Ajker Patrika

তবে কি ভারত নতুন ‘চোকার্স’

তবে কি ভারত নতুন ‘চোকার্স’

কোচের কাছে খেলোয়াড়েরা সন্তানের মতো। কারও কাছে আসনটি ছোট ভাইয়ের। তাঁদের সুখে-দুঃখে অভিভাবকের মতো ঢাল হয়ে থাকেন কোচরা। শিষ্যদের আনন্দ উদ্‌যাপনে যেমন সঙ্গী হন, তেমনি ভাগ করে নেন দুঃখও। গত পরশু আহমেদাবাদে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পর রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের চোখে জল দেখে নিজেকে সামলাতে পারেননি তাঁদের গুরু রাহুল দ্রাবিড়ও।

অজিরা যখন জয়ের দ্বারপ্রান্তে, তখনই ক্যামেরা খুঁজে নিয়েছিল কোহলির অশ্রুভেজা মুখ। হারের ক্ষত সামলে জসপ্রীত বুমরা ছুটে গিয়েছিলেন কান্নায় ভেঙে পড়া মোহাম্মদ সিরাজকে সামলাতে। একা ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় বিমর্ষ মুখ লুকাতে পারেননি রোহিত। ড্রেসিংরুমেও কেঁদেছেন ভারতীয়রা। শিষ্যদের এমন অবস্থা দেখে ফাইনালের পর সংবাদ সম্মেলনে দ্রাবিড় বলেছেন, ‘ড্রেসিংরুমে আবেগঘন পরিবেশ দেখা গেছে। ছেলেরা ও সাপোর্ট স্টাফরা সবাই হতাশ। কোচ হিসেবে তা দেখা খুব কঠিন। আমি জানি, ছেলেরা কতটা কঠোর পরিশ্রম করেছে। কতটা আত্মত্যাগ ছিল তাদের। কিন্তু এটাই খেলা। এমনটা হয়েই থাকে।’

অথচ এই বিশ্বকাপে দাপটের সঙ্গে ফাইনালে উঠেছিল ভারত। এক যুগ পর আরেকটি বিশ্বকাপে জেতার আনন্দে আত্মহারা হতে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম ভরে উঠেছিল নীল জার্সিতে। কিন্তু এবারও ২০০৩ বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি। সেবার খেলোয়াড় হয়ে সতীর্থদের কষ্ট দেখেছিলেন দ্রাবিড়, এবার কোচ হিসেবে। ২০১১ বিশ্বকাপ জেতার পর ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি—এরপর আর কোনো আইসিসির শিরোপা নেই ভারতের ঘরে। গত ৯ বছরে ভারত আইসিসির সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৯ বার নকআউটে খেলেছে। কিন্তু জিততে পারেনি শিরোপা। তার মধ্যে ফাইনাল খেলেছে পাঁচবার। আর সেমি থেকে বিদায় নিয়েছে তিনবার।

ঢাকায় ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার কাছে হার দিয়েই যেন এই অভিশাপের শুরু। ২০১৭ সালে ওভালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে হারে বাজেভাবে। এ বছরের জুনে একই ভেন্যুতে অজিদের বিপক্ষেই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আরেকবার রানার্সআপ রোহিতেরা। তার আগে ২০২১ সালে এই আসরের প্রথম সংস্করণের ফাইনালে সাউদাম্পটনে নিউজিল্যান্ডের কাছে হৃদয় ভাঙে তাদের। একের পর এক ফাইনাল হেরে ভারত যেন এখন ক্রিকেট বিশ্বেরই নতুন ‘চোকার্স’।

এবার অবশ্য বিশ্বকাপ জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী ছিল ভারত। কিন্তু আরেকবার ফাইনালে শতকোটি সমর্থকদের চাপ সামলে উঠতে পারেনি। শিরোপা জেতা না হলেও উত্তরসূরিদের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন শচীন টেন্ডুলকার-অনিল কুম্বলের মতো কিংবদন্তিরা। শচীন তাঁর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘দুর্ভাগ্য টিম ইন্ডিয়া, শুধু একটি বাজে দিন গেল। হার খেলার অংশ, তবে টুর্নামেন্টজুড়ে এই ইউনিট আমাদের জন্য সব দিয়েছে।’

রোহিত-কোহলি শিরোপা জিততে না পারায় ইএসপিএনের সঙ্গে আলোচনায় কুম্বলে বলেছেন, ‘দুঃখজনক যে শেষ পর্যন্ত শিরোপা জিততে পারেনি এই দুজন।’ ভারতকে প্রথম বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক কপিল দেব ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে লিখেছেন, ‘চ্যাম্পিয়নের মতো খেলেছ ছেলেরা। তোমাদের চিবুক সমুন্নত রাখো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত