Ajker Patrika

সমন্বিত সবজি চাষে দারিদ্র্য জয়

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ২০
সমন্বিত সবজি চাষে দারিদ্র্য জয়

অভাবের সংসারে ঠিকমতো খাবার জোটেনি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের বিলকাঠোর নদীপাড়া গ্রামের আব্দুল আলীমের (৩৫)। তাই ঢাকায় গিয়েছিলেন শ্রমিকের কাজ করতে। সেখানে মাটিকাটা ট্রলারে কঠোর পরিশ্রম ও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হতো। কিন্তু পরিশ্রমের তুলনায় ভালো মজুরি মেলেনি।

২০১৩ সালে মজুরি ছেড়ে গ্রামে ফিরে আসেন আব্দুল আলীম। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দুই বিঘা জমিতে শুরু করেন করলা, বেগুন-মুলা, ফুলকপি-বাঁধাকপি, টমেটোসহ শিমের সমন্বিত সবজির চাষ। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় আধুনিক, পরিকল্পিত ও কীটনাশকমুক্ত চাষ পদ্ধতিতে সাফল্য পেতে থাকেন তিনি। এখন শুধু করলা বিক্রিতে মাসে আয় করছেন ২ লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকা।

সবজি চাষি আব্দুল আলীম বলেন, গ্রামে ফেরার পর নিজের পায়ে দাঁড়ানো এবং অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য বাড়ির পাশের দুই বিঘা জমিতে বেগুন-মুলা ফুলকপি-বাঁধাকপির চাষ শুরু করেন। ১০ হাজার আর ঋণের ২০ হাজারসহ ৩০ হাজার টাকায় শুরু করেন সবজি চাষ। প্রথম বছরেই ভালো টাকা আয় আসে। পরে করলা, টমেটো আর লাউয়ের চাষ যুক্ত করেন তিনি।

প্রথমদিকে চাষ পদ্ধতিতে অজ্ঞতার কারণে ও পোকার আক্রমণে কাঙ্ক্ষিত ফলন না আসায় ভালো দাম মেলেনি। ফলে লাভের অঙ্ক আসে কম। পরের বছর উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে আধুনিক চাষপদ্ধতি এবং পরিকল্পিত পরিচর্যায় ফলন বৃদ্ধিতে পরিবর্তন আসে। আকার আকৃতিতে পরিবর্তন আসায় বাজারে গিয়ে ভালো দাম পেতে থাকেন তিনি। এতে মানসিক উৎসাহ উদ্দীপনা বাড়তে থাকে তাঁর।

চার বছর ধরে ১০ কাঠা জমিতে ম্যাচিং (মাচাং) পদ্ধতিতে নূপুর ও ঝলক জাতের বিষমুক্ত করলা চাষ শুরু করেন আব্দুল আলীম। এ পদ্ধতিতে করলার আকার আকৃতি ও মানে ফলন বাড়ে। বাজারেও ভালো দাম পাচ্ছেন তিনি।

আব্দুল আলীমের ভাষ্যমতে, সপ্তাহে গড়ে ৪ মণ করে করলা তোলা হচ্ছে। স্থানীয় হাটবাজারে প্রতি কেজি করলা ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। মাসে ২ লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকার করলা বিক্রি করছেন তিনি।

প্রতিবেশী রিপন আলী বলেন, আলিম একসময় অভাবের মধ্যে দিনযাপন করতেন। সবজি চাষ করে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা এসেছে তাঁর।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদ বলেন, উদ্যমী ও পরিশ্রমী মানুষ আব্দুল আলীম। আধুনিক পদ্ধতিতে বিষমুক্ত সবজি চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি। অনেকেই তাঁকে অনুসরণ করে সবজি চাষে ঝুঁকছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে এ কৃষি উদ্যোক্তাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত