Ajker Patrika

২০০ লেভেল ক্রসিংয়ের ১০৫টিই অরক্ষিত

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২২, ১৮: ২১
২০০ লেভেল ক্রসিংয়ের ১০৫টিই অরক্ষিত

একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনায় লাশের সারি লম্বা হচ্ছে। ময়মনসিংহে চলতি বছরে ট্রেন দুর্ঘটনায় ৩১ জনের প্রাণ গেছে। পুলিশ বলছে, জনসাধারণের অসাবধানতার কারণেই দুর্ঘটনা হচ্ছে। এদিকে স্থানীয় জনগণ বলছে, দুর্ঘটনা রোধে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং সংরক্ষণের পাশাপাশি লোকবল বাড়াতে হবে।

রেল বিভাগের তথ্যমতে, ময়মনসিংহ রেলওয়ে অঞ্চলে ২০০টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে ১০৫টি অরক্ষিত। ৭০টির মতো লেভেল ক্রসিংয়ে তিনজন করে গেটম্যান রয়েছে। বাকিগুলোতে লোকবলের ঘাটতি রয়েছে। রেলওয়ে থানা ময়মনসিংহের উপপরিদর্শক মির্জা মো. মুক্তা জানান, ‘চলতি বছর ময়মনসিংহে ট্রেন দুর্ঘটনায় ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২০ সালে এ সংখ্যা ছিল ৩৬; ২০২১ সালে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৪২ জনের। এসব দুর্ঘটনায় মামলা হয়েছে ৭৮টি।’

সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রেন চলাচলের সময় বেশির ভাগ লেভেল ক্রসিংগুলোতে একপাশে ব্যারিয়ার ফেলে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। অথচ ক্রসিংয়ের দুই পাশেই ব্যারিয়ার ফেলে যানবাহন আটকানোর নিয়ম রয়েছে। ব্যারিয়ার না ফেলায় ট্রেন কাছাকাছি এলেও মানুষকে চলাচল করতে দেখা যায়। যে কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে মনে করেন চলাচলকারীরাও। নগরীর মিন্টু কলেজ লেভেল ক্রসিং দিয়ে চলাফেরা করেন আবু আসলাম। তিনি আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ময়মনসিংহ নগরী এমনিতেই যানজটের নগরী। ট্রেন আসার কমপক্ষে ১৫ মিনিট আগে গেট ব্যারিয়ার ফেলা হয়। আবার একটি ব্যারিয়ার নষ্ট। এতে করে অনেকেই আগে আগে যেতে ঝুঁকি নিয়ে রওনা হন; যে কারণে অনেক দুর্ঘটনা হয়।

নাটক ঘরলেনের রাসেল মিয়া বলেন, গত ২৫ জুলাই হেঁটে রেললাইন পার হওয়ার সময় মাঈন উদ্দিন নামে একজন ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। জনসাধারণ সচেতন না হলে শুধু কর্তৃপক্ষকে দোষ দিলে হবে না।

পাটগুদাম ব্রিজ মোড় লেভেল ক্রসিংয়ের গেটম্যান আতিকুল হক বলেন, ‘তিন বছর ধরে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে একটি গেট ব্যারিয়ার অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ট্রেন খুব কাছে চলে এলেও মোটরসাইকেলসহ অন্য ছোট ছোট গাড়ি পার হতে চায়। নির্দেশনা শোনে না তারা। তবে এটা সত্যি, দুটি ব্যারিয়ার ঠিক থাকলে লোকজন এমনটা করতে পারত না।’

ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনসংলগ্ন লেভেল ক্রসিংয়ের গেটম্যান আতিকুর রহমান বলেন, ‘লেভেল ক্রসিংটি স্টেশনের খুব কাছে হওয়ায় ট্রেনের চাপ একটু বেশি। অথচ তিনজনের জায়গায় এখানে আমরা দুজন গেটম্যান আছি। ১০ ঘণ্টা ডিউটি করলেও কাজ শেষ হয় না।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, ‘ময়মনসিংহে রেলের এমন দুরবস্থা হওয়াটা দুঃখজনক। প্রায়ই শুনি, ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে। তারপরও লোকজন সচেতন হচ্ছে না। অন্যদিকে রেল কর্তৃপক্ষেরও উচিত নিরাপত্তা নিয়ে ভাবা। ক্রসিংগুলো যাতে করে অরক্ষিত না থাকে।’

বাংলাদেশ রেলওয়ে ময়মনসিংহের সহকারী প্রকৌশলী নারায়ণ প্রসাদ সরকার বলেন, রেলওয়ের ময়মনসিংহ জোন হচ্ছে ময়মনসিংহ থেকে শ্রীপুর, বিদ্যাগঞ্জ, মোহনগঞ্জ, আঠারোবাড়ি, জারিয়া জাঞ্জাইল। এর মধ্যে ২০০টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে ১০৫টি অরক্ষিত। ৫০টির দুই পাশে কোনো ব্যারিয়ার নেই, গেটম্যানও নেই। বাকি ৫৫টির কোনোটিতে তিনজনের জায়গায় গেটম্যান আছেন দুজন। আবার কিছু কিছু জায়গায় একপাশে নেই কোনো ব্যারিয়ার।

নারায়ণ প্রসাদ আরও বলেন, এলজিইডির প্রতিনিধিদল ইতিমধ্যেই কিছু জায়গা পরিদর্শন করেছে। তা ছাড়া, পর্যাপ্ত গেটম্যান ও দুপাশে নিরাপত্তা ব্যারিয়ার নিশ্চিত করতে রেলওয়ে কাজ শুরু করেছে। এটাও ঠিক, জনসাধারণকেও সচেতন হতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এবার ‘পাকিস্তানপন্থার’ বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ মাহমুদ

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

বাহাত্তরের সংবিধান, জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা নিয়ে আইন উপদেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

চাকরিতে কোটা: সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আসছে সমান সুযোগ

পাকিস্তানের ভয়ে যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রকাশ করতে চায় না ভারত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত