Ajker Patrika

ডায়েটে কি শর্করা বাদ দেওয়া উচিত

মো. ইকবাল হোসেন 
ডায়েটে কি শর্করা বাদ দেওয়া উচিত

খাবার কাজে লাগিয়ে শরীরের কোষ যে শক্তি উৎপন্ন করে, তাই আমাদের চালিকাশক্তি। খাবারের প্রধান উপাদান ছয়টি—শর্করা, আমিষ বা প্রোটিন, স্নেহ-পদার্থ, ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ , খনিজ লবণ ও পানি। এগুলোর মধ্যে শর্করা ও স্নেহজাতীয় খাবার শরীরে শক্তি উৎপন্ন করে। আমিষ শরীর গঠনে সাহায্য করে। অন্যান্য খাদ্য উপাদান শরীরে ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ করে।

কিন্তু এখন ডায়েটের নামে অনেকে খাদ্যতালিকা থেকে শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এটি উচিত নয়। শর্করা খাওয়া বন্ধ করা সব সমস্যার সমাধান নয়। রোগীরাও সুস্থ থাকতে হয়তো শর্করা বাদ দিয়ে দেন। এ ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে ভালো লাগা অনুভূত হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা কষ্টে রূপান্তরিত হয়। তখন একটি সমস্যা লাঘব হলেও নতুন অনেক সমস্যা তৈরি হয়, যা যাপিত জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। তাই কোনো রোগের অজুহাতে খাবার থেকে শর্করা বাদ দেওয়া যাবে না। 

করণীয় কী
আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সবকিছুই মেপে করি, কিন্তু খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে খুব উদাসীন থাকি। সুস্বাদু হলে পরিমাণে বেশি খাই, না হলে খাই না। খাবার খাওয়া নিয়ে আমাদের এমন অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করতে হবে। খাবার সব সময় পরিমিত খেতে হবে। এমনকি পানিও অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না।

একইভাবে শর্করাও মেপে খেতে হবে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী শর্করা বাছাই করা শিখতে হবে। যেসব শর্করার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি, সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন চিনি, গুড়, গ্লুকোজ, ময়দা, সাদা আটা, নুডলস, আতপ চাল, চালের আটা বা এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। অন্যদিকে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স-সমৃদ্ধ খাবার, যেমন লাল আটা, লাল চাল, ওটস, বার্লি আটা, বার্লিফ্ল্যাক্স, পপকর্ন বা এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। অর্থাৎ খাবারের গুণাবলি ও পরিমাণ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে।

শর্করাজাতীয় খাবার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিলে যে শারীরিক সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে—

  • পেটের অসুখ হিসেবে ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।
  • কিডনিতে পাথর ও কিডনির অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • হৃদ্‌যন্ত্র দুর্বল হয়ে বিভিন্ন অসুখ হতে পারে।
  • পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
  • প্যানক্রিয়াস দুর্বল হয়ে ডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে।
  • থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
  • পরিপাকতন্ত্রের ক্ষমতা কমে গিয়ে হজমশক্তি নষ্ট হতে পারে।
  • চুল পড়া বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চর্মরোগ দেখা দিতে পারে।
  • ডায়াবেটিক ব্যক্তির হাইপোগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারে।
  • মেজাজ খিটখিটে, বমিভাব ও অনিদ্রা হতে পারে।

তাই যেকোনো সমস্যার সমাধান হিসেবে সবার আগে শর্করাজাতীয় খাবারের ওপরে ছুরি চালাবেন না। আপনার বয়স, ওজন, উচ্চতা ও শারীরিক শ্রমের ওপর ভিত্তি করে শর্করা খাবেন। প্রয়োজনে একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।

পরামর্শ দিয়েছনে: মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা  চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত