Ajker Patrika

বাস্তিল দুর্গের পতনের মাধ্যমে ফরাসি বিপ্লবের শুরু

আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৪, ১১: ১২
বাস্তিল দুর্গের পতনের মাধ্যমে ফরাসি বিপ্লবের শুরু

বাস্তিল দুর্গ ও কারাগারকে বিবেচনা করা হতো ফরাসি রাজাদের নিপীড়নের প্রতীক হিসেবে। রাজতন্ত্রের বিরোধী ব্যক্তিদের এখানে আটকে চালানো হতো অত্যাচার। ১৭৮৯ সালের এই দিনে, অর্থাৎ ১৪ জুলাই প্যারিসের বিপ্লবীরা দুর্গে প্রবেশ করে এবং পতন ঘটে বাস্তিলের। আর এর মাধ্যমেই সূচনা হয় ফরাসি বিপ্লবের।

১৭৮৯ সালের গ্রীষ্মে দ্রুত বিপ্লবের দিকে এগোতে থাকে ফ্রান্স। শত শত বছর ধরে নিপীড়নের শিকার ফরাসি জনগণের ভেতর জমা হওয়া ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এর মাধ্যমে। ফরাসি বিপ্লবের আগ পর্যন্ত দেশটির ৯৫ শতাংশ সম্পত্তির মালিক ছিলেন কেবল ৫ শতাংশ মানুষ। এমনকি এই বিপুল সম্পত্তির জন্য কোনো করও দিতেন না তাঁরা। 

প্যারিসে অবস্থিত বাস্তিল দুর্গের সামরিক গভর্নর বের্নাদ রেনে ইয়রদান দে লাউনাই ভয় পাচ্ছিলেন তাঁর দুর্গ বিপ্লবীদের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। তাই দুর্গের শক্তি বাড়ানোর অনুরোধ জানান রাজার কাছে। রাজা ষোড়শ লুইয়ের প্রাসাদ থেকে খুব দূরে ছিল না দুর্গটি। ১২ জুলাই রাজার নির্দেশে ২৫০ ব্যারেল গানপাউডার পাঠানো হয় বাস্তিলে। লাউনাই বাইরে অবস্থান করা তাঁর সেনাদের বিশাল দুর্গের ভেতরে নিয়ে আসেন। এ সময় পরিখার ওপরের দুটি ড্র ব্রিজ তুলে দেওয়া হয়, যেন এই সেতু ধরে দুর্গে প্রবেশ করতে না পারে বিপ্লবীরা।

১৪ জুলাই, ভোর। গাদাবন্দুক, তলোয়ারসহ বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিত বিক্ষুব্ধ জনতা বাস্তিলের চারপাশে জড়ো হতে শুরু করে। শুরুতে লাউনইয়ের লোকেরা জনতার স্রোতকে আটকে রাখতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু পিঁপড়ার মতো পিল পিল করে মানুষ বাস্তিলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে লউনই দুর্গের ওপরে আত্মসমর্পণের একটি সাদা পতাকা তুলে দিতে বাধ্য হন। তারপর বিপ্লবীসহ বিক্ষুব্ধ জনতা ভেতরে ঢুকে পড়ে দখল নেয় দুর্গের।

শিল্পীর আঁকায় বাস্তিল দুর্গে জনতা ঢুকে পড়ার দৃশ্যলাউনাই ও তার লোকদের আটক করা হয়। বাস্তিলের গোলাবারুদ ও কামান জব্দ করা হয় এবং ভেতরের সাত বন্দীকে মুক্ত করা হয়। হোটেল দ্যু ভিলে পৌঁছানোর পর, যেখানে লাউনাইকে একটি বিপ্লবী কাউন্সিলের মাধ্যমে গ্রেপ্তার এবং বিচার করার কথা ছিল। তবে উন্মত্ত জনতা তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং হত্যা করে।

বাস্তিল দখলকে প্রাচীন শাসনের সমাপ্তির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। এটি ফরাসি বিপ্লবকে অপ্রতিরোধ্য একটি গতি এনে দেয়। ফলাফল হিসেবে ১৭৯২ সালে ফ্রান্সে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়। সম্রাট ষোড়শ লুই এবং রানি মেরি আতোঁনেতকে ১৭৯৩ সালে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গিলোটিনে চড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। 

১৪ জুলাই দিনটি এখন ফ্রান্সের জাতীয় দিবস। বাস্তিল দিবস হিসেবেও এটি পরিচিত। 

সূত্র: হিস্ট্রি ডট কম, উইকিপিডিয়া

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত