Ajker Patrika

ভোজ্যতেল নিয়ে তেলেসমাতি

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২২, ১৪: ৩০
ভোজ্যতেল নিয়ে তেলেসমাতি

হবিগঞ্জে বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে। ক্রেতাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে তেলের মজুত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন। এ ব্যাপারে তাঁরা প্রশাসনের কাছে বাজার তদারকির দাবি জানান।

এদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, ডিলাররা বাজারে সয়াবিন তেলের সাপ্লাই বন্ধ করে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে খুচরা ব্যবসায়ীরাও তেলের মজুত করার চেষ্টা করছেন। আবার, দাম বৃদ্ধি ও সংকটের আশঙ্কায় সাধারণ মানুষও চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত তেল মজুত করছেন।

হবিগঞ্জ শহরে বড় পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারি থেকে শুরু করে খুচরা প্রতিষ্ঠান সবখানেই সয়াবিন তেলের মজুত কম। ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় সয়াবিন তেল সরবরাহ করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।

তবে ক্রেতারা জানান, ব্যবসায়ীরা সয়াবিন তেল থাকার পরও বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। আবার যাঁরা বিক্রি করছেন, তাঁরাও নিচ্ছেন অতিরিক্ত দাম। বোতলে ১৬৮ টাকা লেখা থাকলেও ব্যবসায়ীরা নিচ্ছেন ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা। আর খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়।

বানিয়াচং উপজেলার পুকড়ার ক্রেতা মইনুল হক বলেন, ‘প্রতিদিনই ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো তেলের দাম বাড়াচ্ছেন। আমরা সাধারণ মানুষ একরকম জিম্মি হয়ে গেছি। বোতলের মধ্যে দাম দেওয়া থাকলেও ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দাম ছাড়া তেল দিচ্ছেন না।’

শহরের শ্যামলী এলাকার নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা তেলের মজুত করে রেখেছেন। আবার অনেক ব্যবসায়ী তেল দিতে চান না। যাঁরা দিচ্ছেন, তাঁরা লিটারপ্রতি পাঁচ থেকে আট টাকা বেশি দাম নিচ্ছেন।’ পবিত্র রমজানকে ঘিরে ব্যবসায়ীরা তেল মজুতের চেষ্টা করছেন বলেও জানান এ ক্রেতা।

মুদিদোকানি প্রভাংস পাল বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে সয়াবিন তেল একেবারেই পাওয়া যায় না। ডিলাররা তেল সরবরাহ না করার কারণে বাজারেও সংকট দেখা দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাছে যে তেল আছে তাতে আর দুই দিন বিক্রি করতে পারব। এরপর তেলের সাপ্লাই না দিলে তেল বিক্রি বন্ধ থাকবে।’

আরেক মুদিদোকানি নিলয় বলেন, ‘তিন সপ্তাহ আগে তেল কিনেছিলাম। এখন ডিলারের কাছ থেকে তেল কিনতে পারছি না। বিশেষ করে পাঁচ লিটারের বোতলের তেল একেবারেই নেই। আমরাও এখন খুচরা কিনে খুচরা বিক্রি করছি।’

অপর মুদিদোকানি অবিনাশ রায় বলেন, ‘একদিকে ডিলারদের কাছ থেকে আমরা তেল পাচ্ছি না, অন্যদিকে মজুত করছি বলে আমাদের দুষছেন সাধারণ মানুষ।’

তেলের দাম বেশি নেওয়ার প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দাম বেশি নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, বোতলে দাম দেওয়া থাকে। বেশি নিলে ক্রেতারা ভোক্তা অধিদপ্তরের কাছে অভিযোগ করতে পারেন।’

গ্রামীণ বাজারের ব্যবসায়ীরাও তেলের মজুত করার চেষ্টা করছেন। এমনকি ক্রেতারাও মজুত করছেন। যাঁদের মাসে ৫ লিটার তেলের প্রয়োজন, তাঁরা নিচ্ছেন ১৫ লিটার। তেলের সংকটের কারণে মধ্যবিত্ত ক্রেতারাই বেশি দায়ী। বলেন অবিনাশ রায়।

হবিগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক দেবানন্দ সিনহা বলেন, ‘দাম বেশি রাখার বিষয়ে আমরা প্রমাণ পেয়েছি। বৃহস্পতিবার সকালে শায়েস্তাগঞ্জ অভিযান চালাই। এ সময় দেখা যায় ব্যবসায়ীরা বোতল থেকে ঘষে দাম তুলে ফেলেছেন। পরে অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন।’

তেলসংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাজারে এখনো তেল রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন ডিলারদের কাছে তেল নেই। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তেল মজুতের খবর আসছে। কিন্তু কোনো প্রমাণ পাচ্ছি না। পেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাবেক সিইসি নূরুল হুদার গলায় ‘জুতার মালা’ দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

ইরানের পতন হলে, এরপরই রাশিয়া—অভিমত রুশ বিশ্লেষকদের

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর মোদির সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্টের ফোনালাপ

অনেক দেশ ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে প্রস্তুত, দাবি পুতিনের শীর্ষ সহযোগীর

মার্কিন হামলার পর ইসরায়েলে ‘খোররামশহর-৪’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত