Ajker Patrika

ছেলেকে দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাবার স্বপ্নপূরণ

উপল বড়ুয়া, ঢাকা
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২২, ১৬: ৫৯
ছেলেকে দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাবার স্বপ্নপূরণ

এমন বাবা পাওয়া যাবে না যিনি ছেলের কীর্তিতে গর্ববোধ করেন না। জর্জ উইয়াহরও এখন গর্ব করার সময়। নিজে শত চেষ্টা করেও যা পারেননি, সেটাই করে দেখিয়েছেন তাঁর ছেলে টিমোথি উইয়াহ। অবশেষে উইয়াহ পরিবারেরও স্বপ্ন পূরণ হলো বিশ্বকাপে খেলার।

ফুটবল অঙ্গনে হোক বা রাজনৈতিক অঙ্গনে—জর্জ উইয়াহকে চেনেন না এমন লোক খুব কমই আছে। পেশাদারি লিগে খেলেছেন মোনাকো, পিএসজি, এসি মিলান, চেলসি ও ম্যানচেস্টার সিটিতে। নিজের সময়ের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন ছিলেন তিনি। আর্সেন ওয়েঙ্গারের আশ্চর্য আবিষ্কার বলা যায় উইয়াহকে। ফরাসি কিংবদন্তি কোচের হাত ধরে মোনাকোতে আসেন তিনি। এর পরের সময়টা সবারই জানা। ’৯০ দশকের মাঝের সময়টায় হয়ে ওঠেন বিশ্বসেরাদের একজন। এরপর ফরাসি ফুটবল ছেড়ে ইতালিতে আসেন উইয়াহ। ১৯৯৫ সালে মিলানে যোগ দেওয়ার প্রথম মৌসুমে ব্যালন ডি’অর ও ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ওঠে তাঁর হাতে। এখন পর্যন্ত ব্যালন ডি’অর জয়ী একমাত্র আফ্রিকান তিনি।

খেলোয়াড়ি ইমেজ কাজে লাগিয়ে নিজের দেশ লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্টও নির্বাচিত হন উইয়াহ। ২০১৮ থেকে দেশটির ক্ষমতায় তিনি। কিন্তু একটা আক্ষেপ থেকে গিয়েছিল তাঁর। খেলোয়াড় হিসেবে হোক বা প্রেসিডেন্ট হিসেবে, অনেক চেষ্টা করেও লাইবেরিয়াকে বিশ্বকাপের মঞ্চে নিয়ে যেতে পারেননি উইয়াহ। পারবেন কী করে? তাঁর দেশ যে কখনো আফ্রিকার বাছাইপর্বও পেরোতে পারেনি। ফুটবলে আফ্রিকার অন্য দেশগুলোর তুলনায় দারিদ্র্যপীড়িত লাইবেরিয়া যোজন যোজন পিছিয়ে। উইয়াহও যেন ছিলেন ‘গোবরে পদ্মফুল’। খেলোয়াড়ি জীবনে লাইবেরিয়ার ফুটবলের উন্নতির লক্ষ্যে ফুটবল ফেডারেশনকে অর্থকড়ি সাহায্য দিতেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবও সেই সাহায্য দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু লাইবেরিয়ার উন্নতি নেই।

এ জন্যই হয়তো জর্জের ছেলে টিমোথি সুযোগ থাকার পরও লাইবেরিয়ার জায়গায় জাতীয় দল হিসেবে বেছে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রকে। অবশ্য ২২ বছর বয়সী এই তারকার জন্ম নিউইয়র্কে। বাবার সঙ্গে অবশ্য কিছু জায়গায় তাঁর বেশ মিল। দুজনই আক্রমণভাগের খেলোয়াড়। দুজনের গায়েই উঠেছে পিএসজির জার্সি। টিমোথি এখন খেলেন লিলেতে। তাঁর বাবা যা পারেননি, এবার সেটা করে দেখিয়েছেন টিমোথি। প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নেমেই পেয়ে গেলেন জালের দেখা। আল রায়ান স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপে গত পরশু ওয়েলসের বিপক্ষে ম্যাচে ৩৬ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে দেন তিনি। আর তাতেই বাবাকে মনে করিয়ে দিলেন টিমোথি। অবশ্য তাঁর গোলেও জয় পায়নি যুক্তরাষ্ট্র। শেষ মুহূর্তে গ্যারেথ বেলের পেনাল্টি গোলে সমতায় ফেরে ওয়েলস। ম্যাচ ১–১ ড্র।

জর্জ উইয়াহর স্বপ্ন ছিল বিশ্বকাপ খেলার। সেই স্বপ্নের কথা কদিন আগে ফক্স নিউজকে বলেছিলেন তাঁর ছেলে টিমোথি, ‘আমার বাবা দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে চেয়েছিলেন। তবে সেই সুযোগ তিনি পাননি। এখন সেই স্বপ্ন তিনি দেখেন আমাকে ঘিরে। আমি মনে করি, এটা আশীর্বাদ। এটা অসাধারণ বিষয় যে বিশ্বকাপে আমার পরিবারকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারা।’

কাতার বিশ্বকাপ খেলতে এসে টিমোথি উইয়াহ বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছেন। আর ওয়েলসের বিপক্ষে গোল করে রেকর্ডের খাতায় নামও তুলেছেন। এই শতাব্দীতে জন্ম নেওয়া প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে গোল পেলেন তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিলেটে পাথর লুটে জড়িত দুই দলের ৩৫ নেতা

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

আমরা দখল করি লঞ্চঘাট-বাসস্ট্যান্ড, জামায়াত করে বিশ্ববিদ্যালয়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত