Ajker Patrika

হাসপাতালে শিশু-বৃদ্ধের ভিড়

মির্জাপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮: ৩৫
হাসপাতালে শিশু-বৃদ্ধের ভিড়

কয়েক দিন ধরে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালগুলোয় আগে যেখানে প্রতিদিন ১৫০-২০০ জন রোগী আসত, সেখানে এখন ২৫ শতাংশ রোগী বেড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে শিশু ও বৃদ্ধরা। রোগীর চাপে চিকিৎসাসেবা দিতে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মির্জাপুরে গত কয়েক দিনে নিম্নচাপের প্রভাবে শীত বেড়েছে। দিনের একাধিক সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কর্মজীবী ও দরিদ্র মানুষকে। সেই সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু-বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ। ঠান্ডাজনিত ডায়রিয়া ও শ্বাসনালির সংক্রমণে কাশি, অ্যাজমা, জ্বর, অ্যালার্জি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে। আক্রান্তদের অধিকাংশ শিশু ও বয়স্ক। ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তরা চিকিৎসা নিতে কুমুদিনী হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় করছেন। গতকাল রোববার কুমুদিনী হাসপাতালের বহির্বিভাগে দেখা গেছে এমন চিত্র।

সরেজমিন দেখা গেছে, ঠান্ডা কাশি, অ্যাজমা, জ্বর, নিউমোনিয়া ও অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছে নানা বয়সী মানুষ। হাসপাতালের শিশু বিভাগে একাধিক শিশুর মায়ের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত সাত মাস বয়সী আবির হোসেনের মা আয়েশা আক্তার বলেন, গত কয়েক দিনের ঠান্ডায় আবির জ্বরে আক্রান্ত হয়। পরে হাসপাতালে এলে ডাক্তার জানান আবিরের নিউমোনিয়া হয়েছে। তাই এখানেই ভর্তি করা হয়েছে।

একই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আতোয়ার মিয়া বলেন, ‘ঠান্ডায় আমার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেছে। তাই চিকিৎসা নিতে এসেছি।’

এ বিষয়ে কুমুদিনী হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. এ বি এম আলী হাসান জানান, কুমুদিনী হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে সাধারণ সময়ে বহির্বিভাগে প্রতিদিন ২০০-র মতো রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। কিন্তু গত কয়েক দিনে এই সংখ্যা ২৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। এঁদের অধিকাংশই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। এ ছাড়া ওয়ার্ডে ভর্তি ২৮ শিশুর মধ্যে ১৬ জনই শ্বাসনালির চিকিৎসা নিচ্ছে।

মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদুল ইসলাম বলেন, এই সময়ে বাতাসে ধুলাবালু বেশি থাকায় অনেকের অ্যালার্জি এবং শ্বাসকষ্ট, কাশি, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস দেখা দিয়েছে। এ সময় রোগবালাই থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় সচেতনতা। শিশুদের ক্ষেত্রে ঠান্ডা লাগলে দেখতে হবে নিউমোনিয়া হয়েছে কি না।

নিউমোনিয়ার তিনটি লক্ষণ জানিয়ে এ চিকিৎসক বলেন, প্রথমত অনেক জ্বর থাকবে, দ্বিতীয়ত বুকের খাঁচা ভেতরে ঢুকে যাবে এবং বুকের দুধ টেনে খেতে পারবে না। এসব উপসর্গ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পরামর্শ ব্যতীত ওষুধ খাওয়ানো যাবে না।

মায়েদের পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, শিশুদের নিয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। শিশুর শরীর গরম রাখতে হবে, গরম কাপড় পরিয়ে রাখতে হবে, বয়স অনুযায়ী ঠিকমতো খাবার দিতে হবে। বুকের দুধ খাওয়াতে হবে এবং পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। সব সময় গরম তরল খাবার দিতে হবে। বাচ্চাদের ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করানো যাবে না। প্যাম্পাস পরানো যাবে না। ধুলাবালিমুক্ত থাকতে হবে। ঠান্ডা, কাশি রয়েছে তাঁদের কাছাকাছি যাওয়া যাবে না। সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত