Ajker Patrika

মেহেরপুরে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি

মুস্তাফিজুর রহমান, মেহেরপুর
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২১, ১০: ২০
মেহেরপুরে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি

আসন্ন দুর্গাপূজা ঘিরে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন মেহেরপুরের প্রতিমা কারিগরেরা। কেউ কাদা মাটির তৈরি প্রতিমার শরীরে মাটির শেষ আঁচড় দিচ্ছেন। কেউ আবার রং তুলির আঁচড়ে প্রতিমাকে মনের মত করে ফুটিয়ে তোলার কাজ করছেন। করোনার কারণে এবার সরকারি বিধিনিষেধ মেনে সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব পালন করতে পারবেন বলে আশা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের।

এবার জেলার তিন উপজেলায় ৪৩টি মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। কারিগরদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক ও অনিষ্টকারী অসুর সহ বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি। মেহেরপুর জেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বোস জানান, ৬ অক্টোবর মহালয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। মূলপর্ব শুরু হবে ১১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে। ১৫ অক্টোবর শুক্রবার শুভ বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব।

জেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বেশির ভাগ মানুষের আর্থিক দৈন্য ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এবার কমেছে পূজামণ্ডপের সংখ্যা। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিমা তৈরিসহ আনুষঙ্গিক খরচ বেড়েছে কয়েক গুন। কমেছে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। তাই দিন দিন মণ্ডপ ও দেবী আকার ছোট হয়ে আসছে। চলতি বছরে মণ্ডপের সংখ্যা কমলেও স্বল্প সাধ্যের মধ্যেই উৎসব আয়োজনের ঘাটতি নেই। অসুর বিনাশী দেবীর এই আগমন উপলক্ষে সাধ্যমতো আয়োজন সম্পন্ন করার প্রাণান্তর চেষ্টা হিন্দুধর্মাবলম্বীদের। তাঁদের মতে, ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী পুরুষ উত্তম মাসে নির্ধারিত সময়ের এক মাস পরে দুর্গা পূজার আয়োজন করা হয়। তাই সে সময়টি পেরিয়ে দরজায় কড়া নাড়ছে দুর্গোৎসব। আর কদিন পরই ঢাকের আওয়াজে মুখরিত হবে এই উৎসব। রামচন্দ্রের মত পূজা অর্চনার মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে খুশি করে অসুর নিধনের মাধ্যমে শক্তি জাগ্রত করে শুভ শক্তির সূচনা করতে পারলেই দেশের ও দশের জন্য মঙ্গল। সব ধর্মের মানুষ উৎসব মুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব পালন করতে পারবে বলে মত পূজা উদ্‌যাপন কমিটির।

প্রতিমা কারিগর সুশান্ত মালাকার বলেন, ‘ফরিদপুর থেকে প্রতিবার মেহেরপুর আসি প্রতিমা তৈরির কাজে। একটা মণ্ডপ তৈরিতে একাধিক পুরোহিত মালাকার লাগে। এবার তাঁরা আসতে চাচ্ছেন না। পূজা তৈরির প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। বেড়েছে খরচ। তারপর দেখা দিয়েছে নানা আতঙ্ক। পূজায় খরচ বেড়ে যাওয়ায় মণ্ডপ কমে যাওয়ায় তাদের পারিশ্রমিকও কমে গেছে। আগে একটা মণ্ডপ তৈরি করে ৬০ হাজার টাকা পারিশ্রমিকও এবার কম। এ কারণে অনেক প্রতিমা কারিগর এবার বেকার পড়ে আছেন। এরপরও পুণ্য লাভের আসায় বাপ দাদার এই পেশা ধরে রেখেছেন কারিগরেরা।’

শহরের নায়েববাড়ি মন্দিরের পুরোহিত জিৎ গাঙ্গুলি বলেন, ‘এবার পুরুষ উত্তম মাসের কারণে পূজা একটু পিছিয়ে গেছে। তারপরেও প্রতি বছরের মত এ বছরও মাকে বরণ করার প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে। আশা করছি মা পৃথিবীতে শান্তি স্থাপন করে দোলায় ফিরে যাবেন।

মেহেরপুর পুলিশ সুপার রাফিউল আলম বলেন, ‘পূজার আনন্দকে নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। এ ছাড়া আনসার ভিডিপিকে কাজে লাগানো হবে। মেহেরপুরে কোনো পূঁজামন্ডপকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির মধ্য দিয়ে প্রতিবারের মত এবারও পূজা উদ্‌যাপন হবে।,

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফোন-ইন্টারনেট ভাতা পাচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের সব কর্মচারী

এস আলমের জামাতার পেটে ৩৭৪৫ কোটি টাকা

ভাড়া বাড়িতে চলা ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

পিপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ৪৯ জন সহকারী পিপির

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত