Ajker Patrika

বৈষম্যের বাঁধ ভাঙো

সম্পাদকীয়
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২২, ১৩: ২১
বৈষম্যের বাঁধ ভাঙো

আজ ৮ মার্চ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এ বছর জাতিসংঘ ঘোষিত নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘টেকসই আগামীর জন্য প্রয়োজন আজকের লৈঙ্গিক সমতা’। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সমাজে নারীর প্রতি বিরূপ প্রবণতাকে ভেঙে ফেলতে। হ্যাশট্যাগ দিয়ে এই ওয়েবসাইট প্রতিপাদ্য লিখেছে ‘ব্রেক দ্য বায়াস’। এই দিনে বিরূপ প্রথা ভাঙার জন্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব নারীর জন্য থাকল শুভকামনা।

১৯০৯ থেকে ১৯১১ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডে সূচিত নারী দিবস পরে সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীনসহ পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে পালন করা শুরু হয়। জাতিসংঘ দিবসটিকে স্বীকৃতি দিয়ে উদ্‌যাপন শুরু করে ১৯৭৫ সাল থেকে। এখন বিশ্বের প্রায় সব দেশেই পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

জাতিসংঘ এবারের প্রতিপাদ্যের লক্ষ্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বের সব নারীর অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া। বিশেষ করে যারা সবার জন্য আরও টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে জলবায়ুর পরিবর্তন, অভিযোজন, প্রশমন এবং প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রগুলোয় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জাতিসংঘ বলছে, পুরুষের চেয়ে নারীরা জলবায়ু পরিবর্তন–সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে অবদান রাখছে বেশি।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রচারিত ‘ব্রেক দ্য বায়াস’-ও ভাবনার খোরাক জোগায়। লৈঙ্গিক সমতার জন্য নারীকে হেয় করে চিরাচরিত যে প্রথা বিদ্যমান, সেগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া জরুরি। একটি বিরূপ-প্রথাহীন, লৈঙ্গিক বৈষম্যহীন, বিরূপ-ভাবনার ছাঁচবিহীন পৃথিবীর দাবি নারীরা করতেই পারেন। সেই পৃথিবীতে গড়ে উঠবে নারী-পুরুষের সমতা।

নারীর সংকট তো কম নয়। বিশ্বের অনেক দেশে এখনো নারীরা তাদের রোগবালাই নিয়ে কথা বলতে চান না। সমাজ এবং বেশির ভাগ পরিবারে হর্তাকর্তা পুরুষেরাই নেয় সব সিদ্ধান্ত। নারীরা তাই আজীবন সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। এই সিদ্ধান্তহীনতা থেকেই নিজেদের শারীরিক সমস্যার কথা মুখ ফুটে বলতে পারে না, লজ্জা পায়, পায় ভয়। মাসিকের সমস্যা, প্রসূতি রোগ, স্তন রোগ, জরায়ুর জটিলতা, হরমোনের রোগসহ নানা ধরনের রোগে ভুগলেও পরিবারে তা আমলে নেওয়া হয় না। মাসিকের সময় অস্বাস্থ্যকর কাপড় বারবার ব্যবহারে জরায়ুমুখে ইনফেকশন হয়। একটা সময় জটিলতা বেড়ে ক্যানসারের দিকে ধাবিত হতে পারে।

নারীরা এগিয়েছে নিঃসন্দেহে। শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, চিকিৎসা, আইন—সর্ব ক্ষেত্রেই রয়েছে নারীদের বিচরণ! হালের জনপ্রিয় ই-কমার্স বা অনলাইন ব্যবসায় নারীদের অবদান ও সাফল্য তাক লাগানো। তবু সমাজে স্থিত বিরূপ-প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কম দেখা যায়। লৈঙ্গিক সমতা শুধু কথার কথা হয়ে থাকলে এই সমস্যার সমাধান কখনোই হবে না। নারীরা যেমন প্রথা ভাঙার জন্য সচেতন হবে, পুরুষদেরও তা বোঝার মতো কাণ্ডজ্ঞান থাকতে হবে। নইলে এই পৃথিবী নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার বাসযোগ্য হয়ে উঠবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত