Ajker Patrika

নারী সার্জেন্টের মামলা এখনো নেয়নি পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ৩৮
নারী সার্জেন্টের মামলা এখনো নেয়নি পুলিশ

নারী সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের মামলা এখনো গ্রহণ করেনি বনানী থানার পুলিশ। মামলা না নিলেও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে ফোন করে সুবিচার পাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

২ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ী সড়কে একটি বিএমডব্লিউ প্রাইভেট কারের চাপায় আহত হন নারী সার্জেন্টের বাবা মনোরঞ্জন হাজং। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁর এক পা কেটে ফেলেন। তাঁর অবস্থা গুরুতর।

ভুক্তভোগী সার্জেন্ট মহুয়া হাজং বলেন, পুলিশ বিভাগের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। মামলার বিষয়ে চিন্তা না করে বাবার চিকিৎসার দিকে মনোযোগ দিতে বলেছেন। মামলা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখনো মামলা হয়নি।

এ ধরনের ভয়ংকর দুর্ঘটনার পরও সেই গাড়ি এবং তার চালককে আটক না করার বিষয়ে জানতে চাইলে বনানী থানার পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরে আযম মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অন্যদিকে ডান পা হারানো মনোরঞ্জনের গতকাল বাম পা কেটে ফেলার অপারেশন করার কথা ছিল। কিন্তু নানা রকম শারীরিক জটিলতা দেখা দেওয়া সেটা আর সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকেরা বলেছেন, তাঁর অবস্থা এতটাই মুমূর্ষু যে অজ্ঞান করলে জ্ঞান ফিরিয়ে আনা আর সম্ভব না।

রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবদুল গণি মোল্যাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, তৃতীয় অপারেশনের মাধ্যমে ডান পায়ের পর পচন ধরা বাম পা কেটে ফেলার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। ডায়াবেটিস, লিভারের সমস্যাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়েও বের করে আনা হয়েছে।

মেয়ে সার্জেন্ট মহুয়া হাজং বলেন, ‘চিকিৎসক বোর্ড উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে শাহবাগের বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করার কথা বলছেন। গতকাল সন্ধ্যায় বারডেমে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু বাবা ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ছেন। আমি বাবার জন্য ন্যায়বিচার চাই।’

দুর্ঘটনাটি হয়েছে ২ ডিসেম্বর রাত দুইটার পর। বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি সড়কে মনোরঞ্জন হাজংকে মোটরসাইকেলসহ চাপা দেয় লাল রঙের একটি বিএমডব্লিউ কার। সে সময় গাড়িতে ছিলেন এক নারীসহ তিনজন। ঘটনার রাতের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, চেয়ারম্যানবাড়ি ইউলুপের পাশে মোটরসাইকেল নিয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন মনোরঞ্জন। স্বাভাবিক নিয়মে চলাচল করছিল যানবাহন। হঠাৎ একটি প্রাইভেট কার অপর পাশ থেকে এসে তাঁকে চাপা দেয়। গাড়িচাপায় কোমরের নিচের অংশ থেঁতলে যায় মনোরঞ্জনের। চূর্ণ হয়ে যায় মোটরসাইকেলটি। বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে পাঁচ-ছয় টুকরো হয়ে যায়। ডান পায়ে জখম ছিল গুরুতর। ঘটনার পর বনানী থানার পুলিশ পথচারীদের সহায়তায় আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সেই দুর্ঘটনার বিচার চেয়ে কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন নারী সার্জেন্ট। কিন্তু থানার পুলিশ তাঁর মামলা নিচ্ছেন না। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী থেকে উঠে আসা ওই নারী সার্জেন্টের অভিযোগ, যে গাড়িটি তাঁর বাবাকে চাপা দিয়েছে, সেটির মালিক একজন প্রভাবশালী। যে কারণে লিখিত অভিযোগ দিলেও বনানী থানা তাঁর মামলা রেকর্ড করেনি। এ ঘটনার ইতিমধ্যে আজ ১১ দিন পেরিয়ে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত