Ajker Patrika

‘ঘ’ ইউনিটে বাণিজ্য বিভাগে দ্বিতীয়

মুসাররাত আবির
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২২, ১৩: ১৮
‘ঘ’ ইউনিটে বাণিজ্য বিভাগে দ্বিতীয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে গত ৫ জুলাই। এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৭১ হাজার ২৬২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনটি শাখায় মোট উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬ হাজার ১১১ জন। ‘ঘ’ ইউনিট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় একটি সম্মিলিত ইউনিট, যাকে বিভাগ পরিবর্তন ইউনিটও বলা হয়। কারণ এখানে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক–তিন শাখা থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীরাই অংশ নিতে পারেন। এবারই শেষবারের মতো ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষা হয়েছে। এবার ‘ঘ’ ইউনিটে বাণিজ্য বিভাগ থেকে দ্বিতীয় হয়েছেন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের শিক্ষার্থী তাজরীন জাহান মুনিয়া। চলুন তাঁর কাছ থেকেই শুনে আসা যাক তাঁর ভর্তিযুদ্ধের গল্প।

সেরা তিনের অনুভূতি
যখন রেজাল্ট জানতে পারি, তখন আমি খুবই খুশি হয়েছিলাম। আনন্দে চোখে পানি এসে পড়েছিল। মহান আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া জ্ঞাপন করেছিলাম আমাকে এই ফলাফল প্রদানের জন্য। আমার মোট নম্বর ছিল ৯২ দশমিক ২। এমসিকিউ অংশে মোট নম্বর ৪৬ এবং লিখিত অংশের নম্বর ২৬.২০। বাকি ২০ নম্বর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে পাই। পরীক্ষার সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে, আমার পঠিত অন্যতম একটি প্রিয় বই হলো প্রখ্যাত মার্কিন লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ে কর্তৃক লিখিত ১৯৫৩ সালে সাহিত্যে পুলিৎজার পুরস্কার এবং ১৯৫৪ সালে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত উপন্যাস 'The old man and the sea'। সৌভাগ্যবশত পরীক্ষার হলে প্রশ্ন পড়ে দেখি যে সাধারণ জ্ঞান অংশে এসেছে, ‘নিচের কোন উপন্যাসটির রচয়িতা আর্নেস্ট হেমিংওয়ে?’ প্রশ্নটি পড়ে সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর করেছিলাম, যা আমার কনফিডেন্সকে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছিল।

যেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া
অনেকে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময়ই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করলেও আমি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর ভর্তি প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করি। বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির জন্য মূল বোর্ড বইকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলাম। যেকোনো বিষয় পড়লে তার ওপর স্পষ্ট ধারণা রাখার ওপর গুরুত্ব দিতাম। বিগত বছরের প্রশ্ন সমাধান করেছিলাম বেশ কয়েকবার। বাংলার জন্য বোর্ড নির্ধারিত গদ্য, পদ্য এবং সহপাঠ বইয়ের লেখক পরিচিতি, শব্দার্থ ও টীকা, পাঠ-পরিচিতি এবং অনুশীলনের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন গুরুত্বের সঙ্গে পড়েছি।

ইংরেজি বিষয়ের জন্য মূল বোর্ড বইকেন্দ্রিক ভোকাবুলারি ও গ্রামার অনেক ভালো করে আত্মস্থ করেছিলাম। সাধারণ জ্ঞানের জন্য নিয়মিত সংবাদপত্র পড়ে নোট করতাম। দৈনিক অধ্যয়নের একটি নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত নিজেই মডেল টেস্ট দিয়ে নিজেকে যাচাই করতাম। রিটেনের জন্য একটি গোছানো প্রস্তুতি নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। এ ক্ষেত্রেও আমি মূল বোর্ড বইকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। সেই সঙ্গে বিশ্লেষণমূলক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রের মতামত, সম্পাদকীয় ও কলাম অংশ নিয়মিত পড়েছি। মূল বইকে গুরুত্ব দিয়ে পরীক্ষার্থীরা বাজারের যেকোনো একটি ভালো মানের বই সহায়ক হিসেবে পড়তে পারেন।

শেষ সাত দিনের প্রস্তুতি
শেষ সাত দিনের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে নতুন করে আর কিছু না পড়ে পূর্বের পড়া বিষয়গুলো বারবার রিভিশন দিয়েছি। যেসব প্রশ্নের উত্তর আগে ভুল হয়েছিল, তা আবার ভালো করে পড়েছি। পরীক্ষার আগের রাতে শুধু সংখ্যাভিত্তিক বিভিন্ন তথ্য যেমন: লেখকদের জন্ম-মৃত্যুর সাল, ইতিহাসভিত্তিক নানা তথ্যের ওপর চোখ বুলিয়েছি। সর্বোপরি মানসিকভাবে শান্ত থাকার চেষ্টা করেছি।

পরীক্ষার হলে যা যা করণীয়
পরীক্ষার হলে কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে প্রবেশ করা উচিত বলে আমি মনে করি। এরপর পরীক্ষার খাতার তথ্যসমূহ দায়িত্বরত সম্মানিত শিক্ষকদের নির্দেশনা মোতাবেক অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করতে হবে। প্রশ্ন পাওয়ার পর তা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে ভালোভাবে পড়তে হবে এবং অতি গুরুত্বের সঙ্গে সময় ব্যবস্থাপনা করা বাঞ্ছনীয়। সবার শেষে ভালোভাবে সম্পূর্ণ উত্তরপত্র রিভিশন দিলে ভালো হয়।

সামনের পরীক্ষাগুলোর ভর্তি পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলব নিয়মিত মূল বোর্ড বইয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে পড়াশোনা করতে। নিজের দুর্বলতাকে খুঁজে বের করে নিজেকে নিজেই সময় দেওয়াটা উত্তম হবে বলে আমি মনে করি।

আমি যেন মনুষ্যত্ব অর্জন করে মেধা ও মননের দ্বারা দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে পারি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানের চীনা জে-১০ দিয়ে ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংস, যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজরে এই টক্কর

একটি দলের ওপর ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব: মাহফুজ আলম

গতকাল রাতে ৪৮টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের

অহনার দাবি, নিজের দোষ ঢাকতে ডাবল টাইমিংয়ের কথা বলেছেন শামীম

পাকিস্তানে হামলায় ভারত এক দিনেই হারিয়েছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি রুপির সামরিক সরঞ্জাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত