Ajker Patrika

উল্কাপিণ্ড থেকে ৩০০০ বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল তিরের ফলা

আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২৩, ১২: ২০
উল্কাপিণ্ড থেকে ৩০০০ বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল তিরের ফলা

সুইজারল্যান্ডে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল ব্রোঞ্জ যুগের একটি তিরের ফলা। নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, এটি তৈরি করা হয় এক উল্কাপিণ্ড থেকে। 

খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০-৯০০ সালের দেড় ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের তিরের ফলাটি সংগ্রহ করা হয় সুইজারল্যান্ডের মরিগেনের বিয়েল হ্রদের তীরের একটি প্রাচীন বসতি এলাকা থেকে। খোঁড়াখুঁড়িটি করা হয় বিশ শতকে। 

নতুন এই গবেষণায় আশ্চর্যজনক যে তথ্যটি বেরিয়ে আসে তা হলো, প্রায় ৩ হাজার বছর বয়স্ক তিরের ফলাটি তৈরি করা হয় যে লোহা দিয়ে, সেটি সংগ্রহ করা হয় এস্তোনিয়ায় পড়া একটি উল্কাপিণ্ড থেকে। আর এটা প্রমাণ করে উল্কাপিণ্ড থেকে পাওয়া লোহার বাণিজ্য বা কেনাবেচা হতো ইউরোপে খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ সাল কিংবা এরও আগে। এত আগ থেকে এ ধরনের লোহা ব্যবহারের বিষয়টিকে খুব আশ্চর্যজনক বলে মনে করছেন গবেষকেরা। 

 ‘উল্কাপিণ্ড থেকে পাওয়া লোহার এত আগ থেকে ব্যবহারের এমন প্রমাণ একেবারেই বিরল একটি ঘটনা,’ নতুন এই আবিষ্কার বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। 

গবেষণা সূত্রে জানা যায়, ওই সময়টায় আকরিক থেকে মানুষ লোহা নিষ্কাশন করতে না পারলেও কোনো কোনো এলাকায় পড়া উল্কাপিণ্ড থেকে লোহা সংগ্রহ করতে পারছিল। 

উল্কাপিণ্ড থেকে পাওয়া লোহা ব্যবহার করে তৈরি বিভিন্ন বস্তু এর আগে তুরস্ক, গ্রিস, সিরিয়া, ইরাক, লেবানন, মিশর, ইরান, রাশিয়া ও চীনে পাওয়া গেছে। তবে এ ধরনের নিদর্শন আগে শুধু মধ্য ও পশ্চিম ইউরোপের দুটি স্থানেই আবিষ্কৃত হয়েছে, দুটিই পোল্যান্ডে। 

তবে এখন এই তিরের ফলাটির উৎস নিশ্চিত হয়ে গবেষকেরা মরিগেনকে এমন তৃতীয় এলাকা হিসেবে নিশ্চিত করেছেন। 

উল্কাপিণ্ডের উৎস
বিশেষজ্ঞরা আগে ভেবেছিলেন তিরের ফলাটিতে ব্যবহার করা লোহা এসেছে টুয়ানবার্গ উল্কাপিণ্ড থেকে, যেটি যেখানে তিরের ফলাটি পাওয়া যায় এর কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে পড়েছিল। কিন্তু গবেষণায় উঠে এসেছে, এখান থেকে তো নয়ই, এমনকি পোল্যান্ডে পড়া উল্কাপিণ্ড থেকেও আসেনি তিরের ফলার লোহা। 

একই ধরনের রাসায়নিক সংযুক্তির কেবল তিনটি উল্কাপিণ্ডের খবর আছে ইউরোপে। গবেষকেরা বলছেন, এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য জায়গাটি হচ্ছে এস্তোনিয়ার কালিজারভে। ১৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি সময়ে ওটার পতন হয়। আর এটি পড়ার পর অনেক ছোট খণ্ডে ভাগ হয়ে যায়। 

এই উল্কাখণ্ডগুলোর কিছু হয়তো পরে দক্ষিণ-পশ্চিমে সুইজারল্যান্ডে চলে আসে বিভিন্ন বাণিজ্য পথ ধরে, মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানান ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম অব বার্নের আর্থ সায়েন্সেস বিভাগের প্রধান এবং গবেষণাপত্রটির প্রধান লেখক বেডা হফম্যান। 

 ‘ব্রোঞ্জ যুগে ইউরোপজুড়ে বাণিজ্যের বিষয়টি একটি সুপ্রতিষ্ঠিত সত্য। বাল্টিক এলাকা থেকে অ্যাম্বার, কর্নওয়াল থেকে টিন, মিশর ও মেসোপটেমিয়া থেকে কাচের পুঁতি এভাবেই ছড়িয়ে পড়ে।’ ই-মেইলের মাধ্যমে জানান এই গবেষক। 

সুইস হ্রদগুলোর তীরে ব্রোঞ্জ যুগে বাস করা বেশির ভাগ মানুষ কৃষিকাজ, শিকার ও মাছ ধরতেন। তবে মরিগেনে ব্রোঞ্জ ঢালাইয়ের জন্য ছাঁচ খুঁজে পাওয়াসহ আরও কিছু প্রমাণ নিশ্চিত করে কিছু লোক বিশেষ দক্ষতা অর্জনের দিকেও মনোযোগী ছিলেন, জানান এই নারী গবেষক। 

এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয় জার্নাল অব আর্কিওলজিকেল সায়েন্সে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত