Ajker Patrika

কুসিক ভোটকে দৃষ্টান্ত মেনে এগোতে চায় আ.লীগ

তানিম আহমেদ, ঢাকা
আপডেট : ১৮ জুন ২০২২, ০৮: ৪১
কুসিক ভোটকে দৃষ্টান্ত মেনে এগোতে চায় আ.লীগ

দলীয় কোন্দলের কারণে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) প্রথম দুই নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সেই বিরোধ মিটিয়ে তিনবারের চেষ্টা গোমতি তীর পাড়ে ভিড়ল নৌকা। দলটির নেতাদের দাবি, কুসিক নির্বাচন তাঁদের সামনে দুটি দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। এক. সংগঠন ঐক্যবদ্ধ থাকলে যেকোনো প্রতিকূলতায় বিজয় সুনিশ্চিত। দুই. রাজনৈতিক দল সহযোগিতা করলে নির্বাচন কমিশন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোট উপহার দিতে পারে, তা প্রমাণিত হয়েছে।

গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত কুসিক নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ৪৪৩ ভোটে জিতে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে ২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আফজল খান এবং ২০১৭ সালে তাঁর মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা (নৌকা প্রতীক) হেরে গিয়েছিলেন সাবেক বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কুর কাছে। তবে এবার রিফাত পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। পাঁচ বছর আগে নৌকার প্রার্থী সীমা পেয়েছিলেন ৫৭ হাজার ৮৬৩ ভোট।

কুসিকের গত দুটি নির্বাচনে বিএনপির ছিল একক প্রার্থী। আওয়ামী লীগ ছিল কোন্দলে জর্জরিত। যার প্রভাব পড়ে ফলাফলে। কিন্তু এইবারের ভোটে বিএনপি সরাসরি অংশ না নিলেও তাদের দুই নেতা ভোটে অংশ নেন। এতে দলটির নেতা-কর্মীরা বিভক্ত ছিল। ফল যায় আওয়ামী লীগের পক্ষে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলে আমাদের জিততে কষ্ট হয় না, আমরা একটা সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা পেয়েছি। অন্যদিকে বিএনপির দুজন প্রার্থী থাকার কারণে তারা আমাদের চেয়েও বেশি ভোট পেয়েছে। একজন খুব অল্প ভোটে হেরে গেছে।’

দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তার পক্ষে মানুষ কুমিল্লায় নৌকাকে বিজয়ী করেছে বলে মনে করেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর অপর সদস্য ফারুক খান। তিনি বলেন, ‘এ ভোটের আরেকটি বিষয় প্রমাণ হলে প্রার্থী ভালো হলে এবং তিনি যদি সবার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করলে তৃণমূলে নৌকা মার্কা এখনো জনপ্রিয়।’

সংরক্ষিত নারী আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও ২০১৭ সালে পরাজিত মেয়র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা বলেন, কুমিল্লায় আওয়ামী একত্রিত থাকায় বিজয়ী হয়েছে। এটা সামনের রাজনীতিতেও চলমান থাকবে।

কুসিকের এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত চরিত্র ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১৯৮৪ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত আমি কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলাম। এরপর থেকে পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের কেউ বিজয়ী হয়নি। এটার জন্য কিছুটা আমাদের নিজস্ব লোকের মুনাফেকি ছিল, আর কিছুটা মনোনয়ন ঠিক ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘এই বার কুমিল্লার সাধারণ মানুষ ও নেতা-কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য একজনকে (রিফাত) মনোনয়ন দিয়েছে। তাই দলীয় কর্মীদের সম্মিলিত চেষ্টায় নির্বাচনে জয়লাভ করেছি।’

কুসিক নির্বাচন কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের জন্য বড় পরীক্ষা ছিল। অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করে সেই পরীক্ষা তাঁরা ভালোভাবেই পাস করেছেন বলে মনে করে আওয়ামী লীগ। ফলাফল ঘোষণা নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তাকে পাত্তা দিচ্ছেন না দলের নেতারা।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, সাক্কু ফলাফল নিয়ে খুশি না হলেও, কায়সার যে পুরো ভোট ব্যবস্থা নিয়ে ইতিবাচক কথা বলেছেন। এটা তাদের সামনের রাজনীতিতে কাজে দেবে। এ ছাড়া ইভিএমে ধীর গতির অভিযোগ ব্যতীত নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে ভোটাররা সন্তুষ্ট ছিলেন।

কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, এ নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে কোনো বাধার সৃষ্টি করা হয়নি। তাদের অধীনে যে সম্পূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব তা প্রমাণ হয়েছে।

ফারুক খান বলেন, সব রাজনৈতিক দল যদি সহযোগিতা করে তাহলে যে ভালো নির্বাচন সম্ভব সেটা কুমিল্লায় প্রমাণ হয়েছে।

ফলাফল ঘোষণা কারচুপি হয়েছে বলে সাক্কুর অভিযোগ প্রসঙ্গে জাফর উল্লাহ বলেন, হেরে যাওয়ার পর অনেকেই অনেক কথা বলে। কিন্তু বাস্তবতা তো পরিষ্কার, তাঁদের দুই প্রার্থী থাকায় পরাজিত হয়েছেন। যে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংকটের কারণে আমরা এত দিন ভুক্তভোগী ছিলাম। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত