Ajker Patrika

প্রক্রিয়াজাত খাবারে বছরে ১ লাখ ২৪ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬: ০৮
খাদ্যতালিকায় অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিমাণ প্রতি ১০ শতাংশ বাড়লে, যেকোনো কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি আনুমানিক ৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। ছবি: লংজেটিভি টেক
খাদ্যতালিকায় অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিমাণ প্রতি ১০ শতাংশ বাড়লে, যেকোনো কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি আনুমানিক ৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। ছবি: লংজেটিভি টেক

অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার বা ‘আলট্রা প্রসেসড ফুড’ (ইউপিএফ) বেশি খাওয়ার কারণে শুধু স্থূলতা, হতাশা, ডায়াবেটিস কিংবা হৃদ্‌রোগই নয়, বাড়ছে অকালমৃত্যুর ঝুঁকিও। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এ ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু ঘটছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান সাময়িকী ‘আমেরিকান জার্নাল অব প্রিভেন্টিভ মেডিসিন’-এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। আটটি দেশের প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করেন গবেষকেরা। এই বিশ্লেষণের মাধ্যমে গবেষকেরা দেখেন যে, খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিমাণ যত বাড়ছে, মৃত্যুঝুঁকিও তত বাড়ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, খাদ্যতালিকায় অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিমাণ প্রতি ১০ শতাংশ বাড়লে, যেকোনো কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি আনুমানিক ৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। এমনকি অল্প পরিমাণে খাওয়ার ক্ষেত্রেও এর প্রভাব স্পষ্ট।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। কারণ দিনে দিনে এ ধরনের খাবারের মানবস্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে নতুন প্রমাণ সামনে আসছে।

অতি-প্রক্রিয়াজাত খাদ্য হলো এমন ধরনের খাবার, যা প্রাকৃতিক উপাদানের চেয়ে বেশি পরিমাণে কৃত্রিম উপাদান ও কসমেটিক অ্যাডিটিভ (যেমন: রং, স্বাদ, সংরক্ষণকারী পদার্থ) দিয়ে তৈরি। এ ধরনের খাবারের সাধারণ উদাহরণ হলো—প্যাকেটজাত স্ন্যাকস, কারখানায় তৈরি পাউরুটি ও পেস্ট্রি, প্রক্রিয়াজাত মাংস, প্রস্তুত খাবার মিষ্টি দুধজাত পণ্য, সফট ড্রিংকস, জেলি।

ব্রাজিলের অসওয়ালডো ক্রুজ ফাউন্ডেশনের গবেষক ডা. এদুয়ার্দো অগুস্তো ফেরনান্দেস নিলসন বলেন, ‘এই খাবারগুলোতে সোডিয়াম, ট্রান্স ফ্যাট, ও চিনি ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন কৃত্রিম রঙ, সুগন্ধি, ইমালসিফায়ার ও সংরক্ষণকারী রাসায়নিক উপাদান, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এটি কেবল ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য নয়, সামগ্রিক জনস্বাস্থ্যের ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চিলি, কলম্বিয়া, মেক্সিকো, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য বিশ্লেষণ করে অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার কারণে জনসংখ্যার ওপর অকালমৃত্যুর সামগ্রিক প্রভাবও মূল্যায়ন করেন গবেষকেরা। এখানে অকালমৃত্যু বলতে ৩০ থেকে ৬৯ বছর বয়সে ঘটে যাওয়া মৃত্যুকে বোঝানো হয়েছে। বিভিন্ন দেশে এ ধরনের খাবার খাওয়ার মাত্রার ওপর ভিত্তি করে ফলাফলে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য দেখা গেছে। গবেষকেরা বলেন, যেসব দেশে খাদ্যতালিকায় ইউপিএফের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম (২০ শতাংশের নিচে), যেমন ব্রাজিল ও কলম্বিয়া, সেখানে অকালমৃত্যুর হারও তুলনামূলকভাবে কম (প্রায় ৪ শতাংশ)।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে যেখানে অর্ধেকের বেশি খাদ্যই ইউপিএফ, সেখানে অকালমৃত্যুর হার ১৪ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার পরিমাণ গত এক দশক ধরে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও তা এখনো অনেক বেশি। এদিকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে দিনে দিনে বাড়ছে এই প্রবণতা।

ডা. নিলসন বলেন, ‘সাম্প্রতিক এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, বৈশ্বিকভাবে এখনই কার্যকর নীতিমালা গ্রহণ করে মানুষের মধ্যে কম প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।’

তথ্যসূত্র: লনজেটিভি টেক

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত