Ajker Patrika

জালাল উদ্দিন রুমি

সম্পাদকীয়
জালাল উদ্দিন রুমি

জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি ছিলেন ত্রয়োদশ শতকের একজন ফারসি কবি, সুফিতাত্ত্বিক ও আইনজ্ঞ। তবে তিনি সুফিবাদী কবি রুমি নামে বেশি পরিচিত।

১২৪৪ সালে রুমির জীবনে একটি বড় পরিবর্তন ঘটে। স্বাধীন চিন্তার অধিকারী আধ্যাত্মিক সুফি গুরু শামস তাবরিজের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ঘটে। ৩৭ বছর বয়সী রুমি তখন পর্যন্ত ছিলেন একজন বিখ্যাত ধর্মতাত্ত্বিক ও প্রচারক। তখন পর্যন্ত তাঁর ও তাবরিজের বন্ধুত্বের বয়স মাত্র তিন বছর। তিন বছর পর তাবরিজ গায়েব হয়ে যান। তাবরিজের মৃত্যু তিনি সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। প্রেমিকা হারানো বেদনার মতো, তা তাঁকে আজীবন যন্ত্রণা দিয়েছিল। তাঁর বেশির ভাগ সৃষ্টির প্রেরণা ছিলেন তাবরিজ।

ঐতিহাসিকদের ধারণা, রুমির প্রতি ঈর্ষান্বিত কোনো একজন তাবরিজকে খুন করেন। এরপর বিচ্ছেদের আগুনে পুড়তে থাকেন রুমি। এই বিচ্ছেদের দহন থেকে রুমি নিজেকে কবিতায় সঁপে দেন পুরোপুরি। ৩৭ থেকে ৬৭ বছর বয়সকালেই মূলত রুমির সব কবিতা লেখা।এর মধ্যে লেখে ফেলেন তিন হাজার ‘প্রেমসংগীত’, দুই হাজার রুবাইয়াত। ছয় খণ্ডে লিখেছেন মহাকাব্য ‘মসনবি’।

রুমি শায়েরি, সংগীত আর নৃত্যে ডুবে থাকতে লাগলেন। একজন রুমি গবেষকের মতে, রুমি যখন ধ্যানে থাকতেন অথবা শায়েরি করতেন, তখন একধরনের নৃত্য করতেন। এই নৃত্যই পরবর্তীকালে সুফিনৃত্য হিসেবে পরিচিতি পায়। রুমি লিখেছেন, ‘আগে আমি প্রার্থনা করতাম। এখন শের, নজম ও গীত পাঠ করি।’

তবে রুমির জীবনের শেষ ৫০টি বছর কেটেছে কোনিয়ায়। এই মরমি কবি ১২৭৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর এখানেই মারা যান। বছরের একটি দিন তুরস্কে তাঁর সমাধিকে কেন্দ্র করে দুনিয়ার সব সুফিপ্রেমিক আজও জড়ো হন। তবে তাঁর জন্মস্থান বালখ, যা বর্তমানে আফগানিস্তানে অবস্থিত। তাঁর সমাধিফলকে লেখা আছে, ‘যখন আমি মৃত, পৃথিবীতে আমার সমাধি না খুঁজে, আমাকে মানুষের হৃদয়ে খুঁজে নাও।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত