Ajker Patrika

ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে

ডা. জাহেদ পারভেজ
ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে

আয়নার দিকে তাকালেই মন খারাপ হয়। কারণ মুখ ভরে গেছে ব্রণে। লাল লাল, দানাদার, কোনোটি বেশ উঁচু। কিশোর ও তরুণদের একটা বড় দুশ্চিন্তা এই ব্রণ। কিছু কিছু সময় ছেলে ও মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই ব্রণের আক্রমণ বেশি দেখা যায়। কারও কারও পরিবারে এর বেশি প্রকোপের ইতিহাস রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কৈশোরে ব্রণ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। এটি এমনিতেই সেরে যায়। তবে কখনো কখনো সমস্যা বেশি প্রকট হয়ে ওঠে। তখন দানা বড় হয়, ভেতরে পুঁজ জমে, ব্যথা করে, সঙ্গে দেখা দেয় মানসিক অশান্তি।

ময়লা কিংবা তৈলাক্ত প্রসাধনী ব্যবহারের কারণে ত্বকের তেলগ্রন্থি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তখন ত্বকের ভেতরের দিকে তেল জমে তৈরি হয় ব্রণ। এটি হওয়ার পেছনে বয়স ও বংশগত কারণও থাকে।

কারণ
বাবা অথবা মা যে কারও কৈশোরে ব্রণের ইতিহাস থাকলে সন্তানেরও ব্রণ দেখা দিতে পারে। বয়ঃসন্ধি পর্যায়ে শরীরে হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে শরীরে সেবামের মাত্রা বাড়ে এবং মুখ, পিঠ, বুক ইত্যাদিতে ব্রণ দেখা দেয়। ধূমপান, অ্যালকোহল গ্রহণ এবং অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অপর্যাপ্ত ঘুম ইত্যাদি ব্রণ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। মানসিক চাপও ব্রণ হওয়ার কারণ হতে পারে। তৈলাক্ত প্রসাধনী ব্যবহারে ত্বকে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ত্রিশ থেকে চল্লিশ বছর বয়স্ক নারীদের মধ্যেও অনেক সময় প্রসাধনীর পরিবর্তন এবং তা মানানসই না হওয়ার কারণে ব্রণ দেখা দেয়। তা ছাড়া হরমোনজনিত বিষয়ও ব্রণের জন্য দায়ী।

প্রতিরোধ

  • খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন ব্রণ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। চিনি খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে। সবুজ শাক-সবজি খেতে হবে এবং শর্করাজাতীয় খাবার খাওয়ার মাত্রা কমাতে হবে। ভাজাপোড়া খেলে ব্রণ বাড়ে এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। দিনে কমপক্ষে তিন লিটার পানি পান করতে হবে।
  • তৈলাক্ত প্রসাধনী ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিটি পণ্যে ‘নন-কমেডোজেনিক’ লেখা আছে কি না, তা দেখে নিতে হবে। এটা ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে।
  • স্ট্রেস বা মানসিক চাপ ব্রণ বাড়িয়ে দেয়, তাই চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।
  • নখ দিয়ে ব্রণ খুঁটবেন না। নিজে নিজে চেপে পুঁজ বা রস বের করার চেষ্টা করবেন না। পিন দিয়েও ব্রণ খোঁচাবেন না। এতে স্থায়ী দাগ পড়ে যেতে পারে। তা ছাড়া এতে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। 

চিকিৎসা

  • পানি দিয়ে মুখমণ্ডল সব সময় পরিষ্কার রাখবেন। তবে দিনে বারবার ফেইসওয়াশ দিয়ে ধোয়া যাবে না।
  • ক্রিম বা মুখে খাওয়ার ওষুধ দিয়ে ব্রণের চিকিৎসা করা হয়। জেল বা ক্রিমে থাকা বেঞ্জয়েল পার-অক্সাইড ও রেটিনল মুখের ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। ব্রণের সমস্যা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ও রেটিনল গ্রহণ করতে হবে।
  • সমস্যা তীব্র না হলে চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু ক্রিম ব্যবহার করা যায়। আর যদি সমস্যা খুব বেশি হয় তাহলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • ব্রণ-পরবর্তী জটিলতা, যেমন ত্বকে গর্ত, স্থায়ী দাগ ইত্যাদি দূর করতে চিকিৎসকের পরামর্শে লেজার, ডার্মারোলা ইত্যাদি পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে।

ডা. জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক, ত্বক, চর্ম, যৌন ও হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত