Ajker Patrika

আকুপ্রেশার করুন, প্যানিক ডিজঅর্ডারে সুস্থ থাকবেন

আলমগীর আলম
আকুপ্রেশার করুন, প্যানিক ডিজঅর্ডারে সুস্থ থাকবেন

আমরা যে ঘটনা সরাসরি কিংবা কোনো ডিভাইসে দেখি, সবকিছুই মনের ভেতরে জমে থাকে। সেগুলো বিশেষ মুহূর্তে চোখের সামনে ভেসে ওঠে। এর কারণে আমাদের মস্তিষ্কে তৈরি হয় উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, হতাশা, ভয় থেকে ভীতি রোগ, যাকে মেডিকেলের ভাষায় প্যানিক ডিজঅর্ডার বলে। এই সমস্যায় আকুপ্রেশার বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কয়েকটি গবেষণায় এর ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে।

বিখ্যাত জার্নালগুলোতে সেসব গবেষণার কথা প্রকাশিত হয়েছে। আকুপ্রেশার একধরনের বিকল্প ওষুধ। এটি উদ্বেগ কমানোসহ অন্যান্য চিকিৎসার পরিপূরক হতে পারে। দুশ্চিন্তার জন্য আকুপ্রেশার করলে স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে।

প্যানিক ডিজঅর্ডার বা প্যানিক রোগ একধরনের উদ্বেগজনিত মানসিক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে প্যানিক অ্যাটাক হয়।এ জন্য হঠাৎ করে তীব্র আতঙ্ক থেকে মৃত্যুভীতি দেখা যায়। এই রোগের কারণে ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস কমে যায় এবং স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর প্রতি হাজার মানুষে ২০ থেকে ৩০ জন প্যানিক ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হন।

ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের মধ্যে এই রোগ ২ থেকে ৩ গুণ বেশি। এটি যেকোনো বয়সে হতে পারে। তবে নবীন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। প্যানিক ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত মানুষের অর্ধেকের মধ্যে একই সঙ্গে অ্যাগোরাফোবিয়া নামে আরেকটি সমস্যা থাকে। 

এই সমস্যা হলে কী হয় 
কোনো কারণ ছাড়া প্রচণ্ড ভয়, আতঙ্ক বা অস্বস্তি দিয়ে শুরু হয় প্যানিক ডিজঅর্ডার। কয়েক মিনিটে তীব্র আকার ধারণ করে। এটি সাধারণত ৩০ মিনিট স্থায়ী হয়। কিছু ক্ষেত্রে ১ ঘণ্টার বেশি থাকতে পারে। তীব্র আতঙ্কের এ রকম আক্রমণই হলো প্যানিক অ্যাটাক। 

 লক্ষণ

  • বুক ধড়ফড় করা, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, হৃৎপিণ্ড বুকের মধ্যে লাফাচ্ছে এমন মনে হওয়া
  • শরীর ঘেমে যাওয়া
  • হাত বা শরীর কাঁপতে থাকা
  • শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি বেড়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
  • দম বন্ধ হয়ে আসা
  • বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি হওয়া
  • বমি বমি ভাব বা পেটে অস্বস্তি হওয়া
  • মাথা ঝিমঝিম করা, মাথা হালকা লাগা, মাথা ঘোরানো, পড়ে যাচ্ছে বা জ্ঞান হারাচ্ছে এমন অনুভূতি হওয়া
  • প্রচণ্ড গরম বা ঠান্ডার অনুভূতি হওয়া
  • হাত-পা ঝিনঝিন করা বা অবশ হয়ে যাওয়া
  • নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর অনুভূতি হওয়া
  • মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ার অনুভূতি হওয়া
  • মরে যাওয়ার অনুভূতি হওয়া বা ভয় পাওয়া

কেন হয়
বেশ কিছু গবেষণায় জানা গেছে, মস্তিষ্কের বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক পদার্থ, যেমন সেরাটোনিন, নরএপিনেফ্রিন, গামা অ্যামিনো বিউটাইরিক অ্যাসিড (গাবা) ইত্যাদির স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কারণে প্যানিক অ্যাটাক হয়ে থাকে। 

কী করতে হবে
অনেক ক্ষেত্রে প্যানিক অ্যাটাক শুরু হওয়ার আগেই একটু অস্বস্তি লাগা শুরু হয়। এ সময় শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম বা ব্রিদিং এক্সারসাইজ শুরু করতে হবে। তাতে উদ্বেগ এবং শারীরিক লক্ষণগুলোর তীব্রতা অনেকাংশে কমে আসে। তারপর নিয়মিত আকুপ্রেশার করতে হবে। 

আকুপ্রেশারের জন্য যা করবেন
আকুপ্রেশার করার জন্য ছবিতে চিহ্নিত পয়েন্টগুলোতে পালাক্রমে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে চাপ দিতে হবে। প্রতিদিন সকালে ও রাতে দুইবার দুই মিনিট করে পয়েন্টগুলোতে বেশ ভারী চাপ দিতে হবে। সপ্তাহে ৬ দিন এই নিয়মে আকুপ্রেশার করতে হবে। এক দিন বিশ্রাম।

একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, প্যানিক অ্যাটাক কোনো শারীরিক রোগ নয়। এটি এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। ভয় দূর করার জন্য যে কাজটি করতে ভয় হয়, সেটি বারবার করতে হবে। প্যানিকে যাঁরা থাকেন, তাঁদের অনেকে লিফটে চড়তে ভয় পান। বারবার লিফটে চড়া ‍শুরু করলে দেখবেন, একসময় ভীতি কমে গেছে। আর আকুপ্রেশার করলে দীর্ঘ মেয়াদে ভালো 
থাকা সম্ভব।

পরামর্শ দিয়েছেন:  আলমগীর আলম,খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ প্রধান নির্বাহী. প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত