Ajker Patrika

কীর্তনখোলা দখল বন্ধে প্রশাসন ‘নির্বিকার’

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ৫০
কীর্তনখোলা দখল বন্ধে প্রশাসন ‘নির্বিকার’

বরিশাল নগরঘেঁষা কীর্তনখোলা নদীর প্রকাশ্যে দখল করা হচ্ছে। প্রায় এক কিলোমিটার তীর দখল করে ডকইয়ার্ড গড়ে তোলা হয়েছে। উচ্ছেদের পর দেড় বছর ধরে চলছে এই দখল। কিন্তু দখল বন্ধে প্রশাসন নির্বিকার। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। তাঁরা বলছেন, কীর্তনখোলার চিহ্নিত চার হাজারের বেশি দখলদার উচ্ছেদে টালবাহানা করছে বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসন।

স্থানীয় তথ্যমতে, নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ধান গবেষণা রোডের পাকার মোড় এলাকায় কীর্তনখোলা তীরের খলিফাবাড়ি পয়েন্ট থেকে গাইড ওয়াল করে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশে এ বালু ভরাট করা হয়েছে। এরপরও কয়েক হাত দূরে বাঁশ ও লাঠির বেড়া দিয়ে ওই অংশও দখলের চেষ্টা চলছে।

দুই বছর আগে জেলা প্রশাসন নদী তীরের ওই অবৈধ দখল গুঁড়িয়ে দিলেও বর্তমানে আওতা বাড়িয়ে নদী দখল করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী রাইভিউল কবির স্বপনের বিরুদ্ধে। সেখানে কাঠের জেটি এবং গাইড ওয়াল নির্মাণ করে দখল সম্পন্ন করেছেন তিনি। গড়ে উঠেছে ডকইয়ার্ডসহ তীরজুড়ে কয়লা, বালু ও পাথরের নানা স্থাপনা।

এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী রাইভিউল কবির স্বপন সাংবাদিকদের বলেন, নদীর মধ্যে আরও রেকর্ডিং জায়গা রয়েছে তাঁর। খলিফাবাড়ি থেকে কাটাদিয়া খাল পর্যন্ত কীর্তনখোলার তীরে তাঁর প্রায় ১৯ একর জমি ছিল। নদী ভেঙে এখন ১৩ একর জমি আছে। ভাঙন ঠেকাতেই তিনি পাইলিং করে বালু ভরাট করেছেন। জেলা প্রশাসনের কাছে কয়েক বছর আগে তাঁর জমি মেপে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু তারা দেয়নি বলেই নিজের জমি রক্ষায় দেয়াল দিয়েছেন।

বরিশাল স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ব্যক্তিগত জমি থাকলেও, আইন অনুযায়ী ধান গবেষণার ওই স্পটে কোনো স্থাপনা করা যাবে না। এর আগেও একবার সেখানে অভিযান চালিয়ে দখল মুক্ত করা হয়েছিল। নতুন করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিআইডব্লিউটিএকে নিয়ে দখলদারদের হালনাগাদ তালিকা করা হচ্ছে।

বরিশাল নদী-খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্যসচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, সরকার নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই জীবন্ত সত্তা রক্ষায় কঠোর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু নদীটির তীরের অবৈধ দখলদার উৎখাতে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসন। এ কারণে কীর্তনখোলা নদী দখলে সংকুচিত হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, কয়েক বছর আগে ধান গবেষণা এলাকায় নদী তীরের অনেক জায়গা দখল করে নির্মিত স্থাপনা জেলা প্রশাসন ভেঙে দিয়েছিল। কিন্তু তখন যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় দখলদারেরা ক্রমাগত কীর্তনখোলা গ্রাস করছে। বিআইডব্লিউটিএ ইতিমধ্যে কীর্তনখোলার তীর দখলকারী ৪ হাজার ৩২০ জন অবৈধ দখলদারের তালিকাও করেছে। তবে রহস্যজনক কারণে তাঁদের উচ্ছেদে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটি এর যুগ্ম পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, নগরের আমানতগঞ্জ খাল থেকে রূপাতলী দক্ষিণ পাশ পর্যন্ত ৩ দশমিক ৫৭০ কিলোমিটার কীর্তনখোলার তীর বিআইডব্লিউটিএর। নদীতীরের দিকে ৫০ গজ পর্যন্ত উভয় তীরে ৩৬ দশমিক ৩০ কিলোমিটার ফোরশোর রয়েছে, যার অর্ধেকই বেদখল হয়ে গেছে। নগরী এবং আশপাশে কীর্তনখোলার দখলদারের সংখ্যা ৪ হাজারের বেশি। এ জায়গা উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে জরিপ চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত