Ajker Patrika

বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হচ্ছে প্যারোট পোকার

আলী আকবর সাজু, ভালুকা
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২২, ১৫: ১৪
বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হচ্ছে প্যারোট পোকার

ভালুকায় ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই থেকে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি করা হচ্ছে প্যারোট পোকা। এটি হাঁস-মুরগি ও মাছের উৎকৃষ্ট মানের খাবার। অল্প খরচে এ পোকা উৎপাদন করে হাঁস-মুরগি ও মাছের খাবারের চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এতে খামারিদের খরচ কমবে। তাঁরা নিজেরাই এ পোকা উৎপাদন করে চাহিদাও মেটাতে পারবেন বলে দাবি করা হয়েছে।

ভালুকা উপজেলার মেহেরাবাড়ি গ্রামে চাষ হচ্ছে ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই। তরুণ উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান খান জনি এ কার্যক্রম শুরু করেছেন। আগামী এপ্রিলে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা করছেন প্যারোট পোকার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভালুকা শিল্প অঞ্চল হলেও মৎস্য, পোলট্রি এবং দেশি হাঁস, মুরগি, কবুতর, গবাদিপশু ও পাখির অনেক খামার গড়ে উঠেছে। এই পোকা এসব খামারের খাবারের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে বলে জানা গেছে।

উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান খান জনি জানান, তিনি ২০২১ সালে ডিসেম্বরের দিকে তিনটি শেডে প্যারোট পোকা উৎপাদন শুরু করেন। ব্যাপক চাহিদা থাকায় তিনি বাণিজ্যিকভাবে ‘ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই’ থেকে প্যারোট পোকা উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছেন। এতে অনেকের কর্মসংস্থান হবে। এর থেকে উৎপাদিত জৈব সার কৃষকদের সারের চাহিদা পূরণ করতে সহায়ক হবে বলেও জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, ময়লা-আবর্জনা, তরকারির অবশিষ্টাংশ, মুরগির বিষ্ঠা ও খৈলের সংমিশ্রণে তৈরি হয় ‘ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই’। প্রত্যেক ফ্লাই ৯০০ থেকে ১ হাজার পিউপা দিয়ে মারা যায়। এসব পিউপা একটি পাত্রে নিয়ে খাবারে রাখা হয়। ১৪ থেকে ১৬ দিনের মাথায় পিউপা থেকে জন্ম নেয় প্যারোট পোকা। প্যারোট পোকা উৎপাদনের জন্য মশারি, নেট, পাতিল ও কাঠের টুকরো প্রয়োজন হয়। খামারিরা বড় পরিসরে প্রতিদিন ১০০ থেকে ৫০০ কেজি পর্যন্ত পোকা উৎপাদন করে লাভবান হতে পারবেন।

মেহেদী হাসান খান জনি বলেন, অর্থনৈতিকভাবে এ পোকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। হাঁস-মুরগি, পশু-পাখি ও মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলে খামারিদের সাশ্রয় হবে। প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে চাষি লাভবান হবেন। অবশিষ্টাংশ থেকে উৎপাদিত জৈব সার কৃষকের চাহিদা পূরণ হবে। কোনো কিছুই ফেল না নয়। এ পোকার বাজার মূল্য ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি।

স্থানীয় মাছচাষি আফজাল হোসেন বলেন, প্রোটিন সমৃদ্ধ এ প্যারোট পোকা মাছের খাদ্য হিসেবে উৎকৃষ্ট। এর উৎপাদন খরচও কম, দামেও সস্তা। এ ছাড়া কৃষক মো. আউয়াল জানান, জৈব সার মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে, যা অধিক ফলনে সহায়ক। খরচও অনেক কম হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেসমিন জাহান বলেন, ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই থেকে প্যারোট পোকা উৎপাদন করা হয়। বর্জ্যের যে অংশ অবশিষ্ট থাকে, তা দিয়ে তৈরি হয় উৎকৃষ্ট মানের জৈব সার। এটি কৃষি কাজে ব্যবহার করে কৃষক লাভবান হতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত