Ajker Patrika

ধর্মঘটে অচল বেনাপোল স্থলবন্দর

বেনাপোল প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২২, ১০: ২২
ধর্মঘটে অচল বেনাপোল স্থলবন্দর

কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলা, বাতিল করা সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স প্রত্যাহারসহ ৩ দফা দাবিতে ৫টি সংগঠনের কর্মবিরতিতে অচল হয়ে পড়েছে দেশের শীর্ষ স্থলবন্দর বেনাপোলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। এতে গত দুই দিনে প্রায় শতকোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে সরকারের। পণ্য খালাস নিতে না পারায় ব্যবসায়ীরাও বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

গতকাল রোববার সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু হওয়ায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এতে বন্দরের দুপাশে কয়েক হাজার পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে।

সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ২ মার্চ ভারত থেকে বন্ড লাইসেন্সের (শুল্কমুক্ত) মাধ্যমে আমদানি করা ডেনিম ফেব্রিকসের দুটি চালান বহনকারী ভারতীয় ট্রাক থেকে আমদানি নিষিদ্ধ ফেনসিডিল, বিস্ফোরকদ্রব্য, সিগারেট, কারেন্ট জাল, শাড়ি, থ্রি-পিসসহ বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য জব্দ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

ভারত থেকে বৈধ পণ্যের সঙ্গে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীকে দায়ী করে লাইসেন্স বাতিল ও মামলার প্রতিবাদে গত দুই দিন ধরে চলছে বেনাপোল বন্দরে কর্মবিরতি। এতে আমদানি, রপ্তানি বাণিজ্য ও পণ্য খালাস কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অচলাবস্থার মধ্যে পড়েছে বাণিজ্যিক কার্যক্রম। মামলা ও লাইসেন্স বাতিল আদেশ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে বৈধ পণ্যের সঙ্গে সম্প্রতি মাদক প্রবেশ বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি তাঁদের। তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে যখনই তারা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চায়, তখনই একটি পক্ষের বাধার মুখে পড়তে হয়।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় স্থলপথে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে সিংহভাগ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। এ বাণিজ্য থেকে প্রতিদিন সরকারের প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। তবে বৈধ পথে আমদানি পণ্যের ট্রাকে একটি চক্র সম্প্রতি মাদক নিয়ে আসায় অভিযোগের তির থাকে ব্যবসায়ীদের দিকে।

গত বুধবার ভারত থেকে ফেব্রিকসবাহী একটি ট্রাকে এক হাজার বোতল ফেনসিডিল, বিপুল পরিমাণ সিগারেট, বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ বিভিন্ন আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য আসে বেনাপোল বন্দরে। এ ঘটনায় কাস্টমস সদস্যরা সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীদের দায়ী করে দুটি পণ্য ছাড়কারী প্রতিষ্ঠান সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স বাতিল ও এক সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীর নামে মামলা করেন।

বাতিল সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স বেনাপোলের শিমুল ট্রেডিং এজেন্সি ও আইডিএস গ্রুপ লিমিটেড। আমদানিকারক ছিল অনন্ত ডেনিম টেকনোলজি ও ফ্যাশন ফোরাম লিমিটেড। মামলার আসামি হয়েছেন সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী সামসুল হক। তবে এ ধরনের শাস্তিমূলক আচরণকে ন্যায়বিচারপরিপন্থী বলে অভিযোগ করে তারা। তাই মামলা ও লাইসেন্স বাতিল আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল থেকে কর্মবিরতির ডাক দেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা। ফলে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়।

পণ্য বহনকারী ট্রাকচালকেরা জানান, ব্যবসায়ীদের কর্মবিরতিতে শত শত ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়েছে বন্দরে। প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করে দ্রুত বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালু করতে হবে।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, বৈধ পণ্যের সঙ্গে বন্দরে মাদক আনছেন ভারতীয় ট্রাকচালকেরা এতে সাধারণ ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এসব ঘটনায় কোনো সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী বা আমদানিকারক জড়িত না।

আমদানি-রপ্তানি পণ্যের রাজস্ব আহরণকারী বেনাপোল সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার মো. আকতার ফারুক জানান, আমদানি পণ্য থেকে প্রতিদিন সরকারের প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আসে। তবে কর্মবিরতির কারণে রাজস্ব আয় শূন্যের কোঠায় নেমেছে।

এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার আবদুর রশিদ মিয়া জানান, যে ট্রাকে বৈধ পণ্যের আড়ালে মাদক আনা হয়েছে ওই ট্রাকটি বন্দরের শেডে খালাস হয়নি। এ ধরনের ট্রাকে অবৈধ মালামাল পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিতেই হবে। তবে বৈধ ব্যবসায়ীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেদিকে লক্ষ রাখা হবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাজেদুর রহমান বলেন, এখানে নিরপরাধ ব্যবসায়ীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তিনি জানান, মামলা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুরোনো রাউটার ফেলে না দিয়ে যে কাজে ব্যবহার করতে পারেন

পাকিস্তানের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার সামনে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে ভারত: ব্রিটিশ বিশ্লেষক

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

প্রশাসনিক আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ ভুল, আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধ সঠিক: বিএনপি

প্রথম ভাষণে গাজা প্রসঙ্গে যা বললেন পোপ লিও চতুর্দশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত