Ajker Patrika

বিদ্রোহের ঢেউয়ে ডুবল নৌকা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ০৪
বিদ্রোহের ঢেউয়ে ডুবল নৌকা

হবিগঞ্জ সদর ও নবীগঞ্জ উপজেলায় গত রোববার অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীদের। চেয়ারম্যান পদে ২১ ইউপির মধ্যে মাত্র আটটিতে জয়ের দেখা পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। হেরেছেন ১৩ টিতে। শুধু তাই নয়, ৭ ইউপিতে কোনোরকম প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়ে তুলতে পারেননি তাঁরা। এর মধ্যে দুজন জামানত হারিয়েছেন, কোথাও আবার নৌকার প্রার্থীর অবস্থান ছিল পঞ্চম। নৌকাডুবির প্রধান কারণ হিসেবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দুষছেন দলের নেতারা।

বিএনপি সরাসরি এ নির্বাচনে অংশ না নিলেও জেলায় তিনটি ইউপিতে জয় পেয়েছেন বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, নৌকার প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল সিদ্ধান্ত, বিদ্রোহী ঠেকাতে ব্যর্থতা ও সমন্বয়হীনতার কারণেই নৌকার ভরাডুবি হয়েছে।

ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সদর উপজেলার লোকড়া ইউপিতে কোনোরকম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গড়ে তুলতে পারেননি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আহাম্মদ আলী। আট প্রার্থীর মধ্যে তাঁর অবস্থান পঞ্চম। তাঁর দাবি, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা তাঁর সঙ্গে ছিলেন না। বিদ্রোহী প্রার্থী কায়সার রহমানের পক্ষে কাজ করে তাঁকে বিজয়ী করেছেন দলটির ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা। যে কারণে পুরো ইউপিতে আওয়ামী পরিবারের ভোট দুই হাজারের বেশি থাকলেও, তিনি পেয়েছেন ১ হাজার ৯৮৫ ভোট।

নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ ইউপিতে নৌকার অবস্থান তৃতীয়। সেখানে নিজের জামানতও রক্ষা করতে পারেননি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আছাবুর রহমান। একই অভিযোগ তাঁরও। তিনে বলেন, আওয়ামী পরিবারের সব সদস্য বিদ্রোহী প্রার্থী নোমান হোসেনের পক্ষে কাজ করেছেন। যে কারণে নৌকার চেয়ে ৪ গুণ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নোমান।

করগাঁও ইউপিতে নৌকার অবস্থা আরও শোচনীয়। জামানত হারিয়েছেন নৌকার প্রার্থী বজলুর রহমান। এখানেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর চেয়ে প্রায় ৫ গুণ ভোট পেয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী নির্মলেন্দু দাশ রানা। কুর্শি ইউপিতেও একই অবস্থা। এখানেও নৌকার অবস্থান তৃতীয়। বাউসা ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী ছিলেন। এর মধ্যে নৌকার অবস্থান তৃতীয়। স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা শেখ সাদিকুর রহমান শিশু নৌকার চেয়ে দ্বিগুণ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

গজনাইপুরে ৫জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে নৌকার প্রার্থীর অবস্থান তৃতীয়। কালিয়ারভাঙ্গায় ৫ জন প্রার্থী ছিলেন। এর মধ্যে নৌকার অবস্থান চতুর্থ। এখানে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদুর রহমান মুকুল। বিদ্রোহী হওয়ার কারণে দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন তিনি। ইমদাদুর রহমান বলেন, ‘দল প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল করেছে। যে কারণে দলের নেতা-কর্মীরা বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন। ভোটের ফলেই তাই প্রমাণিত হলো।’

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান মনে করেন, ‘নৌকার এমন পরাজয়ে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে বড় কারণ হলো বিদ্রোহী ঠেকাতে না পারা। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে নেতা-কর্মীদের নিয়ে কোনো আলোচনা করা হয়নি। যে কারণে অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর সমন্বয়হীনতার কারণে বিদ্রোহী ঠেকানো সম্ভব হয়নি।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর চৌধুরী বলেন, ‘প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো হাত নেই। ইউনিয়ন থেকে যে তালিকা আমাদের দেওয়া হয়েছে, সেই তালিকাই আমরা কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। পরে মনোনয়ন বোর্ড যাচাই-বাছাই করে মনোনয়ন দিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত