Ajker Patrika

‘২০ বছর পর মনে পড়বে আমার কথা’

রানা আব্বাস, ডালাস থেকে
‘২০ বছর পর মনে পড়বে আমার কথা’

লম্বা ভ্রমণ শেষে বিসিবির প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু গত পরশু ডালাসে পৌঁছার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চলে এলেন টিম হোটেল থেকে ১০ মাইল দূরের মাসটাং ক্রিকেট একাডেমিতে, যেখানে অনুশীলন করছে বাংলাদেশ দল।

প্রথমবারের মতো ডালাস দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে লিপু বলছিলেন, ‘এখানে নেমেই টেক্সাসের বিখ্যাত কাউবয় আর আশির দশকের সেই বিখ্যাত টিভি সিরিজ “ডালাস”-এর কথা মনে পড়ছিল বারবার।’ অতীত থেকে যখন তিনি বর্তমানে ফিরলেন, তখন তাঁর মুগ্ধতা মাসটাং ক্রিকেট একাডেমি নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট ইতিহাস সমৃদ্ধ না থাকার পরও এখানকার ক্রিকেটীয় অবকাঠামো দেখে লিপু বেশ মুগ্ধ।

একটা গুদামঘরের মধ্যে এত আধুনিক ক্রিকেটীয় সুযোগ-সুবিধা, যেটা আইসিসির পূর্ণ সদস্য বাংলাদেশেও দেখা যায় না। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এই যে বিশাল ইনডোর ফ্যাসিলিটিজ, যেটি তৈরি মূলত খুদে ক্রিকেটারদের জন্য—এটা মোটেও যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ড কিংবা কোনো সরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত নয়। ব্যক্তিমালিকানায় গড়ে ওঠা এই বিশাল ইনডোর ভাড়া দেওয়া হয় আগ্রহী ক্লাব কিংবা দলের জন্য। এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডালাসে আসা দলগুলো যেমন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে অনুশীলন চালিয়ে যেতে বেছে নিয়েছে এই মাসটাং ক্রিকেট একাডেমি। অনুশীলনেই শেষ নয়, কেউ কেউ তো একাডেমির দোকান থেকে খেলার সরঞ্জামাদিও কিনছেন।

অনুশীলন দেখার ফাঁকে প্রধান নির্বাচক ও তাঁর সঙ্গে থাকা বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুসকে যখন ‘কথা’ বলার অনুরোধ করছিলেন বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমকর্মীরা; তখন লিপু পরামর্শ দিলেন, তাঁদের কথা নয়, বরং এই একাডেমি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে। বিসিবির প্রধান নির্বাচক বললেন, ‘এটা দেখে রাখুন ভালো করে। এদের যে ফ্যাসিলিটিজ গড়ে উঠছে, ২০ বছর পর আবার এখানে এলে আমার কথা মনে পড়বে আপনাদের।’

যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটের বিস্তারে উপমহাদেশের প্রবাসীরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এর অগ্রভাগে আছেন ভারতীয়রা। দিনে দিনে যেভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট, মাইনর লিগ বেড়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রে, ক্রিকেট নিয়ে আশাবাদী হওয়ার অনেক উপকরণ খুঁজে পাচ্ছে আইসিসি। গত পরশু দুটি ম্যাচের কথাই ধরুন। বার্বাডোজে ইংল্যান্ড-স্কটল্যান্ডের ম্যাচে গ্যালারি যখন খাঁ খাঁ করছে, ডালাসে তখন নেদারল্যান্ডস-নেপালের ম্যাচে পরিপূর্ণ গ্যালারি। আর দর্শকদের বেশির ভাগই নেপালি। দক্ষিণ এশিয়ার দর্শকদের এই উন্মাদনা দেখে মনে হতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভেন্যুতে নকআউট পর্বের একটা ম্যাচও আয়োজন করতে পারত আইসিসি।

মাসটাং ক্রিকেট একাডেমি থেকে যখন অনুশীলন শেষে টিম বাসে উঠবেন সাকিব-তাসকিনরা, তাঁদের কাছে তখন একঝাঁক ক্রিকেটারের সই শিকার আর ছবি তোলার আবদার। সাকিব-তাসকিন তা হাসিমুখেই মেটালেন। ‘ল্যান্ড অব অল ইমিগ্র্যান্টস’-এর যুক্তরাষ্ট্রে এ খুদে ক্রিকেটাররাই হয়তো ভবিষ্যতে উত্তর আমেরিকার ক্রিকেট বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত