Ajker Patrika

বাইপোলার ডিসঅর্ডারে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ গুণ বেশি

আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০: ৪১
বাইপোলার ডিসঅর্ডারে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ গুণ বেশি

বাইপোলার ডিসঅর্ডারে  আক্রান্ত ব্যক্তিদের অল্প বয়সে মারা যাওয়ার ঝুঁকি স্বাভাবিকের তুলনায় অন্তত ৪ থেকে ৬ গুণ বেশি। এমনি যারা ধূমপান করেন তাদের চেয়েও অকালে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি বাইপোলার ডিসঅর্ডারে  আক্রান্তদের। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের হেলথ ক্লিনিকের একদল গবেষক বিষয়টি জানিয়েছেন। 

মনোবিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল সাইকিয়াট্রি রিসার্চে প্রকাশিত এক নিবন্ধের বরাত দিয়ে বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদমাধ্যম সায়েন্স অ্যালার্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের গবেষকেরা সব মিলিয়ে ১ হাজার ১২৮ জনের ওপর পর্যবেক্ষণ চালান। এদের মধ্যে বাইপোলার ডিসঅর্ডারে  আক্রান্ত ছিলেন ৮৪৭ জন এবং স্বাভাবিক ছিলেন ২৮১ জন। 

এর বাইরেও ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের গবেষকেরা এর আগে বিভিন্ন সময়ে চালানো একই ধরনের গবেষণা থেকে ১৮ হাজার ৫৬১ জনের ওপর প্রাপ্ত তথ্যও বিশ্লেষণ করেছেন নতুন করে। এই সাড়ে আঠারো হাজার জনের মধ্যে ১০ হাজার ৭৩৫ জনের বাইপোলার ডিসঅর্ডার ছিল এবং ৭ হাজার ৮২৬ জন ছিলেন স্বাভাবিক। 

গবেষকেরা এই দুই সেট তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলেছেন, ১০ বছর সময়কালের মধ্যে যারা বাইপোলার ডিসঅর্ডারে  আক্রান্ত তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা স্বাভাবিক আক্রান্ত ব্যক্তিদের তুলনায় অন্তত ৬ গুণ বেশি। তবে ৬০ বছর সময়সীমায় এই আশঙ্কা ২ দশমিক ৩ গুণ বেশি। আবার ধুমপায়ীদের তুলনায় বাইপোলার ডিসঅর্ডারে  আক্রান্তদের অকালে মৃত্যুর আশঙ্কা অন্তত আড়াই গুণ বেশি। 

মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও গবেষণা নিবন্ধের অন্যতম লেখক মেলভিন ম্যাকইনিস বলেছেন, ‘বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি কতটা বেশি তা দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুটি নমুনায় আমরা দেখেছি যে, বাইপোলার ডিসঅর্ডারে  আক্রান্তদের মৃত্যুর ঝুঁকি ধূমপায়ীদের চেয়ে অনেক বেশি।’ 

মেলভিন ম্যাকাইনিস আক্ষেপ করে আরও বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে ধূমপান প্রতিরোধ ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের বিষয়ে সচেতনতার জন্য সব ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সেই মাত্রায় কখনই প্রচার করা হয়নি।’ 

রয়্যাল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্ট বাইপোলার ডিসঅর্ডারের সংজ্ঞায় বলেছে, এই রোগটিকে ‘ম্যানিক ডিপ্রেসিভ ইলনেস’ বলা হয়। এটি বোঝায়, হঠাৎ করেই ব্যক্তির মেজাজ-মর্জি তীব্রভাবে পরিবর্তিত হয়। অন্য ভাষায় বলা যায়, তীব্র মুড সুইং হয়। এই অবস্থা সাধারণত বেশ কয়েক সপ্তাহ বা মাসব্যাপী স্থায়ী হয় এবং মানুষ সাধারণত যে ধরনের মানসিক উত্থান-পতনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায়, তার চেয়ে অনেক তীব্র হয়। 

গবেষকেরা বলছেন, বাইপোলার ডিসঅর্ডারে  আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিজের ক্ষতি করার ও আত্মহত্যার প্রবণতা স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় অনেক বেশি হয়। আর এ কারণে তাদের জীবনকাল অন্যদের তুলনায় গড়ে ৮ থেকে ১০ বছর কম হয়ে যায়। 

তবে বাইপোলার ডিসঅর্ডার মৃত্যুর প্রধান বা একমাত্র কারণ নয়, বরং বলা ভালো এর কারণে মানুষের অন্যদের তুলনায় মৃত্যুর প্রবণতা অনেক বেশি বেড়ে যায়। এ বিষয়ে বায়োমেডিকেল গবেষক ও এই গবেষণা নিবন্ধের প্রধান লেখক আনাস্তাসিয়া ইয়োকুম বলেছেন, ‘এটি ব্যক্তির মৃত্যুর একটি গৌণ কারণ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত