Ajker Patrika

সুকুমার রায়

সম্পাদকীয়
সুকুমার রায়

ক্ষণজন্মা শব্দটা আমরা না ভেবেই অনেকের সম্পর্কে প্রয়োগ করে থাকি। কিন্তু সত্যিই কিছু মানুষ আছেন, তাঁরা যেন শব্দটাকে সংজ্ঞায়িত করেন। বাঙালি সমাজে তেমন একজন হলেন সুকুমার রায়। স্বল্প দৈর্ঘ্যের জীবন, কিন্তু বিপুল ও বৈচিত্র্যময় কর্মভান্ডার তাঁর।

তিনি একাধারে ছড়াকার,  শিশুসাহিত্যিক,  রম্য রচনাকার,  প্রাবন্ধিক ও নাট্যকার। চমৎকার ছবিও আঁকতে পারতেন। তিনি ছিলেন ননসেন্স ছড়া লেখক এবং ছাপাখানার নতুন ধারার প্রবর্তক। ফটোগ্রাফি বিষয়ে গভীর জ্ঞানের অধিকারী, দক্ষ পত্রিকা সম্পাদক এবং আজব সব লেখালেখির সৃষ্টিকর্তা। তাঁর বাবা জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী এবং তাঁর পুত্র খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়।

পদার্থ ও রসায়ন বিষয়ে ডাবল অনার্স নিয়ে বিএ পাস করেন। এরপর গুরুপ্রসন্ন বৃত্তি পেয়ে ফটোগ্রাফি ও ছাপাখানার প্রযুক্তিবিদ্যায় উচ্চশিক্ষার জন্য ১৯১১ সালের অক্টোবরে ইংল্যান্ডে যান। বিলেতে গিয়ে ছাপার প্রযুক্তি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ জ্ঞান অর্জন করেন। বঙ্গ দেশে তিনিই প্রথম হাফটোন প্রযুক্তিতে ছবি ছাপার ব্যবস্থা করেন। ১৯১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ‘ফেলো অব দ্য রয়্যাল ফোটোগ্রাফিক সোসাইটি’ উপাধি নিয়ে দেশে ফেরেন।

মাত্র আট বছর বয়সে শিবনাথ শাস্ত্রীর ‘মুকুল’ পত্রিকায় তাঁর লেখা ‘তাতার নদী’ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। পরের বছর দ্বিতীয় কবিতা ‘টিক্ টিক্ টং’। তবে লেখালেখিতে নিয়মিত হন বাবার প্রকাশিত পত্রিকা ‘সন্দেশ’-এ লেখার মাধ্যমে। এরপর  ‘প্রবাসী’ ও ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন।

সুকুমার রায়ের প্রথম প্রকাশিত বই  ‘আবোল তাবোল’। অন্যান্য জনপ্রিয় বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘হ-য-ব-র-ল’, ‘হেশোরাম হুঁশিয়ারের ডায়েরি’, ‘পাগলা দাশু’, ‘অবাক জলপান’ ইত্যাদি। বাংলা শিশুসাহিত্যে নবজাগরণ এনেছিল তাঁর লেখা।

প্রেসিডেন্সিয়াল কলেজে পড়াকালীন তিনি গড়ে তুলেছিলেন ‘ননসেন্স ক্লাব’। এই ক্লাব থেকে প্রকাশ করতেন ‘সাড়ে বত্রিশ ভাজা’ নামে একটি পত্রিকা। ইংল্যান্ড থেকে ফিরে ‘মান ডে ক্লাব’ নামে একটি সাহিত্য-আসরও প্রতিষ্ঠা করেন।

ক্ষণজন্মা এই মানুষটি  ১৮৮৭ সালের ৩০ অক্টোবর কলকাতার এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তাঁর আদি নিবাস ময়মনসিংহের মসুয়া গ্রামে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত