Ajker Patrika

এখনো অধরা আনিসুলের স্বপ্ন

সাইফুল মাসুম, ঢাকা
এখনো অধরা আনিসুলের স্বপ্ন

লাল ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে স্থাপনা। পাশে পাতা বেঞ্চ ও টেবিল। টেবিলের পাশে রকমারি ফুলের সমাহার। রয়েছে বাঁশঝাড়, হাসনাহেনা, কাঠগোলাপসহ নানা ফুলগাছ। এমন দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে নগরবাসী চা-কফি খেতে খেতে গল্প করবেন, আড্ডা দেবেন—এই স্বপ্ন ছিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের।

তাই রাজধানীর বনানীতে বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা রেখে তৈরি করা হয় ‘বনানী ফুডকোর্ট’। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে প্রায় চার বছর আগে নান্দনিক এই স্থাপনার নির্মাণকাজ শেষ হয়। লাগানো হয় নানা ফুলগাছ; কিন্তু  ফুডকোর্টটি এখনো চালু না হওয়ায় আনিসুল হকের স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে।

ফুডকোর্টের নির্মাণকাজ শুরু ২০১৬ সালের শেষ দিকে, আর শেষ হয় ২০১৮ সালের নভেম্বরে। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর মেয়র আনিসুল হক মারা যান। পরে আতিকুল ইসলাম ডিএনসিসির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিলেও তিনি বনানী ফুডকোর্টের দিকে মনোযোগ রাখেননি। ২০১৯ সালে ফুডকোর্টটি ভেঙে গাড়ি পার্কিংয়ের বহুতল ভবন করার কথা ভাবেন সিটি করপোরেশনের কর্তারা। পরে সমালোচনার ভয়ে সে চিন্তা থেকে সরে আসে ডিএনসিসি। বনানী ফুডকোর্টের নকশা করেছিলেন স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী। ফুডকোর্ট চালু না হওয়ার বিষয়ে প্রখ্যাত এই স্থপতি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ডিএনসিসির তথ্য বলছে, বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউর ডিএনসিসির কমিউনিটি সেন্টার লাগোয়া পশ্চিম দিকে প্রায় এক বিঘা জমিজুড়ে বনানী ফুডকোর্ট বানানো হয়েছে। ফুডকোর্টটি নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ফুডকোর্টের জায়গাটি আগে পরিত্যক্ত ছিল। আশপাশের ব্যবসায়ীরা ভাগাড় হিসেবে জায়গাটি ব্যবহার করতেন। পরে ফুডকোর্ট তৈরি হলেও দীর্ঘদিন স্থাপনাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। তাতে গড়ে উঠেছিল অস্থায়ী দোকান আর ভাগাড়। তবে সম্প্রতি বনানী ফুডকোর্ট দখলমুক্ত করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। তবে বর্তমানে স্থাপনাটির চারপাশে নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। গেটে লাগানো হয়েছে তালা।

পাশের মেসার্স মোল্লা ট্রেডার্সের মালিক কাদের মোল্লা জানান, ‘বনানীজুড়ে উঁচু উঁচু দালান আছে, মন খুলে আড্ডা দেওয়ার মতো একটু খোলা জায়গা নেই। বনানী ফুডকোর্টের মতো জায়গা থাকলেও তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না, এটি বড়ই কষ্টের।’

ফুডকোর্ট চালু না হওয়া রহস্যজনক বলে মনে করেন নগর-পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। তিনি বলেন, ‘বনানী ফুডকোর্ট সিটি করপোরেশনের ভালো একটি উদ্যোগ। উন্নত দেশে এমন কার্যক্রম সিটি করপোরেশন করে থাকে। তবে কী কারণে চালু হচ্ছে না, তা রহস্যজনক। চালু হলে নগরবাসীর আড্ডা দেওয়ার জন্য উন্মুক্ত একটি জায়গা তৈরি হবে। বনানী ফুডকোর্টের মতো স্থাপনার প্রয়োজন রয়েছে।’

শিগগিরই বনানী ফুডকোর্ট চালু করা হবে জানিয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বনানী ফুডকোর্ট দখলমুক্ত করা হয়েছে। এটা সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এখানে কালচারাল প্রোগ্রাম হবে। এটা খোলা রাখলে ম্যানেজ করতে অনেক সমস্যা হয়ে যায়, তাই এখন নেট দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে।’

মেয়র আরও বলেন, ‘বনানী ২৭ নম্বরের পার্কটি তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের নামে উদ্বোধন করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত