Ajker Patrika

জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড় কাটার ধুম

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০: ০৮
জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড় কাটার ধুম

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুর। সেখানে ফের শুরু হয়েছে পাহাড় কাটা। চলছে দিন-রাত সমানতালে পাহাড় কেটে প্লট-বাণিজ্য। এর আগে গত বছরও জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড় কেটে প্লট বানিয়ে বাণিজ্য চলেছে। সে সময় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে পাহাড় কাটা বন্ধ হয়েছিল। তবে এবার কার্যকর কোনো ভূমিকা নেই প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের।

এ ব্যাপারে সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আজিজ বলেন, ‘৯ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় আব্দুল গফুর ও সাদেকের নেতৃত্বে একটি মিটিং হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, তাঁরা আবারও পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ করবেন। বিষয়টি ইউএনও ও সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) জানাই। তাঁদের নির্দেশনা অনুযায়ী খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার বিকেলে আমি ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় পাহাড় কাটার সত্যতা মেলে। এ সময় পাহাড় কাটা বন্ধ করতে বললে প্রভাবশালী পাহাড়খেকো চক্রের রোষানলে পড়ি।’ 

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, জঙ্গল সলিমপুরের ২ ও ৩ নম্বর সমাজ এলাকায় খাদিজাতুল কোবরা মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল হক কোনো ধরনের অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই পাহাড় কেটে সমতল ভূমিতে পরিণত করেছেন। আরসিসি ঢালাই দিয়ে ভবন নির্মাণ করছেন। 

স্থানীয় সূত্র বলেছে, গত বছরও একই সময়ে প্রভাবশালী ওই চক্র পাহাড় কেটে সমতল ভূমিতে পরিণত করেছে। পরে সেই স্থানের চারপাশে দেয়াল দেওয়ার পাশাপাশি প্লট বানিয়ে বিক্রি করেছেন। সেবার উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথ অভিযান চালিয়ে পাহাড় কাটা বন্ধ করেছিল। পাশাপাশি উচ্ছেদ করা হয়েছিল পাহাড় কেটে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা। এ ছাড়াও পাহাড় কাটায় জড়িত চক্রের ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। ওই সময় পাহাড় কাটা বন্ধ হলেও ফের সক্রিয় হয়েছে চক্রটি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আরিফুল আলম বলেন, পাহাড়খেকো গফুর ও সাদেককে ম্যানেজ করতে পারলেই সহজে মেলে পাহাড়ি এলাকায় খাসজমি। তাঁরা প্রতিটি প্লট ৮-১০ লাখ টাকায় বিক্রি করেন।

গত বৃহস্পতিবার জঙ্গল সলিমপুরে গিয়ে দেখা যায়, ছিন্নমূল ১ নম্বর সমাজ অন্ধকল্যাণ সমিতির জায়গার পাশে পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ করছেন খাদিজাতুল কোবরা মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল হক।

জানতে চাইলে আব্দুল হক বলেন, ‘পাহাড়টি খাস শ্রেণিভুক্ত জায়গায়। ওই পাহাড়গুলো স্থানীয় সরকারদলীয় লোকেরা দখল করে বেচাবিক্রি করেন। অধিকাংশ বহিরাগত মানুষ পাহাড়ের দখল কিনে ঘরবাড়ি করছেন। আমিও দখল কিনে ঘর করেছি। এখন ঘরগুলো সংস্কার ও বাড়ানোর জন্য পাহাড়ের কিছু অংশ কাটা হয়েছে। এতে সমস্যা হওয়ার কিছু নেই।’

স্থানীয় সূত্র বলেছে, পাহাড়ি এলাকাটিতে ঘড় নির্মাণ করে দেওয়ার ঠিকাদারি নিয়েছেন স্থানীয় ফারুক ও হাসান মিস্ত্রি নামের দুই ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে হাসান মিস্ত্রির সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘পাহাড় কাটার পর আমরা চুক্তিভিত্তিক ঘর তৈরি করে দিই। স্থানীয় প্রভাবশালী লোকেরা পাহাড় কাটছে। এতে আমাদের করার কিছু নাই। প্রশাসন সব জানে।’

এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, জঙ্গল সলিমপুর এলাকাটি সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের অভয়ারণ্য। কিছু প্রভাবশালী পাহাড়খেকো পাহাড় কাটছে বলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তিনি জানতে পেরেছেন। পাহাড় কাটা বন্ধে শিগগির জঙ্গল সলিমপুরে অভিযান চালানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত