Ajker Patrika

উপহারের অর্ধেক ঘরে তালা

মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৬: ২২
উপহারের অর্ধেক ঘরে তালা

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের অর্ধেকের বেশি ঘরে তালা ঝুলছে। থাকছেন না বরাদ্দ প্রাপ্তরা। উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪০টি ঘরের মধ্যে ১৬টিতে লোকজন বসবাস করেন। বাকি ঘরে এখন খড়কুটো ও গরু-ছাগল রাখা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, বরাদ্দ পাওয়ার পরও যারা সরকারি ঘরে থাকছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের দেওয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর এলাকায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক পাশে ১২টি অন্য পাশে ২৮টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ১২টির মধ্যে ৬টি পরিবার বসবাস শুরু করলেও এখনো ঘরে ওঠেনি ৬টি পরিবার। বাকি ৬টি ঘর তালা বদ্ধ। অপর পাশে ২৮টি ঘরের মধ্যে ১০টি ঘরের মালিক পরিবার নিয়ে বসবাস করলেও ১৮টি ঘর তালাবদ্ধ। নির্মাণ করা কয়েকটি ঘরের দেওয়াল ও মেঝেতে ফাটল ধরেছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারীরা জানান, তালাবদ্ধ করে বেশির ভাগ লোকজনই চলে গেছে। তাদের নিজ বাড়িতে কেউ থাকেন আবার কেউ থাকেন ঢাকায়। এমনও আছেন শুধু মাত্র ঘরে তালাবদ্ধ করে চলে গেছেন আর কখনো আসেনি। এ জন্যই বেশির ভাগ ঘরই ফাঁকা পড়ে আছে।

জায়গা কম থাকলেই কেউ ফাঁকা ঘর গুলোয় খড়কুটো ও গরু ছাগল বাঁধছেন। ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের দেওয়ালে ফাটল ধরেছে এবং ঘরের মাঝে ইঁদুরের গর্ত দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন আশ্রয়ণের বাসিন্দারা।

আশ্রয়ণ কেন্দ্রে বসবাসকারী আল আমিন বলেন, যাতায়াতের পথ নেই, মানুষের বাড়ির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বৃষ্টি হলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। পানি জমে যাতায়াত করাসহ আরও ও অনেক সমস্যার বেশি সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় এক নারী বলেন, যারা ঘর পেয়েও সেখানে থাকছেন না তাদের আগে থেকেই বড় বড় ঘরবাড়ি রয়েছে। তাই তারা এখানে থাকছেন না। শুধু দখলে রেখেছেন মাত্র। এই এলাকাতেই ভূমিহীন অনেকে আছে। আরও একজন বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশেই বসবাসকারী এক নেতার দুই ছেলের নামে এ প্রকল্পে দুইটি ঘর বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু তারা সেখানে কেউ থাকেন না। কারণ তাদের আগে থেকেই বড় বড় ঘর রয়েছে। রয়েছে গরু মহিষ ও বিঘায় বিঘায় আবাদি জমি।

শ্যামপুরের স্থানীয়দের দাবি, আশ্রয়ণ প্রকল্পে যারা ঘর নিয়ে বসবাস করে না, তাদের পরিবর্তিতে এলাকায় অনেক ভূমিহীন ও দরিদ্র লোকজন রয়েছে। তাদেরকে যেন দেওয়া হয়।

এদিকে উপজেলার চরপলিশা এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সকল সুযোগ-সুবিধা থাকলেও যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। প্রকল্পের ২৫টি ঘরের মধ্যে মাত্র চারটি টিউবওয়েল দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত টিউবওয়েল না থাকায় ভোগান্তির কথাও বলেন তারা।

মো. আজগার আলী নামে এক ব্যক্তি বলেন, রাস্তা না থাকলে খেতের আইল দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে এক বছর ধরে থাকতেছি। এই শীতের মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পে কেউ একটা সহযোগিতা পাইনি। শীতের মধ্যে খুব কষ্টে থাকতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শফিকুল ইসলাম বলেন,‘আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিদ্যুৎসহ সকল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া ঘরের উপকারভোগীদের বিষয়ে তথ্য নেওয়া হয়েছে। যারা ঘরগুলোতে থাকতে চায় না তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের বরাদ্দ দেওয়া হবে। আর যাতায়াতের সমস্যা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ‌সমাধান করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

কোটি টাকা ‘ভর্তুকি’র জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাংলাদেশ যা পেল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত