Ajker Patrika

ইসলামে প্রতিবন্ধীদের অধিকার

ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
ইসলামে প্রতিবন্ধীদের অধিকার

আল্লাহ তাআলা যাদের দৈহিক বা মানসিক পূর্ণতা দেননি, তারাই প্রতিবন্ধী। সামাজিকভাবে তারা বিভিন্ন কাজে অনগ্রসর। তবে তারাও আমাদের সমাজের অংশ। প্রতিবন্ধকতার মাধ্যমে বোধগম্য হয় যে, আল্লাহ যেমন স্বাভাবিক সৃষ্টি করতে সক্ষম, তেমনি তার ব্যতিক্রম করতেও সক্ষম। তিনি বলেন, ‘যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, এরপর তোমাকে সুঠাম করেছেন, তারপর তোমাকে সামঞ্জস্য করেছেন।’ (সুরা ইনফিতার: ৭)

তাই আল্লাহ যাদের স্বাভাবিক রেখেছেন, তাদের উচিত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। অন্যদিকে প্রতিবন্ধকতার বিনিময়ে ব্যক্তি আল্লাহর কাছ থেকে জান্নাত লাভ করে। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেন, ‘আমি যার প্রিয় চোখ নিয়ে নিই, এরপর সে ধৈর্য ধারণ করে এবং নেকির আশা করে, আমি তার বিনিময়ে জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুতেই সন্তুষ্ট হই না।’ (তিরমিজি: ১৯৫৬)

ইসলামের আলোকে সব মানুষ সমান। কাউকে শারীরিক গঠন দেখে প্রাধান্য দেওয়া হয় না। কেবল ইমান ও খোদাভীতিই মর্যাদার মাপকাঠি। মহানবী (সা.) বলেন, ‘আরবের ওপরে অনারবের, অনারবের ওপরে আরবের, কালোর ওপরে গৌরবর্ণের এবং গৌরবর্ণের ওপরে কালোর কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই—খোদাভীতি ছাড়া।’ (বুখারি) 
ইসলাম প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন বিষয়ে অবকাশ দিয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘অন্ধ, ল্যাংড়া ও রুগ্‌ণের জন্য কোনো অপরাধ নেই। যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করবে তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ (সুরা ফাতহ: ১৭) মহানবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের কাজের দিকে নয়, বরং তোমাদের অন্তরের দিকে লক্ষ করেন।’ (মুসলিম)

প্রতিবন্ধীরা সমাজে ঘৃণিত কোনো জনগোষ্ঠী নয়। মহানবী (সা.) তাঁর অনুপস্থিতিতে একাধিকবার অন্ধ সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-কে মসজিদে নববিতে ইমামতির দায়িত্ব দিয়েছেন এবং তাঁকে মুয়াজ্জিন হিসেবে নিয়োজিত করেছেন। তাই প্রতিবন্ধীদের প্রতি ঘৃণা নয়, বরং তাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করা সবার দায়িত্ব। 

লেখক: অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত