Ajker Patrika

মাদারীপুরে কমছে না সয়াবিন তেলের দাম

মাদারীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২২, ০৯: ৪৭
মাদারীপুরে কমছে না   সয়াবিন তেলের দাম

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন না মাদারীপুরের খুচরা ব্যবসায়ীরা। সরবরাহ না থাকার অজুহাত দেখিয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে বোতলজাত সয়াবিন তেল। এতে তেল কিনতে নাভিশ্বাস উঠেছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের।

খুচরা তেল ব্যবসায়ীদের দাবি, আগের দামেই পাইকারি বাজার থেকে তেল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। অন্যদিকে সরকারি অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। কঠোরভাবে বাজার তদারকির দাবি তাঁদের।

মাদারীপুর শহরের ইটেরপুল বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রমাগত বেড়ে চলা তেলের দামে টালমাটাল অবস্থা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় লাগাম টেনে ধরতে সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয় ১৬০ টাকা, আর পাঁচ লিটার বোতলজাত দাম ধরা হয় ৭৬০ টাকা। অন্যদিকে খোলা তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১৩৬ টাকা। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ধার্য করা দামে তেল কিনতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। মাদারীপুরের সদর উপজেলায় খুচরা বাজারে নির্ধারিত দামের চেয়ে বাড়ি দামে সয়াবিনসহ খোলা তেল বিক্রি করা হচ্ছে। ছোট-বড় দেড় শতাধিক খুচরা বাজারে তেলের দাম কমাননি খুচরা বিক্রেতারা। প্রতি লিটার সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা পর্যন্ত। এতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।

আনোয়ার হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘তেলের দাম কমেছে কোথায়? এখনো তো সেই ১৭০ টাকার ওপরে প্রতি লিটার তেল কিনতে হচ্ছে। তাহলে কমেছে কই? ঢাকায় বসে তেলের দাম কমানো হয়েছে। কিন্তু গ্রামগঞ্জে খুচরা বাজারে তেলের দাম কমেনি। সরকারি তেলের দাম তদারক করার দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছে, তাঁরাও বিষয়টি খেয়াল রাখছেন বলে মনে হয় না। তাহলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের বাড়তি দামে তেল কিনতে হতো না।’

আরেক ক্রেতা ফরিদ উদ্দিন ব্যাপারী বলেন, ‘কয়েক দিন পর রমজান মাস শুরু হবে। এখনো তেলের দাম কমেনি। তাহলে কীভাবে কী করব, বুঝে উঠতে পারছি না। শুনলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তেলের দাম কমিয়েছে, কিন্তু বাজারে তার কোনো প্রতিফলন দেখছি না। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের নজর দেওয়া উচিত।’

তবে পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজার পর্যায়ে পর্যাপ্ত তেল সরবরাহ করা হচ্ছে না বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ফলে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে তেল। এ জন্য সরকারি অবস্থাপনাকে দায়ী করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

পুরোনো বাজারের খুচরা দোকানি আমজেদ মোড়ল বলেন, ‘আমরা তেল কম পাই, যা পাই তা সেই আগের দামেই কিনতে হয়। যে কারণে দাম খুব একটা কম নিতে পারছি না। বিভিন্ন কোম্পানির লোকজন বলে, তাঁদের তেল সরবরাহ নেই। ফলে তাঁরাও তেল দিতে পারে না।’

গোলাপ কৃষ্ণ নামের আরেক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, ‘আগে খুচরা তেল যে দামে পাইকারদের কাছ থেকে কিনতাম, তার চেয়ে কিছুটা দাম কমেছে। এখন প্রতি লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা দরে। ফলে আমারও কম দামে দিতে পারছি না। হয়তো আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে দাম আরও কমবে।’

যদিও জেলা পর্যায়ে বাজার তদারকির দায়িত্ব থাকা মাদারীপুর জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা বাবুল হোসেন তেলের দাম বাড়ার ব্যাপারে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত বাজার তদারক করা হচ্ছে। তবে ভোক্তারা সরাসরি বাড়তি দামের বিষয়ে অভিযোগ না করলে জেল-জরিমানা করতে পারি না। তারপরেও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।’

জেলায় অন্তত ২০টি পাইকারি মোকাম রয়েছে। খুচরা বাজার দেড় শতাধিক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত