসিক শান্তি পাচ্ছিলেন না। হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। বিদেশি তকমা তিনি মেনে নিতে পারেননি। এরই মধ্যে করোনাতেও আক্রান্ত হন। ঋত্বিক মনে করেন, তাঁরা বাবার বেঁচে থাকার ইচ্ছাটাই চলে গিয়েছিল। বহুবার ভারতে নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করার পরও সেটি কেড়ে নেওয়ায় মানসিক হতাশা গ্রাস করে তাঁকে।
নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হয়ে রঞ্জিত কুমার সেনের মৃত্যুতে ফের বাঙালিবিদ্বেষের অভিযোগ উঠেছে আসাম সরকারের বিরুদ্ধে। উঠছে বাঙালিদের হয়রানি বন্ধের দাবি।
বৃদ্ধ রঞ্জিতের মৃত্যুর কিছুদিন আগে চন্দ্রধর দাস নামে আরও এক বৃদ্ধ বিদেশি তকমা নিয়ে প্রাণ হারান। ১০৪ বছরের চন্দ্রধরও নাগরিকত্বের পরীক্ষা পাশ করতে পারেনি। সম্প্রতি ৯১ বছরের মায়া বর্মণকে দিতে হচ্ছে নাগরিকত্ব পরীক্ষা। ফেল করলে তাঁকেও ভরা হবে জেলে।
জানা যায়, কারও নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ হলেই তাঁর বিরুদ্ধে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে নালিশ জানায় আসামের সীমান্ত পুলিশ। ট্রাইব্যুনাল নামক ক্যোয়াশি বিচার ব্যবস্থায় ডাউটফুল বা সন্দেহজনক বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এই সন্দেহজনক নোটিশ ডি-নোটিশ নামে পরিচিত। সেই নোটিশ পেলে অভিযুক্তকে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে পাশ করতে হয় নাগরিকত্বের পরীক্ষায়। ট্রাইব্যুনালের সন্দেহ হলেই নাগরিকত্ব খুইয়ে যেতে হয় ডি-ক্যাম্প বা ডিটেনশন ক্যাম্পে।
অনেক সময় অভিযুক্ত ব্যক্তি নোটিশও পান না। একতরফা তাঁকে বিদেশি ঘোষণা করা হয়। আর একবার বিদেশি ঘোষিত হলে না মরতে আর নিস্তার নেই। বিদেশি হয়েই জীবন কাটাতে হবে আমৃত্যু।
নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতির সভাপতি তপোধীর ভট্টাচার্যের মতে, দেশভাগের শিকার সমস্ত বাঙালিই ভারতীয়। তাই সকলের নাগরিকত্বই সুরক্ষিত রাখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বিদেশি তকমা দিয়ে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া অমানবিক বলেও তিনি মনে করেন। জানান, রাষ্ট্রের এই ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য বহু বাঙালি প্রাণ হারাচ্ছেন। অবিলম্বে এই পৈশাচিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা জরুরি।
আমরা বাঙালি-র সাধন পুরকায়স্থের মতে, বাঙালির মৃত্যু মিছিল চলছে আসামে। গরিব ও অসহায় মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ঠেলে দেওয়া হচ্ছে মৃত্যুর দিকে। নাগরিকত্ব প্রমাণ না করতে পেরে বহু মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন।
বিরোধী দল কংগ্রেসের দাবি, ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত সকলকেই নাগরিকত্ব দিতে হবে। কিন্তু বিজেপির বলছে, তালিকাতেও বহু বিদেশির নাম রয়ে গিয়েছে। তাই সীমান্ত পুলিশকে বলা হয়েছে বিদেশি শনাক্ত করতে।
এ ছাড়া ভারতের মধ্যে একমাত্র আসামেই নাগরিক পঞ্জীকরণ বা এনআরসি-র মাধ্যমে চলছে বিদেশি খোঁজার চেষ্টা। আর এই এনআরসি প্রক্রিয়াতেও বাঙালিরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিজেপি অবশ্য বলছে, হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষ সকল বৈধ ভারতীয়েরই নাগরিকত্ব নিশ্চিত করবে তাঁরা। কিন্তু বাস্তবে রঞ্জিত সেন, চন্দ্রধর দাসেদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বারবার নিজেকে ভারতীয় বলে দাবি করে গেছেন। বলেছেন, ১৯৬৬ সালে ভারতীয় হিসেবে ভোটও দিয়েছেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনালে নিজের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পারায় আজ বাংলাদেশি হিসেবেই মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক রঞ্জিত কুমার সেনকে (৭৫)।
রঞ্জিত কুমার নিজেকে ভারতীয় দাবি করলেও প্রমাণ না পাওয়ায় আসামের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তাঁকে বিদেশি ঘোষণা করে। ২০১৮ সালের ৬ এপ্রিল তাঁকে ডিটেনশন ক্যাম্প বা বিদেশি বন্দিশালায় পাঠানো হয়। পরে ২০২০ সালের ২৭ এপ্রিল করোনার কারণে জামিনে মুক্তি পান তিনি। বন্দিদশাতেই হারান স্ত্রীকে।
জামিনে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেলেও নাগরিকত্ব মেলেনি তাঁর। থাকতে হয়েছে বিদেশি হয়েই। প্রতি সপ্তাহে থানায় হাজিরা দেওয়া ছিল বাধ্যতামূলক। দূরে কোথাও যেতেও পারতেন না।
এ প্রসঙ্গে রঞ্জিত কুমারের ছেলে ঋত্বিক সাংবাদিকদের জানান, জেল থেকে বের হলেও তাঁর বাবা মানসিক শান্তি পাচ্ছিলেন না। হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। বিদেশি তকমা তিনি মেনে নিতে পারেননি। এরই মধ্যে করোনাতেও আক্রান্ত হন। ঋত্বিক মনে করেন, তাঁরা বাবার বেঁচে থাকার ইচ্ছাটাই চলে গিয়েছিল। বহুবার ভারতে নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করার পরও সেটি কেড়ে নেওয়ায় মানসিক হতাশা গ্রাস করে তাঁকে।
নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হয়ে রঞ্জিত কুমার সেনের মৃত্যুতে ফের বাঙালিবিদ্বেষের অভিযোগ উঠেছে আসাম সরকারের বিরুদ্ধে। উঠছে বাঙালিদের হয়রানি বন্ধের দাবি।
বৃদ্ধ রঞ্জিতের মৃত্যুর কিছুদিন আগে চন্দ্রধর দাস নামে আরও এক বৃদ্ধ বিদেশি তকমা নিয়ে প্রাণ হারান। ১০৪ বছরের চন্দ্রধরও নাগরিকত্বের পরীক্ষা পাশ করতে পারেনি। সম্প্রতি ৯১ বছরের মায়া বর্মণকে দিতে হচ্ছে নাগরিকত্ব পরীক্ষা। ফেল করলে তাঁকেও ভরা হবে জেলে।
জানা যায়, কারও নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ হলেই তাঁর বিরুদ্ধে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে নালিশ জানায় আসামের সীমান্ত পুলিশ। ট্রাইব্যুনাল নামক ক্যোয়াশি বিচার ব্যবস্থায় ডাউটফুল বা সন্দেহজনক বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এই সন্দেহজনক নোটিশ ডি-নোটিশ নামে পরিচিত। সেই নোটিশ পেলে অভিযুক্তকে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে পাশ করতে হয় নাগরিকত্বের পরীক্ষায়। ট্রাইব্যুনালের সন্দেহ হলেই নাগরিকত্ব খুইয়ে যেতে হয় ডি-ক্যাম্প বা ডিটেনশন ক্যাম্পে।
অনেক সময় অভিযুক্ত ব্যক্তি নোটিশও পান না। একতরফা তাঁকে বিদেশি ঘোষণা করা হয়। আর একবার বিদেশি ঘোষিত হলে না মরতে আর নিস্তার নেই। বিদেশি হয়েই জীবন কাটাতে হবে আমৃত্যু।
নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতির সভাপতি তপোধীর ভট্টাচার্যের মতে, দেশভাগের শিকার সমস্ত বাঙালিই ভারতীয়। তাই সকলের নাগরিকত্বই সুরক্ষিত রাখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বিদেশি তকমা দিয়ে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া অমানবিক বলেও তিনি মনে করেন। জানান, রাষ্ট্রের এই ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য বহু বাঙালি প্রাণ হারাচ্ছেন। অবিলম্বে এই পৈশাচিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা জরুরি।
আমরা বাঙালি-র সাধন পুরকায়স্থের মতে, বাঙালির মৃত্যু মিছিল চলছে আসামে। গরিব ও অসহায় মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ঠেলে দেওয়া হচ্ছে মৃত্যুর দিকে। নাগরিকত্ব প্রমাণ না করতে পেরে বহু মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন।
বিরোধী দল কংগ্রেসের দাবি, ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত সকলকেই নাগরিকত্ব দিতে হবে। কিন্তু বিজেপির বলছে, তালিকাতেও বহু বিদেশির নাম রয়ে গিয়েছে। তাই সীমান্ত পুলিশকে বলা হয়েছে বিদেশি শনাক্ত করতে।
এ ছাড়া ভারতের মধ্যে একমাত্র আসামেই নাগরিক পঞ্জীকরণ বা এনআরসি-র মাধ্যমে চলছে বিদেশি খোঁজার চেষ্টা। আর এই এনআরসি প্রক্রিয়াতেও বাঙালিরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিজেপি অবশ্য বলছে, হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষ সকল বৈধ ভারতীয়েরই নাগরিকত্ব নিশ্চিত করবে তাঁরা। কিন্তু বাস্তবে রঞ্জিত সেন, চন্দ্রধর দাসেদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে দেশের অর্থনীতি সংকুচিত হওয়ার জন্য দায়ী করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। নতুন শুল্ক আরোপের আগেই আমদানির চাপ, সরকারি ব্যয়ে কাটছাঁট এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা— এই বাস্তব কারণগুলো উপেক্ষা করে তিনি বারবার দায় দিচ্ছেন বাইডেন প্রশাসন
১০ ঘণ্টা আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের ১০০ দিন পেরোতেই তাঁর প্রশাসনে প্রথম বড় ধাক্কা লাগল। পদত্যাগ করলেন রিপাবলিকান সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ। ট্রাম্প প্রশাসন থেকে ওয়াল্টজের সরে দাঁড়ানোর ঘটনায় হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরীণ গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।
১০ ঘণ্টা আগেকাশ্মীরে সাম্প্রতিক সহিংসতার পর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গেছে। এরই মধ্যে ভারতীয় হামলার আশঙ্কায় পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সব মাদ্রাসা ১০ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে নিরীহ শিক্ষার্থীরা কোনো ঝুঁকিতে না...
১১ ঘণ্টা আগেভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায় দিয়ে আসছে নয়াদিল্লি। তবে পাকিস্তান সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেয়। জবাবে পাকিস্তানও ভারতীয় বিমানগুলোর জন্য তাদের আকাশসীমা ব্যবহার নিষিদ্ধ
১৪ ঘণ্টা আগে