Ajker Patrika

৯ বছরের শিশুকেও বন্ধ্যা করেছিল জাপান সরকার, অনুসন্ধানে ফাঁস

৯ বছরের শিশুকেও বন্ধ্যা করেছিল জাপান সরকার, অনুসন্ধানে ফাঁস

জাপানের পার্লামেন্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফাঁস হয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশটির ‘সুপ্রজনন’ আইনের অধীনে ৯ বছর বয়সী দুই শিশুকেও বন্ধ্যা করে দেওয়া হয়েছিল।

মঙ্গলবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিতর্কিত ওই আইনটি জাপানে ৪৮ বছর ধরে বলবৎ ছিল। এই সময়ের মধ্যে শারীরিক ও মানসিকভাবে অক্ষম এবং মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ধরে ধরে বন্ধ্যা করে দেওয়া হতো।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে চালু করা ওই আইনটি ১৯৯৬ সালে বাতিল করা হয়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার এ বিষয়ে জাপানের সংসদে ১৪ শ পৃষ্ঠার বহুল প্রতীক্ষিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এই অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিতর্কিত ওই আইনটির শিকার হয়েছিলেন অন্তত ২৫ হাজার নাগরিক। এর মধ্যে ১৬ হাজারের বেশি মানুষ জানতেনই না যে তাদের ক্ষেত্রে কী ঘটেছে। অনেককে এ বিষয়ে বলা হয়েছিল-তাদের অ্যাপেনডিক্স কেটে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি স্থানীয় সরকারগুলোর হাতেই এই আইন প্রয়োগ এবং অস্ত্রোপচারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯ বছর বয়সী যে দুই শিশুকে বন্ধ্যা করা হয়েছিল তাদের একজন ছেলে, অন্যজন মেয়ে।

এ ছাড়া ১৪ বছর বয়সে বন্ধ্যা করে দেওয়া সাবুরো কিটা নামে এক ব্যক্তির বয়স বর্তমানে ৮০ বছর। স্থানীয় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘রিপোর্টটি প্রমাণ করে যে-সরকার শিশুদের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল।’

সাবুরো মনে করেন, বিষয়গুলোকে গোপন না রাখার পাশাপাশি যারা এর শিকার হয়েছিলেন তাদের দুর্ভোগকে বিবেচনা করা উচিত সরকারের।

প্রতিবেদনটির সমালোচকরা বলছেন, আইনটি বাতিল করতে কেন প্রায় পাঁচ দশক পেরিয়ে গেছে তার কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। আর আইনটি তৈরির কারণও যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন দেশটির নাগরিকরা। এক টুইটার ব্যবহারকারী বলেছেন, ৯ বছরের শিশুদের বন্ধ্যাকরণের ঘটনা খুঁজে বের করা খুবই দুঃখজনক।

অন্য অনেকেই আইনটি বাতিল করতে দেরি করার জন্য সরকারের সমালোচনা করেছেন।

জানা যায়, ২০১৯ সালে এই আইনের জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছিল তৎকালীন শিনজো আবে সরকার। এ ছাড়া বন্ধ্যাকরণের শিকার হয়েছেন এমন বেঁচে থাকা প্রত্যেককে ৩২ লাখ করে ইয়েন মুদ্রা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছিল তখন।

জাপান ছাড়াও এ ধরনের বন্ধ্যাকরণ নীতি যেসব দেশে চালু হয়েছিল তার মধ্যে জার্মানি, সুইডেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে। তারাও বেঁচে থাকা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণও দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত